নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১
০৯:৪৫ অপরাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১
০৯:৫১ অপরাহ্ন
চিকিৎসক দম্পতি তারা। স্বামী ডা. ইমরান খান রুমেল সিলেটের উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রভাষক। স্ত্রী ডা. অন্তরা খান এবারের বিসিএস পরীক্ষার্থী। আজ বিকেল তিনটায় ঢাকায় পরীক্ষা। তাতে অংশ নিতেই স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় রওয়ানা হয়েছিলেন ডা. রুমেল। কিন্তু পথে তাদের থামিয়ে দিলো এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। ডা. ইমরান পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে। আর গুরুতর আহত স্ত্রী অন্তরা লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে।
আজ শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রশিদপুরে এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ডা. রুমেল সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের সাবেক প্রধান ডা. আমজাদ হোসেন খান। নগরের ফাজিলচিস্ত এলাকার বাসিন্দা ডা. আমজাদের এক ছেলে এক মেয়ে দুজনেই চিকিৎসক। ছেলের বউ ও মেয়ের স্বামীও চিকিৎসক। নাতি-নাতনি নিয়ে কাটানো আনন্দের এ সময়ে দুর্ঘটনার এই সংবাদ যেন সবকিছু তছনছই করে দিলো।
নিহত রুমেল জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। দুই কন্যা সন্তান নিয়ে এ দম্পতির সংসার। পরিবারের ৬ সদস্যের মধ্যে ৫ জন ডাক্তার।
জানা গেছে, চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা আজ শুক্রবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ৩টায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। তাই শুক্রবার ভোরেই স্ত্রীকে নিয়ে বাসা থেকে বের হন ডা. ইমরান। এনা পরিবহনের একটি বাসে করে সিলেট থেকে ঢাকার পথে রওয়ানা দেন তারা। তবে ঢাকা আর যাওয়া হয়নি তাদের। সিলেট শহর থেকে বেরিয়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার রশিদপুরে আসা মাত্রই দুর্ঘটনার শিকার হয় তাদের বহনকারী বাসটি। বিপরীত দিক থেকে আসা লন্ডন এক্সপ্রেসের একটি বাস ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ডা. ইমরান। গুরুতর আহত হন ইমরানের স্ত্রী অন্তরা। এ দুর্ঘটনায় মোট ৮ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন।
একমাত্র ছেলে রুমেলকে হারিয়ে হতবিহব্বল ডা. আমজাদকে এখন ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে গুরুতর পুত্রবধূ ডা. অন্তরাকে কিভাবে বাঁচানো যায় সেই চেষ্টায়। দুর্ঘটনার পর থেকেই হাসপাতালে অবস্থান করছেন।
নিহত ডা. ইমরানের বোন ডা. ইন্নরী খান বলেন, ‘আমার ভাইয়ের স্ত্রী বিসিএস পরীক্ষা দেবেন। সেজন্য তাকে নিয়ে সে সকালে ঢাকা যাচ্ছিল। এনা পরিবহণের একটি বাসে তারা রওয়ানা দেন। যাওয়ার আগে তার দুই মেয়েকে আমাদের কাছে রেখে যান। সকাল সাড়ে সাতটায় খবর পাই তারা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।’
এএফ/০২