নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১
০৩:১১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১
০৩:১১ পূর্বাহ্ন
‘সততা ও সুনামের’ সঙ্গে অবসরে যাওয়ার পরও চক্রান্তের শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন মইনউদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজের সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিন। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই শিক্ষক বলেছেন, তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। তাকে হয়রানি এবং প্রশ্নবিদ্ধ করতে এমন আচরণ করে যাচ্ছেন কলেজের ইংরেজি বিভাগের ‘চাকুরিচ্যুত’ প্রভাষক মো. মাহবুবুর রউফ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সরকারের নীতিমালা অনুসারে ৬০ বছর বয়সে অবসর নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু ২০১৮ সালে সেই নীতিমালা প্রণয়নের আগে কলেজের স্বার্থে কলেজের পরিচালনা পরিষদ তার চাকুরীর মেয়াদ ২ বছর বৃদ্ধি করেন। বর্ধিত ২ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়া মাত্রই চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বপালনকালে ২০১৫ সালের ২৭ জুন গভর্নিং বডির অনুমোদনক্রমে ইংরেজি বিষয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগ পান মো. মাহবুবুর রউফ (নয়ন)। যোগদানের পর থেকেই তিনি নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে থাকেন। কলেজে সদ্য চালু হওয়া অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনা এবং হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ সম্পর্কে সাধারণের মাঝে বিরূপ ও নেতিবাচক বক্তব্য দেন তিনি। এ নিয়ে অর্থনীতি বিভাগের দুইজন প্রভাষক এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের দুইজন প্রভাষক পৃথকভাবে তার বিরুদ্ধে চার অভিযোগ করেছেন।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘কলেজের ইংরেজি বিভাগের তিনজন প্রভাষক রউফের তার বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি অভিযোগ এবং ছাত্রীদের সঙ্গে অসধাচরণের অভিযোগসহ নানাকারণে ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশ প্রদানের ৭ দিনের মধ্যেই তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু নিঃশর্ত তার মাঝে তেমন পরিবর্তন আসেনি।’
মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, ‘২০১৭ সালের ১ ফেব্রæয়ারি রাতে কলেজ ক্যাম্পাসে সরস্বতী পূজায় ছাত্রীদের জোরপূর্বক নাচের নামে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালে কলেজের পাশ্ববর্তী ভবনে প্রাইভেট টিউশনি চালিয়ে নকলে উস্কানি দিয়ে সরকারের জারিকৃত প্রাইভেট কোচিং নীতিমালাসহ সরকারী আইন লঙ্গন করেন রউফ। এসব কারণে ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বরে গভর্নিংবডির ৯৭তম সভায় প্রথম কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদানকালে গভর্নিংবডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক লঘুদণ্ডের সিদ্ধান্তের পাশাপশি ১ (এক) বছর পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল।
এতে শর্ত দেওয়া হয়েছিল, পর্যবেক্ষণকালে তার বিরুদ্ধে পুনরায় কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে বিধি মোতাবেক বরখাস্ত করা হবে। কিন্তু পর্যবেক্ষণের সময়ে তার আচরণগত পরিবর্তন না আসায় এবং ওই সময়েও একাধিক অভিযোগ থাকায় কলেজ গভর্নিংবডি ক্ষুব্ধ হন। পরে এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোনীত সদস্য ড. জফির উদ্দিনকে আহবায়ক করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্ত শেষে একই বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি ১০টি পয়েন্ট তুলে ধরে ‘উপযুক্ত সিদ্ধান্তসমূহ পর্যালোচনা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ মাহবুবুর রউফ-এর ব্যাপারে বিধি মোতাবেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন।’- মন্তব্য করে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। এরপরই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকুরী শর্তাবলী অনুসারে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মাহবুবুর রউফকে (নয়ন) চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বরখাস্ত হয়ে মাহবুবুর রউফ নয়ন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নামে-বেনামে অভিযোগ, সংবাদপত্রে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রদান করে। এ সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
বিএ-১৯