‘আমরা ফয়সল চৌধুরীর মনোনয়ন নয়, একটা নিরপেক্ষ রিভিউ চাই’

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ০৯, ২০২৫
০৮:১৪ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ০৯, ২০২৫
০৮:১৪ অপরাহ্ন



‘আমরা ফয়সল চৌধুরীর মনোনয়ন নয়, একটা নিরপেক্ষ রিভিউ চাই’
বিয়ানীবাজারে বিপ্লব ও সংহতি দিবসে নেতাকর্মীদের দাবি


> ‘ভোটের দিন মাত্র ২ ঘন্টা সময় পেয়ে বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জবাসী ১ লাখ ৮ হাজার ভোট দিয়েছিলেন’

> ‘মির্জা ফখরুল, খন্দকার মুক্তাদিরের পর সারা দেশে তৃতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছিলেন ফয়সল চৌধুরী’

> ‘২০১৮ সালে ফয়সল চৌধুরীর ভোটপ্রাপ্তি শুধু সিলেট নয় জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছিল’


সিলেটের বিয়ানীবাজারে ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলের হাইকমাণ্ডের প্রতি দাবি জানিয়ে বলেছেন, ‘ফয়সল আহমদ চৌধুরীকে টিকেট দিতে হবে না। আপনারা একটি নিরপেক্ষ রিভিউ করেন। জনগণের মতামত কার পক্ষে যায় দেখেন। যার পক্ষে যাবে আমরা উনাকেই মেনে নেবো।’ তারা অনুরোধ করে বলেন, ‘আমাদের দ্বিধা দ্বন্দ্বে ফেলবেন না। যাকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে তিনি দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক। তিনি সাংগঠনিকভাবে জ্ঞানী। কিন্তু ভোটের রাজনীতি বুঝেন না।’

গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিয়ানীবাজার উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

বিয়ানীবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান রুমেলের সভাপতিত্বে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মিছবাহ উদ্দিনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন।

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি হাজী এম এ মান্নান চেয়ারম্যান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান চেয়ারম্যান, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও তিলপারা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম সায়েক, কুড়ার বাজার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আহমদ মেম্বার, লাউতা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন, মুল্লাপুর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজমুল ইসলাম মেম্বার, তিলপারা ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি কামাল উদ্দিন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন বলেন, ‘অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতি ও চরম খারাপ অবস্থা ছিল ২০১৮ সালে। দলীয় নেতৃবৃন্দের উপর মামলা, হামলার পরও একটি মিনিটের জন্য এই আসন থেকে ফয়সল আহমদ চৌধুরী সরে যাননি। বীরদর্পে এলাকার নির্বাচনী প্রচারণা করে ১ লাখ ৮ হাজার ভোট পেয়েছেন। বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জকে আসনের দল এবং দলের বাইরে ভোটারের মনের মনিকোঠায় তিনি স্থান করে নিয়েছেন।’ তিনি হতাশা কণ্ঠে বলেন, ‘এই আসনে মনোনয়ন ঘোষণার পর আমাদের প্রত্যেকের এই অবস্থা হয়েছে-বাড়ি থেকে বের হলে সবাই বলে-আমরা আশা করলাম কি? আর পেলাম কি?’ যেহেতু আমাদের মহাসচিব মনোনয়ন ঘোষণার সময় বলেছেন এটি সম্ভাব্য তালিকা। চূড়ান্ত তালিকা এখনো হয়নি। আমাদের দাবি, যদি চূড়ান্ত তালিকায় যেন ফয়সল আহমদ চৌধুরীর নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়।’

