সিলেট মিরর ডেস্ক
মে ০১, ২০২৫
০৪:০৩ অপরাহ্ন
আপডেট : মে ০১, ২০২৫
০৪:০৩ অপরাহ্ন
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যারা ফোকলা করে দিয়েছে, সেই ফ্যাসিস্ট শাসকগোষ্ঠীর হাতে দেশের শ্রমজীবী মানুষ আজও চরম বৈষম্যের শিকার। রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করে শ্রমিকদের প্রাপ্য বেতন-ভাতা না দিয়েই তারা পলায়নপর। এই অবিচারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) মহান মে দিবস ২০২৫ উপলক্ষে সিলেট নগরীর মালঞ্চ সেন্টারে জেলা শ্রমিক দলের উদ্যোগে আয়োজিত র্যালি-পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘স্বাধীনতার অর্ধশতক পেরিয়ে গেলেও দেশের শ্রমিকরা এখনো ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা থেকে বঞ্চিত। গণতন্ত্রহীনতা, দমন-পীড়ন ও শোষণমূলক ব্যবস্থার কারণে তাদের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। আট ঘণ্টা কাজের অধিকার, যা এক সময় শ্রমিকের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল, আজ তা অনিশ্চয়তার মুখে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানেও শ্রমজীবী মানুষের ওপর নিপীড়ন ক্রমেই বাড়ছে। অথচ বিএনপি সবসময় শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় সোচ্চার থেকেছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এই সরকারের বিরুদ্ধে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শ্রমজীবী মানুষের রক্তস্নাত ভূমিকা রয়েছে। এই আন্দোলনে বহু শ্রমিক শহীদ হয়েছেন। শ্রমিকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা সম্ভব কেবল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্য দিয়ে।’
মে দিবসের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘১৮৮৬ সালের শিকাগোর হে মার্কেটের শহীদ শ্রমিকদের আত্মত্যাগ আমাদের আজও প্রেরণা জোগায়। মে দিবস কেবল একটি দিবস নয়, এটি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার গৌরবময় ইতিহাস।’
বিএনপির শ্রমিকবান্ধব নীতির কথা স্মরণ করে কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শ্রমিকদের প্রকৃত বন্ধু ছিলেন। তাঁর শাসনামলে শ্রমিক কল্যাণে মজুরি নির্ধারণ, শ্রম আইন সংস্কার, কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন এবং চিকিৎসা ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। বিশেষ করে গার্মেন্টস খাতে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শাহ আব্দুল মুকিত এবং সঞ্চালনা করেন সদস্যসচিব নুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
সমাবেশের শেষভাগে কাইয়ুম চৌধুরী বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন এবং মে দিবসকে নতুন শপথ গ্রহণের দিন হিসেবে বরণ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আসুন, এই মহান দিনে আমরা প্রতিজ্ঞা করি—শ্রমের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, শ্রমিকের অধিকার আদায় এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।”
এএফ/০৩