দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। ডলারের দাম বাড়ায় ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ সব জিনিসপত্রের দাম। মূল্যস্ফীতি উঠেছে ১০ দশমিক ২২ শতাংশে। এমন বাস্তবতার মধ্যে আগামী মাসে ঘোষণা করা হবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট। সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে আগামী বাজেটে নিত্যপণ্যের করহার যৌক্তিক রাখার পরিকল্পনা করছে সরকার। বাজেট নিয়ে অর্থবিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রস্তুতি পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে আগামী বাজেটে করহার যৌক্তিক রাখার সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন থেকে একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআরে পাঠানো ট্যারিফ কমিশনের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, নিত্যপণ্যের দাম যেন সাধারণ মানুষের ওপর বোঝা হয়ে না দাঁড়ায়। সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই যেন ভোগ্যপণ্যের করহার যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করা হয়।
এনবিআরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেছেন, মানুষকে স্বস্তি দিতে করহার কমানোর চিন্তাভাবনা করছে এনবিআর। বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের করহার যৌক্তিক করার জন্য বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বৈঠক করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে। এ বিষয়ে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ট্যারিফ কমিশন থেকে আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) একটা প্রস্তাব দিয়েছি। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যেন একটি যৌক্তিক পর্যায়ে থাকে। সাধারণ মানুষের ওপর যেন বোঝা না হয়ে যায়, আমরা সেটার জন্য চেষ্টা করছি।’
গত বছরের ডিসেম্বরে এসে পিঁয়াজের বাজারেও আগুন লাগে। দফায় দফায় বাড়ে ডিম, কাঁচা মরিচ ও চিনির মতো পণ্যের দাম। সব মিলিয়ে বছরজুড়ে নিত্যপণ্যের বাজারে ব্যাপক অস্থিতিশীলতা ছিল। গত এক বছরে দাম দ্বিগুণ বা তার চেয়ে বেশি বেড়েছে দেশি ও আমদানি করা পিঁয়াজ ও রসুনের। আলুর দাম তো আরও বেশি চড়েছে। গত বছরের শুরুতে আলুর দাম যা ছিল, এখন তার চেয়ে তিন গুণ বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়ে দ্বিগুণের কাছাকাছি উঠেছে। যেমন চিনি, আদা, শুকনা মরিচ, ব্রয়লার মুরগি, জিরা ইত্যাদি।
এদিকে সরকার দামে লাগাম টানতে এক পর্যায়ে পাঁচটি নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দেয়। পণ্যগুলো হচ্ছে- ডিম, সয়াবিন তেল, পিঁয়াজ, চিনি ও আলু। কিন্তু বাজারে সয়াবিন তেল ছাড়া আর কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকর হয়নি। এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি কমে আসছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে শক্ত মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা প্রয়োজন, তাহলে আমরা সুফল পাব।’