ফয়সল চৌধুরী আসলে সহজে বিজয় সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস এই আসন আমাদের নেতাকর্মীদের কষ্ট করা লাগবে না। বিপুল ভোটের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতীক ধানের শীষ বিজয়ী হয়ে আসবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিয়ানীবাজার পৌর বিএনপির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দলের পক্ষে কাজ করব, নেতৃবৃন্দের বিপক্ষে কিছু বলতে পারব না। কিন্তু আজকের এই উপস্থিতিতে নেতাকর্মীরা যে বক্তব্য রেখেছেন-আশা করি কেন্দ্র সেটি বিবেচনা করবেন।’ তিনি বলেন, ‘দল সমস্ত বাংলাদেশের জন্য মাঠের চিন্তা করে নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা উচিত। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সেটা করেননি বলে আমি মনে করি না। কিছু কিছু জায়গায় ব্যতিক্রম ঘটেছে। আশা করি কেন্দ্র আমাদের যে বক্তব্যগুলো এসেছে, মানুষের চাহিদা, মাঠে অবস্থান কি, মাঠের অবস্থা কি তা মূল্যায়ন করবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও তিলপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমার আগে পর্যন্ত যত বক্তা বক্তব্য দিয়ে গেছেন প্রত্যেকের মন খারাপ। অনেকের মুখে কথা আসছে না। আপনারা যারা সামনে বসে আছেন তাদের মুখে দিকে তাকানো যাচ্ছে না কারণ আপনারা কষ্টে আছেন। আসলে সবার কষ্ট হওয়ারই কথা। আমরা দীর্ঘদিন থেকে যে স্বপ্ন লালন করে আসছিলাম হঠাৎ করে সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। আমাদের গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের মানুষের যে প্রত্যাশা ছিল সেই প্রত্যাশা ধুলিৎসাত হয়ে গেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘একেক সময় একেক ক্যান্ডিডেট জোট থেকে আসে। কিন্তু ধানের শীষের ক্যান্ডিডেট আসে না। ২০১৮ সালে পেলাম একজন ক্যান্ডিডেট। মাঠে নামা কঠিন ছিল পুলিশি বাধার কারণে, মামলার কারণে। তারপর অনেক প্রত্যাশা ছিল এবার অন্তত ধানের শীষের একজন মনের মতো ক্যান্ডিডেট পাবো। যাকে নিয়ে আমরা আগামী দিনে নির্বাচন করব। মানুষেরও প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু দলের যে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে যাতে তিনি আমাদের জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী। তিনি রাজনীতির  মাঠে ঠিক আছেন, আমার এক ভাই বলে গেছেন, সকলেই রাজনীতির মাঠে গোল করতে পারেন কিন্তু ভোটের মাঠে সকলে গোল করতে পারেন না। আল্লাহ দেখছেন, দোয়া রাখি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম যদি ফয়সল আহমদ চৌধুরী নমিনেশন পান তাহলে অত্যন্ত সহজে আমরা এ আসনটি পার করে ফেলব। আমি আজকের এই বৈঠক থেকে একটা কথা বলতে চাই, ফয়সল আহমদ চৌধুরী আপনাকে মানুষ অনেক পছন্দ করে। আমরা এখানে যারা আছি আমরা আপনার পাশে ছিলাম, পাশে আছি, ভবিষ্যতেও আপনার পাশে পাবেন। আমি এই কথাটুকু দিয়ে যাচ্ছি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ফয়েজ আহমদ বলেন, ‘গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের মা ও মাটির নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী, দীর্ঘ আওয়ামী দুঃশাসনের সময় যিনি আমাদের বুকে আঁকড়ে রেখেছিলেন। আমি ২০১৫ সালে যখন প্রথম কারাবরন করেছিলাম তখন থেকেই উনার সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। আমার রাজনৈতিক মামলার বিভিন্ন বিষয়াদি তিনি নিজে দেখাশোনা করেছিলেন। আমি জেলে থাকাকালে বিয়ানীবাজার ছাত্রদলের আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছিলাম। ২০১৭ সালে উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলাম। আসলে আমাদের মতো তৃণমূলের যে কর্মীরা আছি তারা জানি মাঠের রাজনীতি কত কঠিন। বিগত দুঃসময়ে মাঠের রাজনীতি যে কত কঠিন ছিল আমরা জানি। আমাদের দেখা শোনার জন্য হাতেগুণা যে কয়েকজন নেতাকর্মী ছিলেন তাদের মধ্যে সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মধ্যে ফয়সল আহমদ চৌধুরী ছিলেন অন্যতম। জেলখানা থেকে শুরু করে রাজপথ সবকিছুর দেখাশোনা তিনি করেছিলেন। আন্দোলন সংগ্রমে আমাদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।’

নিজের দুঃসহ স্মৃতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি যখন তিন দিনের রিমান্ডে বিয়ানীবাজার থানায় এসেছিলাম। তখনও তিনি আমার খবর নিয়েছেন। আমাকে যখন রিমান্ড শেষে আবার কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছিল তখন ফয়সল আহমদ চৌধুরী এই দুঃসময়েও স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে আমাকে সান্তনা দিয়েছিলেন। দলের জন্য কাজ করে যেতে হবে-সেই নির্দেশনা দিয়ে এসেছিলেন।’

এই আসনে কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই আসনকে উদ্ধার করতে হলে, জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় লেভেলের একজন নেতা এখানে নির্বাচন করছেন। উনার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলে, মাঠের ফলাফল ঘরে তুলতে হলে, ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হলে ফয়সল আহমদ চৌধুরীর বিকল্প এই মুহূর্তে বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জে নেই। আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে উদার্ত আহ্বান জানাবো আপনারা পুনর্বিবেচনা করেন। এখনো সুযোগ আছে- তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মনের ভাষা শুনেন।’

