বিধ্বংসী আগুনে অঙ্গার বঙ্গবাজার

সিলেট মিরর ডেস্ক


এপ্রিল ০৪, ২০২৩
০৫:৪২ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ০৪, ২০২৩
০৫:৫০ অপরাহ্ন



বিধ্বংসী আগুনে অঙ্গার বঙ্গবাজার
সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আগুন


রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দীর্ঘ সাড়ে সাত ঘণ্টা পর রাজধানীর বঙ্গবাজারে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণ এসেছে।

ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিটের আপ্রাণ চেষ্টায় দীর্ঘ সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। এতে আশপাশের ভবনে আর আগুন ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের এক ক্ষুদেবার্তায় এই তথ্য জানানো হয়।

এদিকে, রাজধানীর বঙ্গবাজারে আগুনে পুড়ে ছাই হওয়া মার্কেটের ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।

দুপুর ১টার দিকে ফায়ার সার্ভিস অধিদফতরের গেটে এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

ফায়ার ডিজি বলেন, ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল মার্কেটের ভবনকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছি। এমনকি ১০ বার নোটিশ দিছি। করণীয় যা ছিল করেছি।


মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে গুলিস্তানের বঙ্গবাজারে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এর পাশেই ফায়ার সার্ভিসের সদর দফতর হওয়ায় সকাল ৬টা ১০ মিনিটের দিকে আগুনের খবর পেয়ে দুই মিনিটের মাথায় ৬টা ১২ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় প্রথম ইউনিট। পরে পানির সংকট ও তীব্র বাতাসের ফলে তীব্রতা বাড়ায় আগুন নেভাতে বেশ বেগ পেতে হয়।

সবশেষ ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থলে কাজ করে সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীও। পাশাপাশি র‌্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরাও আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন।

এখনো আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কোনো তথ্য না মিললেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভয়াবহ এই আগুনে সৃষ্ট ধোঁয়ায় ফায়ার সার্ভিসের ৪ জন কর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া ভয়াবহ এই আগুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ১১ জন রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৫ জন ভর্তি আছেন। তবে তাদের মধ্যে চারজনই আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। নতুন ভবনের ৬০১ ও ৬০২ নম্বর ওয়ার্ডের রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।


এদিকে, রাজধানীর বঙ্গবাজারে লাগা এই আগুনে কয়েক হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন। তার মতে, ঈদের আগে ব্যবসায়ীদের জীবনে যেন কেয়ামত নেমে এসেছে।

হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এখানে প্রায় আড়াই হাজার দোকান ছিল। ক্ষতির পরিমাণ তো বলা তো মুশকিল। তবে কয়েক হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।’

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এই ব্যবসায়ী নেতা। তিনি বলেন, ‘এটা শুধু ক্ষতি না। ব্যবসায়ীদের জীবনে ঈদের আগে কেয়ামত হয়ে গেল। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

এদিকে, বঙ্গবাজারের সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজ রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যেই তিনি আগুন নেভানোসহ সার্বিক বিষয় সংশ্লিষ্টদের নানা নির্দেশনাও দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার জানিয়েছেন, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে বসে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা মনিটরিং করছেন। এছাড়াও তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।


এসই/০২