সিলেট মিরর ডেস্ক
মার্চ ১৩, ২০২৩
০৭:১৯ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মার্চ ১৩, ২০২৩
০৭:১৯ পূর্বাহ্ন
আসন্ন রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যানজট, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচিবদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রবিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বিশেষ নির্দেশনাগুলো তিনি তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে নিজ নিজ বিভাগের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, পবিত্র রমজান মাসে কোনোভাবেই যাতে দ্রব্যমূল্য না বাড়ে, সে বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে বাণিজ্য সচিবকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না ঘটে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। ইফতার ও সাহরিতে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব বলেন, বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবারের রোজায় দেশে অনেক বেশি খাদ্য ও নিত্যপণ্যের মজুদ আছে। তাই তিনি জনগণকে অহেতুক উদ্বিগ্ন হয়ে একবারে অনেক বেশি পণ্য না কেনার আহ্বান জানিয়েছেন। রোজায় মানুষের কষ্ট লাঘবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে তিনি এ আহ্বান জানান।
মুখ্য সচিব বলেন, ‘রোজার প্রস্তুতি আমরা যথাযথভাবে নিতে পেরেছি। পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বাজারে আছে। যখন যার যা প্রয়োজন তা নিলে কারো কোনো সমস্যা হবে না। আমরা খুব ভালোভাবে রোজা ও ঈদ উদযাপন করতে পারব।’
তিনি বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য পেয়েছি, এবার সরকারের খাদ্য মজুদের পরিমাণ অনেক বেশি।
রোজার সময় অবৈধ মজুদ ও বাজারে সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন মুখ্য সচিব। তিনি বলেন, রোজায় পণ্যমূল্য বাড়বে না। পণ্যমূল্য বাড়ার কোনো কারণ নেই।
তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘‘চিনি-তেলের ওপর ‘ডিউটি’ (শুল্ক) কমানো হয়েছে। এ পণ্যগুলো আমাদের বাজারে ঢুকে গেছে। সরকারও যথেষ্ট পরিমাণ নিত্যপণ্য সরবরাহ করেছে। আমরা মোবাইল কোর্ট চালু রাখব। মনিটরিং জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছি। পণ্য পরিবহনে যাতে কোনো বাধা সৃষ্টি না হয় সে জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘রোজার সময় নিত্যপণ্য যাতে মানুষের কাছে পৌঁছায়, সরবরাহ শৃঙ্খল ঠিক থাকে, সে জন্য আমরা সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি। কম আয়ের মানুষের জন্য সরকার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি নিয়েছে। ওএমএস, টিসিবি আছে; রোজা ও ঈদ ঘিরে দুই কিস্তিতে এবার খাদ্যপণ্য সরবরাহ করা হবে। তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুর আমরা দুবার করে এক কোটি মানুষকে দেব। সে হিসাবে প্রতিবার পাঁচ কোটি লোক উপকৃত হবে।’
দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখা ও খাদ্যে ভেজাল বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঈদ যাত্রা যানজটমুক্ত ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করার বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয় এ বৈঠকে।
বৈঠকে সারা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, ইফতার, তারাবি ও সেহরির সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্ ও পানি সরবরাহ, বাস-ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি ও প্রতারণা-ছিনতাই প্রতিরোধের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া সহজে টিকিটপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা, মহাসড়কের শৃঙ্খলা, ঈদের আগে রাস্তা ও সেতু সংস্কার, নৌপথে ফেরি বাড়ানো, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ঠেকানো, আকাশপথে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাড়ানো, গার্মেন্ট ও পাটকল শ্রমিকদের বেতনের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, রেলপথ মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (সমন্বয় ও সংস্কার), সেতু বিভাগ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, ধর্ম মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
এএফ/০১