গোলাপগঞ্জে প্রবাসী পরিবারকে হয়রানি ও অপপ্রচারের অভিযোগ

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি


মার্চ ১২, ২০২৪
১১:৫০ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ১২, ২০২৪
১১:৫০ অপরাহ্ন



গোলাপগঞ্জে প্রবাসী পরিবারকে হয়রানি ও অপপ্রচারের অভিযোগ
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন


সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার কতোয়ালপুর গ্রামে প্রবাসী এক পরিবারকে নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ ওঠেছে। নিজেরা জটিলতা তৈরি করে উল্টো হামলা-মামলা দিয়ে হয়রানি ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে একটি গোষ্ঠি। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই গ্রামের মইন মিয়ার ছেলে প্রবাসী দেলোয়ার হোসেন খোকন।

সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ করে তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার ভাই তোফায়েল হোসেন দীর্ঘদিন ধরেই প্রবাসে থাকি। পরিবারে আমার শয্যাশায়ী মা, স্ত্রী-সন্তান, বোন থাকেন। চাচাতো বোন সুমী সিদ্দিকা ও তার দলবল আমাদের পারিবারিক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। পাশাপাশি গণমাধ্যমে অপপ্রচার করে তারা আমাদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছেন।’

প্রবাসী খোকন লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ‘সুমী সিদ্দিকা, ভাই মারুফ ও পরিবারের সদস্যরা শালিসি বাটোয়ারার মাধ্যমে পাওয়া হিস্যায় বসতঘর নির্মাণ করেন ২০০২ সালে দিকে। ২০০৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে আমরাও নিজেদের জমিতে ঘর নির্মাণ করি। তৎকালীন চেয়ারমান মরহুম কবির আহমেদ মুসন ও ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান চৌধুরীর উপস্থিতিতে ভাটোয়ারা হয়। তারা নিজেদের হিস্যার সম্পূর্ণ জায়গাজুড়েই ঘর নির্মাণ করেন। চলাচলের জন্য রাস্তার জমি রাখেননি। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে মুরব্বিরা রাস্তার জন্য জমি রাখার অনুরোধ করলেও তারা সায় দেননি।’

তিনি বলেন, ‘তখন পাশের জায়গার মালিক মোজাম্মেল হোসেনদের সাথে তাদের সুসম্পর্ক ছিল। এ কারণে তারা অন্যের রাস্তা ব্যবহারের সুযোগ পান। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের দিকে মোজাম্মেলদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় তারা আমাদের দ্বারস্থ হন।’ 

খোকন বলেন, ‘মানবিক বিবেচনায় এলাকার মুরব্বিদের অনুরোধে আমরা চলাচলের রাস্তা দিতে সম্মত হই। তখন এ নিয়ে আমাদের সাথে একটা চুক্তিনামা হয়। এর ভিত্তিতে আমাদের ঘরের দক্ষিণ দিকের একটা অংশে ঘরের সেইফি ট্যাংকির উপর দিয়ে তাদের চলাচলের অনুমতি করে দেই। কিন্তু পরবর্তীতে তারা চুক্তি নাকচ করে দেয় এবং আমার ঘর পর্যন্ত তাদের নিজেদের বলে দাবি করে।’

এক পর্যায়ে পাকা দালান ভেঙ্গে তাদের জন্য রাস্তা বের করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন বলে জানান এই প্রবাসী। তিনি বলেন, ‘আমি তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখান করলে তারা বল প্রয়োগ করেন, ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করেন। এতে কাজ না হওয়ায় ২০১৯ সালের দিকে আমাদের প্রাপ্ত হিস্যার একটা নির্দিষ্ট অংশ তারা জালিয়াতির মাধ্যমে নিজেদের করে নেন। এ নিয়ে আমরা অনেক ভোগান্তিতে পড়ি। পরবর্তীতে নানা জটিলতা মোকাবিল করে ভুল কাগজটি সংশোধন করি।’

েেদলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, ‘২০২১ সালের দিকে বিবাদীরা আদালতে বাটোয়ারা মামলা (মামলা নং ২৩২/২১) দায়ের করেন। যা এখনো চলমান। কিন্তু মামলা শেষ হওয়ার আগেই তারা একাধিকবার আমাদের ঘরে হামলা করেছে, গাছে আগুন দিয়েছে, গাছ কেটে ফেলেছে, পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করেছে। এমনকি আমার একমাত্র সন্তানকে নিয়ে সমাজে কুৎসা রটাচ্ছে।’

সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তারা এসব কর্মকাণ্ড করছে বলে মনে করেন এই প্রবাসী। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রবাসে থাকি এবং দেশে টানে, নাড়ির টানে মাঝে মধ্যে ছুটে আসি। আমরা আইন ও বিচারের প্রতি সবসময় শ্রদ্ধাশীল। আইন-সমাজের চোখে অন্যায় এমন কাজের প্রতি কখনও আগ্রহ নেই। সুমী সিদ্দিকা গং এতো কিছুর পর সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনা করেছেন।’

তাদের এমন অত্যাচার-ষড়যন্ত্রে পরিবার নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছেন বলে জানান খোকন। সম্প্রতি অসুস্থ মাকে দেখতে দেশে ফিরে সুমীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ উল্লেখ করে মিথ্যা দিয়ে তারা আমি এবং আমার দুই ভাগিনাকে আসামি করেছে। তাদের পরিকল্পিত এ ষড়যন্ত্রের মামলায় আমাকে কারাভোগও করতে হয়েছে। ঠিক তখন তারা সংবাদ মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে আমাদেরকে সামাজিকভাবেও হেয়প্রতিপন্ন করেছে। তাদের বানোয়াট অভিযোগের ভিত্তিতে খবর প্রচার হওয়ায় আমাদের সম্মানহানি হয়েছে।’

তিনি সুমী সিদ্দিকার বক্তব্যের বরাত দিয়ে বলেন, ‘সুমী উল্লেখ করেছেন- বসতবাড়ির ভূমি নিয়ে আদালতে বাটোয়ারা মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আমি খোকন জোরপূর্বক সুমীদের বসতঘরের সামনে পাকাঘর নির্মাণ করে তাদেরকে গৃহবন্দি করে রেখেছি! অথচ, বিজ্ঞ আদলতে মামলা হয়েছে ২০২১ সালে। আর আমাদের ঘর নির্মাণ হয়েছে ২০০৭-২০১০ এর মধ্যে।’

দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, ‘প্রথমে ঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে তারা চলাচলের রাস্তার জন্য জমি রাখেননি। মুরব্বিদের অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন নানা কুটকৌশলে পরিস্থিতি জটিল করে এখন আমাদের ঘর ভেঙে নিতে চাচ্ছেন।’

তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং ন্যায়বিচারে নিশ্চিতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।


এএফ/-৮