করোনা নিয়ন্ত্রণে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধের দাবি ফখরুলের

সিলেট মিরর ডেস্ক


এপ্রিল ২৪, ২০২১
১০:৪৮ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২৪, ২০২১
১০:৫১ অপরাহ্ন



করোনা নিয়ন্ত্রণে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধের দাবি ফখরুলের

প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট পাওয়ায় ওই দেশের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

তিনি বলেন, ভারতের পশ্চিম বাংলায় করোনার নতুন সংক্রমণটা সবচেয়ে বেশি হয়েছে। সেজন্য ভারতের সাথে স্থল পথের সীমান্তগুলো একেবারে বন্ধের পাশাপাশি বিমানপথে আসা যাত্রীদের তিন দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকার সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, করোনা নিয়ে সরকারের নানাবিধ অনিয়ম ও হঠকারী সিদ্ধান্ত পরিস্থিতিকে ভয়ংকরভাবে নাজুক করে ফেলেছে। সরকারের ঘোষিত লকডাউনের সাধারণ মানুষ গ্রামের বাড়ি চলে গেলো। এখন আবার সবকিছু স্বাভাবিক করায় সবাই ফিরতে শুরু করেছেন। ঈদের আগে তারা আবার গ্রামে ফিরে যাবেন। ফলে সারা দেশেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

মির্জা ফখরুলইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের যে ভেরিয়েন্ট এসেছে তা ভয়াবহভাবে ছড়িয়েছে। এমন একটা পরিবার নেই যেখানে এই সংক্রমণ যায়নি। এমনকি শিশুরা পর্যন্ত এবার বাদ পড়ছে না। এই বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা দরকার এবং একটা পরিকল্পিত, সমন্বিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার লকডাউন কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছে। তার প্রধান কারণ মানুষের জন্য খাদ্যসংস্থান না করা এবং অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা না করা। এতে মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করা রীতিমতো অমানবিক ও অর্থহীন প্রচেষ্টা। লকডাউন ঘোষণার আগেই জনগণের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের মূল দায়িত্ব।

লকডাউনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত 'দিন আনে দিন খায়' গরীব দিনমজুর, পেশাজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের প্রত্যেককে অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রীয় বিশেষ তহবিল থেকে বিশেষ বরাদ্দ দেয়া, দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে 'সুরক্ষায় সহায়তা' প্যাকেজের আওতায় আনা, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প ও কৃষিখাতে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে বিশেষ প্রণোদনা বরাদ্দ, রাজনৈতিক বিবেচনা না করে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পোদ্যোক্তা ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ঋণ প্রণোদনা প্রদান, উদ্যোক্তাদের পূঁজির ব্যবস্থার সুনিদিষ্ট প্রস্তাব দলের পক্ষ থেকে তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। 

একইসঙ্গে ২০২০ সালের এপ্রিলে বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্নখাতে ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনা প্রস্তাব যথাযখভাবে মূল্যায়ন করে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, পুরো জাতি আজ মহাসংকটের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করছি। এই মুহূর্তে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ ও সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে আমাদেরকে এই দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে। অন্যথায় এর দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার প্রায় সোয়া এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষাণা করেছিল। তাদের ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের অর্ধেকই পৌঁছায়নি ভুক্তভোগীদের কাছে। ঘোষিত প্যাকেজের ৫০ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা বিতরণ সম্ভব হয়নি, যা মোট ঘোষিত অর্থের প্রায় ৪২ শতাংশ।

টিকা নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনার টিকা সংগ্রহে স্বেচ্ছাচারিতা ও নতুন অনিশ্চয়তা গোটা জাতিকে হতাশ করে ফেলেছে। একটি উৎস থেকে টিকা সংগ্রহ করতে গিয়ে আজকে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

লকডাউনের নামে রাজনৈতিক নিপীড়ন করা হচ্ছে অভিযোগ করে করে মির্জা ফখরুল বলেন, লকডাউনের নামে সরকার মূলত বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দল ও আন্দোলনকারী আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন ঘোষণা করেছে। সরকারের অপকর্ম, দুর্নীতি, অত্যাচার, নির্যাতন ও ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যাতে কেউ কোনো শব্দ উচ্চারণ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে কোনো না কোনোভাবে নির্বতনমূলক আইনের আওতায় এনে কন্ঠ রোধ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এবার সবচেয়ে কম খাদ্য মজুদ রয়েছে। যেখানে ১১ লাখ টন থাকার কথা সেখানে এবার তিন লাখ টন রয়েছে। খাদ্য আমদানি করার কথা থাকলেও সেটা হয়নি।

বিএ-০৮