নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ০৫, ২০২৫
০১:৫৩ অপরাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ০৫, ২০২৫
০১:৫৩ অপরাহ্ন
জামায়াতে ইসলামের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘‘আওয়ামী লীগ নিজেরাই তো নির্বাচন চায়নি। আওয়ামী লীগের উপর নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া জুলুম হবে।’ নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা জোট করার কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি, জোট করবও না। আমরা নির্বাচনী সমঝোতা করব।’
আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে সিলেট সফরে এসে ওসমানী বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তৃতীয় বারের মতো দলের আমীর নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবার সিলেট ফিরে বিমানবন্দরে দলের নেতাকর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হন তিনি।
দলের নেতাকর্মীরা তাকে বিমানবন্দরে সংবর্ধিত করেন। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
জামায়াত বলছে সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করতে, এখানে সবাই বলতে আওয়ামী লীগসহ কি-না প্রশ্নের জবাবে ডা. শফিক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিজেরাই তো নির্বাচন চায়নি। আপনারা কী তাদের উপর জোর করে নির্বাচন চাপিয়ে দিবেন? তারা নির্বাচনে বিশ্বাসী- সেটা তারা প্রমাণ করতে পারেনি। এখন যেটা তারা চায় না সেটা তাদের উপর চাপিয়ে দিলে জুলুম হবে না?’
নির্বাচন সামনে রেখে জোট গঠন বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা জোট করার কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি, জোট করবও না। আমরা নির্বাচনী সমঝোতা করব। শুধু ইসলামী দল না, দেশপ্রেমিক প্রতিশ্রুতিশীল যারা আছেন তারা সংযুক্ত হচ্ছেন। আগামীতে আরো অনেক দল এই নির্বাচনী সমঝোতায় যুক্ত হবেন। আমরা সবাইকে নিয়ে দেশ গড়তে চাই।’
গণভোট নিয়ে জামায়াতের অবস্থান পরিস্কার উল্লেখ করে জামায়াতের আমীর বলেন, ‘গণভোট আগে না হলে কিসের ভিত্তিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে? তাই আমরা চাই গণভোট আগে হোক এবং জুলাই সনদ আইনীভিত্তি পাক।’
পিআর পদ্ধতি ও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতের আমীর বলেন, ‘গণতন্ত্রের ফর্মুলা হচ্ছে একাধিক দল থাকবে, একাধিক আদর্শ থাকবে। সবাই তাদের আদর্শ, দাবি ও কর্মসূচী নিয়ে আসবে। আমরা মনে করি আমাদের পিআর পদ্ধতির দাবি শ্রেষ্ঠ দাবি। আমরা আশা করি জনগণ এটি বিবেচনায় নিবে। আমরা যা-ই করি জনগণকে নিয়ে করব। জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করব না। জনগণ যদি মনে করে ভবিষ্যতে যাতে আর কোন ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে সেজন্য পিআর পদ্ধতি প্রয়োজন। তবে আমরা সেই দাবি অব্যাহত রাখব।’
নির্বাচন বিলম্বিত হলে বিভিন্ন শঙ্কা বাড়বে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাইকে নিয়ে আমরা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আদায় করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। নির্বাচন দেরি হলেই বিভিন্ন ধরণের আশঙ্কা ও বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা তৈরি হবে।’
দেশ সেবার সুযোগ পেলে প্রবাসীদের প্রাপ্য মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে অনুপাতে প্রবাসীরা বিদেশে অবস্থান করবেন, সরকারের বিভিন্ন স্তরে এই অনুপাতটাই তাদের প্রতিনিধিত্ব করবে ইনশাল্লাহ। তাহলে তারা অনুভব করবেন এ দেশটি আমার দেশ। তাদের মধ্যে এই ধারণা সৃষ্টি হবে, দেশ যেহেতু আমাকে সম্মান দিয়েছে আমাকেও দেশকে সম্মান দিতে হবে। এজন্য তাদের পক্ষে সবকিছু উজাড় করেই তারা পাশে দাড়াবেন এই দেশের উন্নয়নে এটা আমরা বিশ^াস করি।’
প্রবাসীদের ভোটাধিকারের দাবিতে জামায়াত বিভিন্ন ফোরামে আওয়াজ তুলেছিল দাবি করে জামায়াতের আমীর বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু তা কাঙ্খিত মানের নয়। সেখানে ওটিটিতে এক্সেস পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে আগ্রহ থাকা স্বত্ত্বেও অনেকে ৩০ অক্টোবরের যে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সেই নির্দিষ্ট সময়ের ভেতরে অনেকেই ভোটার হতে পারেননি। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি কমপক্ষে আরো ১৫ দিন এই প্রক্রিয়া উন্মুক্ত রাখার জন্য। আর যে সমস্ত জটিলতা আছে সেগুলো দূর করে যাতে স্বস্তির সঙ্গে প্রবাসীরা ভোটার হতে পারেন রন সেই জায়গাটা উন্মুক্ত করে দেওয়া উচিত।’ এসময় তিনি বলেন, ‘তাদের একটা অধিকার যদি প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে এই একটা অধিকারের হাত ধরে বাকি অধিকারগুলোও প্রতিষ্ঠিত হবে। এবং এটি হচ্ছে তাদের ভোটের অধিকার।’