তিনি দলের হাই কমাণ্ডের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের কাছে উদার্ত আহবান জানাই-আপনি গোলাপগঞ্জ বিয়ানীবাজারে একটি মাঠ জরিপ করেন, যে মাঠ জরিপে এই বিয়ানীবাজারে গাছপালা, মাটি, নারী, পুরুষ সবাই বলবে ফয়সল আহমদ চৌধুরীর কথা। উদাত্ত আহ্বান জানাবো কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে, আপনারা নিশ্চিত বিজয়ের জন্য ফয়সল আহমদ চৌধুরীকে মূল্যায়ন করুন।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিলপারা ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এবাদুল হক বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিলেটের খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের পরে সারা দেশের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছিলেন ফয়সল আহমদ চৌধুরী। যে ভোট জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছিল। ফয়ছল আহমদকে দিয়ে সিলেটে পরীক্ষা নেবেন না। উনার ভোট, উনার জনগণের ভালোবাসা জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছিল।’

তিনি দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ফয়সল আহমদ চৌধুরীকে টিকেট দিতে হবে না, আপনারা একটি নিরপেক্ষ রিভিউ করেন, জনগণের মতামত কার পক্ষে যায়? যার পক্ষে যাবে আমরা উনাকেই মেনে নেবো।’

মনোনয়ন নয় রিভিউ চান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অনুরোধ করব, আমরা একটি রিভিউ চাই- আমরা ফয়সল চৌধুরীর নমিনেশন চাই না। আমরা সঠিক রিভিউ চাই। আপনারা রিভিউ করেন। যদি রিভিউতে জননেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরীর পক্ষে রায় আসে তাহলে তাকে আমরা চাই।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিয়ানীবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান রুমেল বলেন, ‘আমরা যারা দলের জন্য কাজ করি তারা দলের নেতাকর্মীর আবেগ অনুভূতি, নেতৃত্বের প্রতি নেতাকর্মীর ভালোবাসা আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান। আমরা বিয়ানীবাজার পৌর বিএনপি গতকাল (শুক্রবার) এরকম একটি সভায় মিলিত হয়েছিলাম। সেই সভায়ও আমি দেখেছি, বিয়ানীবাজার পৌর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের আবেগ, ভালোবাসা ফয়সল আহমদ চৌধুরীর প্রতি। তারা আবেগঘন কথা বলেছেন। আজকে এই সভায় বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন স্থরের নেতৃবৃন্দ, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সব নেতৃবৃন্দের বক্তব্য আবেগের। সেই আবেগের প্রমাণও হয়েছিল ২০১৮ সালের নির্বাচনে। আপনাদের এই ভালোবাসা দেখিয়েছিলেন।’

যেহেতু আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ একজনকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করেছেন। তবু আমরা অপেক্ষায় থাকব, অপরিবর্তিত থাকে থাকে বা পরিবর্তনও হয় যে প্রার্থীকে দল দেবে আমরা তার জন্য কাজ করব।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সিলেট জেলা তাতীঁ দলের সদস্য আবদুল খালিক, পৌর বিএনপির সহসভাপতি নজরুল ইসলাম, কটন মিয়া, যুগ্ন সম্পাদক কবির আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল আহমদ, উপজেলা বিএনপির সদস্য কয়েছ আহমেদ, জামাল আহমেদ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ফয়েজ আহমেদ, সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হোসেন আহমেদ মেম্বার, সহস্বেচ্ছা সেবক বিষয়ক সম্পাদক হাসান আহমদ,সহযুব বিষয়ক সম্পাদক রাফি চৌধুরী ইরাদ, বৈদেশিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল গফুর, জয়নাল আবেদীন, জাকির আহমেদ,হান্নান মেম্বার, ফখরুল ইসলাম  বিয়ানীবাজার উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক এম এ হাসনাত জামিল, পৌর যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক জানে আলম,যুগ্ন আহবায়ক  লিমন আহমেদ, যুগ্ম আহবায়ক সুমন আহমা, সিলেট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ন সম্পাদক আহসান জামিল, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক মাহবুব আলম, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রায়হান আহমেদ, ছাত্রদল নেতা তানভীর আহমেদ, রাকিব আহমেদ প্রমুখ।

