নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১
০৭:০৯ পূর্বাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১
০৭:০৯ পূর্বাহ্ন
লটারির মাধ্যমে ভর্তির ফলে এবার সব বিদ্যালয় মেধাবী শিক্ষার্থী পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক।
তিনি বলেন, ‘করোনা আমাদের জীবনে অনেক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে আমরা ভর্তি পরীক্ষার পরিবর্তে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই করেছি। এতে করে প্রত্যেকটি বিদ্যালয় যেমন ভালো শিক্ষার্থী পেয়েছে, তেমনি তুলনামূলক দুর্বল শিক্ষার্থীও পেয়েছে। এতে করে বিদ্যালয়গুলোতে মেধাবীদের ভারসাম্য এসেছে। মেধাবীরা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ায় বিদ্যালয়গুলোও সমানভাবে এগিয়ে যাবে।’
সিলেট জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে করোনা পরবর্তী শিক্ষা চালুকরণ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শুক্রবার বিকেলে সিলেট সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম ফারুক আরও বলেন, ‘বর্তমান পুঁজিবাদি সমাজ আমাদের প্রতিযোগী হতে শেখায়। শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতা অভিভাবক পর্যন্ত গড়িয়েছে। কার সন্তানের চেয়ে কে বেশি নম্বর পেল, কে প্রথম হলো সেটাই মুখ্য হয়ে গেছে। এ জন্য আমরা রোল নম্বর প্রথা বাতিল করেছি। শিক্ষার গুণগত মানকে এগিয়ে নিতে হলে প্রয়োজন বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা। একে অপরের মধ্যে সহযোগিতা না থাকলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু বিদ্যালয়গুলোর মধ্যেও চলে তুমুল প্রতিযোগিতা। কোন বিদ্যালয়ের চেয়ে কোন বিদ্যালয় ভালো করল, এটা নিয়েও চলছে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। লটারির মাধ্যমে ভর্তি বাছাই প্রক্রিয়া শুরুর মাধ্যমে এসব লোপ পাবে বলে আশা করছি।’
পরীক্ষার পরিবর্তে এসাইনমেন্ট পদ্ধতিও নতুনত্ব এনেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসাইনমেন্টের সঙ্গে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগে পরিচিত ছিল না। এটা করতে করতে শিক্ষার্থীরা শিখবে। এর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুনত্ব এসেছে। শিক্ষার্থীদের মুখস্থনির্ভরতা কমবে, অনুধাবন দক্ষতা বাড়বে। এছাড়া আগামী বছর পাঠ্যবইয়ের নতুন কারিকুলাম আসছে। সেখানে সব বিষয় উল্লেখ থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা নিজেদের বিদ্যালয় নিজেরাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবে। করোনার আগে সপ্তাহে একদিন বিদ্যালয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হতো। করোনা পরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রমে সপ্তাহে একদিন নয়, প্রতিদিন পালাক্রমে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা পরিষ্কার করবে। এটা গুণগত শিক্ষার একটি অংশ। মনে রাখতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা আগে, তারপর লেখাপড়া। নতুন কারিকুলামে এসবও উল্লেখ থাকবে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সিলেট অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. নুর এ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শামীমা আক্তার চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সিলেট অঞ্চলের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর কবীর আহমদ।
সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সহকারী শিক্ষক কুহেলী রাণী দাসের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন, মদনমোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সর্বাণী অর্জুন, সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কবীর খান ও জৈন্তাপুরের সারিঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম।
মতবিনিময়কালে তারা বলেন, ‘করোনার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বাড়ছে। গ্রামাঞ্চলে অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের অর্থ উপার্জনের জন্য বিভিন্ন কাজে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এছাড়া মাদরাসা খোলা থাকায় অভিভাবকরা মাদরাসায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের। অনেক শিক্ষার্থী মাদরাসার কারিকুলাম ও পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে ব্যর্থ হয়ে ঝড়ে পড়ছে।’
আরসি-০৫