বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ুন: সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট

সিলেট মিরর ডেস্ক


মে ০১, ২০২৫
০৬:২৯ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ০১, ২০২৫
০৬:২৯ অপরাহ্ন



বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন গড়ুন: সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট
১৩৯ তম মে দিবস উপলক্ষে


সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে  লাল পতাকা মিছিল ও শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুর ১২টায় নগরের আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে জমায়েত শেষে সিটি পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা সভাপতি আবু জাফরের সভাপতিত্বে ও জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রণব জ্যোতি পালের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য দেন বাসদ সিলেট জেলা শাখার সাবেক আহ্বায়ক উজ্জ্বল রায়,বাসদ জেলা সদস্য জুবায়ের আহমদ চৌধুরী সুমন,চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আহ্বায়ক নাজিকুল ইসলাম রানা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর সহ সভাপতি শহীদ আহমদ ও বেলাল আহমদ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর এডভোকেট মুখলেছুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন বেপারী,চা শ্রমিক ফেডারেশনের বীরেন সিং ও সিপন পাল, নির্মাণ শ্রমিক ফ্রন্টের জিতু সেন, রিকশা ব্যাটারি রিকশা -ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ এর সহ সভাপতি মনজুর আহমদ, ইয়াছিন আহমদ, মিন্টু যাদব, ইউসুফ আলী, সংগ্রাম পরিষদ ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দের মধ্যে শেখ রফিক আহমদ, শরীফুল ইসলাম,আনিছ খান,খায়ের আহমদ, এরশাদ আহমদ, জাহেদ আহমদ, রনি আহমদ, সাইফুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, শহীদ নূর, শ্রমিক ফ্রন্ট ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দের মধ্যে মাহফুজ আহমেদ, আলতাফ হোসেন,আরিব খান, প্রমূখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘১৮৮৬ সালে হে মার্কেটের রক্তাক্ত অন্দোলনের মধ্যে দিয়ে সরকার ৮ ঘন্টা কাজের ্অধিকারের যে স্বীকৃতি অর্জন করেছিল তার সাথে ন্যায্য মজুরি এবং অবসরের অধিকারের বিষয়টি নিহিত ছিল। আজ ১৩৯ বছর পরে বিভিন্ন কৌশলে ৮ ঘন্টা কাজের শর্ত লঙ্ঘন করতে শ্রমিকের সম্মতি আদায় করা হচ্ছে। শ্রমিককে বাধ্য করা হচ্ছে অগ্রণযোগ্য কাজের শর্ত মেনে নিতে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা পরবর্তী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণ কে তিব্র থেকে তিব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে। সেই লক্ষ্যে শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের চেতনা জাগানোর মে দিবসকেও ধর্ম কিংবা উৎসবের আয়োজনে আড়ালে করার চেষ্টা হচ্ছে। 

  সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, আজ যে সময় আমরা মে দিবসের ১৩৯ বছর পূর্তি পালন করছি সেই সময় সরকার ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে আমাদের গার্মেন্টস উইং এর সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিক্সা শ্রমিকদের রুটি রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিক্সা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিন কে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ, সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তারা শ্রম ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে। আমরা আজকের এই সমাবেশ থেকে বলতে চাই, শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি কি সরকারের আচরনে প্রতিফলিত হচ্ছে? ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার শ্রমিকের মৌলিক অধিকার সেই অধিকার চর্চায় বাধা দেয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের উপর নিপীড়ন করা বন্ধ না হলে অন্তর্ভূক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরষণের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসাবে পরিগণিত হবে।

বক্তারা অবিলম্বে বিআরটিএ কর্তৃক ব্যাটারিচালিত যানবাহনের লাইসেন্স-রুট পারমিট - নিবন্ধন প্রদানের আহ্বান জানান। বক্তারা সিলেট নগরীতে ব্যাটারিচালিত যানবাহন আটক-হয়রানি-উচ্ছেদ বন্ধ ও রেকার বিল পূর্বের মতো ৫শত টাকা নির্ধারণ করার আহ্বান জানান। বক্তারা কালাগুল,বুরজান, ছড়া গাঙ বাগানের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি-রেশন -বোনাস প্রদানের আহ্বান জানান।

নেতৃবৃন্দ, গ্রেফতারকৃত সকলের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে ঞবলেন অবিলম্বে আউট সোর্সিং, দিন মজুরি ভিত্তিতে নিয়োগের নামে আধুনিক দাস প্রথা বাতিল করে কর্মরতদের স্থায়ী নিয়োগ দেওয়ার আহবান জানান। 

এর আগে মিছিল শুরুর পূর্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অস্হায়ী মঞ্চে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলা গণসঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।




এএফ/০৫