সিলেট মিরর ডেস্ক
এপ্রিল ০২, ২০২৩
০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ০২, ২০২৩
০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন
আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি গোপনে প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কামরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিএনপি আসবে। তারা গোপনে প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচনে না এলে তাদের রাজনৈতিক পরাজয় হবে। অতএব দল ও কর্মী বাঁচাতে হলে বিএনপিকে রাজনীতিতে আসতে হবে।’
আজ শনিবার (১ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে পবিত্র রমজান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খাদ্যসামগ্রী উপহার বিতরণ করেছে আওয়ামী যুবলীগ। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কামরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির কাজ হলো রোজার দিনে মানুষকে কষ্ট দেওয়া। কারণ আন্দোলন করতে গিয়ে বিশাল জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে। তবুও তারা সেটা করে যাচ্ছে। আর আমরা ইফতার মাহফিল বাদ দিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করছি। আমরা মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা এখন বিশ্বের রোল মডেল। আমাদের সব অর্জন নষ্ট করতে বিএনপি মাঠে নেমেছে। তারা দেশের মানুষ ভালো থাকুক এটা চায় না।’
তিনি বলেন, ‘আজকে পহেলা এপ্রিল বাংলাদেশে দশ ট্রাক অস্ত্র এসেছিল। তখন বাংলাদেশের নির্বাহী ক্ষমতায় ছিলেন খালেদা জিয়া। তার মন্ত্রিসভার মন্ত্রী জামায়াত নেতা নিজামীসহ তখনকার সরকার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল। বর্তমানে বিএনপি বাক-সন্ত্রাস করছে। নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ব নিতে হবে। এই অপশক্তিকে অপসারণ করতে হবে।’
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘শেখ হাসিনার কর্মের কারণে বর্তমানে মানুষ বুঝে গেছে, তিনি ছাড়া বাংলাদেশ উন্নত হতে পারবে না। তাই মানুষ আগামী নির্বাচনে নৌকাকে ভোট দেবে। প্রথম আলো সরকারের বিরুদ্ধে ভুল সংবাদ ছাপিয়েছে। এটা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তাদের জন্য বিএনপিকে মায়াকান্না করতে দেখলাম। আবার বিএনপির এক ইফতারে গতকাল ৩০-৩৫ জন সাংবাদিকদের পিটিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী এবং নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান থাকবেন শেখ হাসিনা। এর বাইরে গিয়ে অন্য কোনো ব্যবস্থা অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশে ফিরে আসবে না।’
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘মাহে রমজান হলো আত্মশুদ্ধির মাস, সংযমের মাস। যেখানে আমরা শেখ হাসিনার উপহার নিয়ে মানুষের কাছে এসেছি, তখন বিএনপি প্রতি শনিবার আন্দোলন করছে। প্রথম আলো গত ২৬ মার্চ যে সংবাদ প্রকাশ করেছে, এতে তারা প্রমাণ করতে চেয়েছে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে বলে এদেশের মানুষ ভালো নেই। আসলে তাদের উদ্দেশ্য কী? তাদের উদ্দেশ্য হলো, দেশের মানুষ ভালো থাকুক এটা তারা চায় না। গতকাল পল্লবীতে বিএনপি সাংবাদিকদের ওপর কীভাবে হামলা করেছে, তা আপনারা দেখেছেন।’
শেখ পরশ বলেন, ‘আমাদেরকে কিছু উপহার নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের কাছে পাঠিয়েছেন। এগুলো আপনাদের অধিকার, কোনো ত্রাণ নয় বা দান নয়। বর্তমানে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে কিছুটা খারাপ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু আপনাদের কথা আমাদের প্রধানমন্ত্রী মনে রেখেছেন। টিসিবিসহ বিভিন্নভাবে আপনাদের সাহয্যে করে যাচ্ছেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি হত্যা, খুন করেও আমাদের কর্মীদের আদর্শ থেকে এক চুলও সরাতে পারেনি। কারণ যুবলীগ গণমানুষের সংগঠন। তারা মানুষের কল্যাণে কাজ করে। বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শ ও নেতৃত্ব নেই বলে তারা দেশে নেতিবাচক রাজনীতি করেছে। তারা পঁচাত্তরের মতো তাদের প্রভুদের খুশি করতে আবারও ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু আমরা যুবলীগ আপনাদের পাশে আছি।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আমলে মানুষের আয় কত ছিল? রাস্তাঘাটের অবস্থা কেমন ছিল? মানুষ ও সমাজের অবস্থা কেমন ছিল? চিকিৎসা ও শিক্ষা ব্যবস্থা কী ছিল? এই তুলনাগুলো করলে আপনারা বুঝতে পারবনে কারা দেশের জন্য কাজ করে। বঙ্গবন্ধু ১৪ বছর কারাগারে ছিলেন। কারণ তিনি মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলতেন। সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণের এক নীল নকশা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা ও বিএনপি। এই নকশার উদাহরণ হলো প্রথম আলো হলুদ সাংবাদিকতা। যেখানে একজন শিশুকে ব্যবহারে রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করছে। যার মাধ্যমে তারা সাংবাদিকতার মতো মহৎ পেশাকে কলঙ্কিত করেছে।’
শেখ পরশ বলেন, ‘তারা সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণে মরিয়া। কারণ এখানে কোনো মহলের স্বার্থ আছে। ১৯৭৫ সালে হলিডে ও গণকণ্ঠ পত্রিকা এবং সুশীলরা দেশ গেল বলে ধুঁয়া তুলেছিল। প্রথম আলোকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে উচ্ছিষ্টদের নিয়ে গঠিত দলের নাম বিএনপি। অবৈধভাবে রাতের আঁধারে ক্ষমমতা দখল করেছিল। তারা এখন আবার গণতন্ত্রের কথা বলছে। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তারা রাতের আঁধারে দেশের একজন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতিকে খুন করেছিল। তারা এখন গণতন্ত্রের লেবাস পরে জাতির সঙ্গে তামাশা করছে।’
মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘১৯৯৪ সালে মেয়র হানিফ নির্বাচিত হওয়ায়, আওয়ামী লীগের মিছিলে গুলি করে সাতটি প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল বিএনপি। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে খুন করে দেশের ক্ষমতা দখল করেছিল। বিএনপি সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি ও জঙ্গী সংগঠন। তাদের সঙ্গে কোনো জনগণ নেই। কারণ তারা জনরায়ের ক্ষমতাকে বিশ্বাস করে না। আমরা যখন রমজান মাসে শেখ হাসিনার উপহার আপনাদের কাছে নিয়ে এসেছি, কিন্তু তারা আজকেও রাজপথে আন্দোলনরত। তারা গতকালও সাংবাদিকের ওপর হামলা করেছে। তাহলে আমরা তাদের ডাকাত ও সন্ত্রাসী সংগঠন বললে ভুল হবে না।’
এএফ/১১