আলোচনা সভায় বিয়ানীবাজার উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হাসনাত জামিল বলেন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার বিগত ১৭ বছর মামলা, হামলার শিকার হয়েছি। আমাদের সেই দুর্দিনে যিনি আগলে রেখেছিলেন। বিএনপি পরিবারকে ছাতা হয়ে ছায়া দিয়েছেন, নির্যাতনের সময় পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, করোনাকালীন সময়ে পাশে ছিলেন। সব ধরণের সাপোর্ট দিয়েছিলেন, মামলার সময় নিম্ন আদালতে সাহায্য করেছেন, জেলে ঢুকার পর আমরা দেখেছি একাউন্টে টাকা এসেছে! কিভাবে? বাইরে থেকে শুনেছি আমাদের নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী একাউন্টে আমাদের নামে টাকা জমা দিয়েছেন। শুধু আমি নই-আপনারা এখানে যারা মামলা, হামলার শিকার হয়েছিলেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, আপনাদের যাদের পরিবার মামলার শিকার হয়েছিল সবাই স্বাক্ষী তো?’ এসময় উপস্থিত সবাই সমস্বরে হ্যাঁ হ্যাঁ বলতে থাকেন।

সিলেট জেলা তাতী দলের সদস্য আব্দুল খালিক বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জে ধানের শীষের যে কাণ্ডারি এসেছেন তা আমাদের মনপুত হয়নি। আমরা ফয়সল আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। তিনি বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জের ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘৩ নভেম্বরের আগে আমাদের বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জে নির্বাচনের আমেজ ছিল। ৩ তারিখ প্রার্থী ঘোষণার পর সুনশান নীরবতা নেমে এসেছে। জানি না কেন মনে হয় আমাদের নির্বাচন শেষ হয়ে গেছে, এরকম এক পরিবেশ বিরাজ করছে। এরকম এক পরিস্থিতিতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের কাছে আমার আবেদন থাকবে- এই মনোনয়ন যেন পুর্নমূল্যায়ন করা হয়।’

এ আসনটি উদ্ধার করতে হলে ফয়সল আহমদ চৌধুরীর বিকল্প নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই আসনটি আমাদের জাতীয়তাবাদীর খাতায় বা লিস্টে ছিল না মরহুম লুৎফুর রহমান এমপি সাহেবের পরে। কিন্তু ২০১৮ সালে ফয়সল আহমদ চৌধুরী এটিকে আবার জাতীয়তাবাদীর লিস্টে নাম তুলিয়েছিলেন। আমি তাই অনুরোধ জানাবো- চূড়ান্ত মনোনয়নে যেন ফয়সল আহমদ চৌধুরীকে ধানের শীষের প্রার্থী করা হয়।’

মোল্লাপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ, ‘বর্তমানে ফয়সল চৌধুরীর যে পরিমাণ কর্মী আছে এই বিয়ানীবাজারে আর কোনো নেতার এত কর্মী নাই।’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়েছি, ভোটের সময় প্রতিকূলতার মধ্যে ভোট দিয়েছি। এখন কেন মনোনয়ন পাবো না? আমরা দলের কাছে এটি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

বিয়ানীবাজার উপজেলা যুবদলের সদস্য মোরশেদুর রহমান পলু বলেন, ‘আমাদের দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের আশা আকাঙ্খা ছিল ফয়সল আহমদ চৌধুরী মনোনয়ন পাবেন। যদিও এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি আরো বলেন, ‘আমার এবং আমাদের মন মতো প্রার্থী হয়নি। তবুও যদি কেন্দ্র এটিকে শেষপর্যন্ত চূড়ান্ত করে তাহলে আমরা শেষপর্যন্ত আমরা কাজ করব। কিন্তু আজকের আলোচনা সভা থেকে আমি অনুরোধ করব-এখনো সময় ও সুযোগ আছে। আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সুদৃষ্টি কামনা করছি- মনোনয়ন পরিবর্তন করে যেন আমাদের কাঙ্খিত নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরীকে ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন করার সুযোগ দেন। যাতে আমরা এই আসন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উপহার দিতে পারি।’

বিয়ানীবাজার উপজেলা যুবদলের সদস্য ময়জুল হক বলেন, ‘স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ২০১৮ সালে আমরা নির্যাতন ও নিপিড়নের শিকার হয়েছিলাম। তখন আমাদের পাশে যে ছিলেন তিনি ফয়সল আহমদ চৌধুরী। তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘১৭ বছরের দুঃশাসক স্বৈরচারের বিদায়ের পর মানুষের মধ্যে আনন্দ, উদ্দীপনা কাজ করছিল। সেই সময়ে আমরা হতাশ হতে হয়েছে। আমরা আশা করবো দল চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ার সময় ফয়সল আহমদ চৌধুরীকে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী করে গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের মানুষের, দলের প্রতিটি নেতাকর্মীর মনোবাসনা পূর্ণ করবেন।’


এএফ/০২