সিলেটে জ্বালানি তেল সংকট সমাধানে দুই উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক


মার্চ ১১, ২০২১
০২:২৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ১১, ২০২১
০২:২৯ পূর্বাহ্ন



সিলেটে জ্বালানি তেল সংকট সমাধানে দুই উদ্যোগ
বিপিসি চেয়ারম্যানের আশ্বাস

আগামী এক মাসের মধ্যে সিলেটের জ্বালানি তেল সংকট সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান আবু বকর ছিদ্দীক। বুধবার (১০মার্চ) দুপুরে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জ্বালানি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই আশ্বাস দেন তিনি।

সভায় আবু বকর ছিদ্দীক জানান, এসময় বিপিসি চেয়ারম্যান বলেন, সিলেটে কয়েকবার রেলওয়ের তেলবাহী ওয়াগন দুর্ঘটনায় পড়ার পাশাপাশি সিলেটের গ্যাস ফিল্ড থেকে তেল উৎপাদন বন্ধ থাকায় চাহিদা মোতাবেক তেল সরবারাহ করতে সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যা আর থাকবে না। সড়ক পথের পাশাপাশি এবার নদীপথেও সিলেটে তেল সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সিলেটের শোধনাগারগুলো থেকে পেট্রোল ও অকটেন উৎপাদন হচ্ছে না। আমরা সব  সমস্যা সমাধান করে আগামী ১/২ মাসের মধ্যে এগুলোতে তেল উৎপাদন শুরু করব। এরপর আশা করছি সিলেটে তেলের কোন সংকট থাকবে না।

জানা যায়, বিএসটিআইয়ের নির্ধারিত মান অনুসরণ করতে না পারার অজুহাতে সাড়ে পাঁচ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের সরকারি জ্বালানি তেল শোধনাগারগুলো। সরকারি শোধনাগার বন্ধ রেখে বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গ্যাসের উপজাত (কনডেনসেট) থেকে জ্বালানি তেল উৎপদন করা হচ্ছে। এতে বড় অংকের লোকসান গুণছে সরকার।

উপজাতকে জ্বালানি তেলে রূপান্তরের জন্য সিলেটের গোলাপগঞ্জে রূপান্তিরত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিডেট (আরপিজিসিএল) এর দুটি প্লান্ট থেকে ৮০০ ব্যারেল ও ৫০০ ব্যারল পেট্রোল, ডিজেল ও এলপিজি, সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিডেটের অধীনে হরিপুরে ৬০ ব্যারেল, কৈলাশটিলায় ৩০০ ব্যারেল এবং রশিদপুরে ৩৭৫০ ব্যারেল ও ৪০০০ ব্যারেল রূপান্তর ক্ষমতা সম্পন্ন আরও দুটি প্লান্ট রয়েছে। তবে গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে সরকারি মালিকানাধীন এই সবগুলো পরিশোধনাগার বন্ধ রয়েছে।

তবে সরকারি শোধনাগারগুলো বন্ধ হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রাম থেকে রেলওয়ের ওয়াগনের মাধ্যমে তেল আনা হয় সিলেটে। ওয়াগন সঙ্কট ও তেলবাহী ট্রেনের ঘন ঘন দুর্ঘটনার কারণে ব্যাহত হয় তেল পরিবহন। এতে সিলেটে জ্বালানী তেলের তীব্র সংকট দেখা দেয়।

সঙ্কট দূর করা ও সিলেটের শোধনাগারগুলো চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন সিলেটের জ্বালানি ব্যবসায়ীরা। অন্যথায় ১৪ মার্চ থেকে সিলেটে ধর্মঘটে যাওয়ারও হুমকি দেন তারা। 

বুধবার দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনময় সভায় এ বিষয়ে আশ্বাস পেয়ে নিজেদের কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটর এজেন্ট এবং পেট্রোলপাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের সিলেট বিভাগীয় সভাপতি জুবায়ের আহমদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, বিভাগের চার জেলায় ১১৪টি পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে সিলেট মহানগরীতে ৪৫টিসহ জেলায় মোট ৭০টি পাম্প রয়েছে।

শুষ্ক মৌসুমে সিলেটের পাম্পগুলোতে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেলের প্রতিদিনের চাহিদা ১০ লাখ লিটারেরও বেশি। তবে বর্ষা মৌসুমে এই চাহিদা অর্ধেকে নেমে আসে। গত দুই মাস ধরে চাহিদার অর্ধেক তেলও পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান জুবায়ের আহমদ।

সভায় সিলেট চেম্বারের সভাপতি এটিএম শোয়েব, সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পরিতোষ ঘোষ, রেঞ্জ ডিআইজি অফিসের পুলিশ সুপার জেদান আল মূসা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসলাম উদ্দিনসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্থরের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এসআই/বিএ-০৮