নিজস্ব প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২১
০১:৪৫ পূর্বাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২১
০১:৫২ পূর্বাহ্ন
মসৃণ সড়ক, নানা রঙের আলোয় আলোকিত। ডিভাইডারজুড়ে নানা রকম ফুল। রাতের আঁধারে কৃত্রিম আলো যেন সৌন্দর্য আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। এ কারণে চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অনেকের কাছেই প্রিয় হয়ে উঠেছে। আলোকিত এই সড়কে তাই পথচারীদের স্বস্তির পথচলার সঙ্গে যুক্ত হয় মুগ্ধতা। কিন্তু সেই মুগ্ধতা মিলিয়ে যায় চৌহাট্টায় পৌছার পরই। পথচলার সঙ্গে তখন আশঙ্কাও যুক্ত হয়। কারণ চৌহাট্টা-আম্বরখানা সড়ক ঘুটঘুটে অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে।
সিলেট নগরের সৌন্দর্য বর্ধনের অংশ হিসেবে চৌহাট্টা থেকে বন্দরবাজার অবধি বন্ধ করা হয়েছে রিকশা চলাচল। দুই দিকে যাতায়াতের সুবিধার্থে নির্মিত হয়েছে ১ হাজার ৬০ মিটার সড়ক ডিভাইডার। রাতের আঁধারে চলাচলের সুবিধার্থে ডিভাইডারের মাঝখানে ৩০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন হয়েছে। সেই খুঁটিতে লাগানো হয়েছে ৬২টি সড়কবাতি। শুধু তাই নয়, সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ডিভাইডারগুলোতে বিভিন্ন জাতের ফুল গাছের চারা রোপণ করা হয়। খুঁটির সঙ্গে আরও যুক্ত করা হয় ইলেক্ট্রিক এলইডি লাইট। এতে করে সড়কটি জুড়ে শুধু আলোর ঝলকানি।
সৌন্দর্য বৃদ্ধির কারণে এই সড়ক মানুষের কাছে অন্যরকম একটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। গভীর রাত অবধি উৎসুক মানুষকে এখানে ছবি তুলতে দেখা যায়। তবে চৌহাট্টা থেকে আম্বরখানা পর্যন্ত দেখা যায় বিপরীত চিত্র।
নগরের চৌহাট্টার যাত্রী ছাউনি থেকে শুরু করে আম্বরখানা পর্যন্ত একটি সড়ক বাতিও নেই। পথচারীরা যেটুকু আলো পান সেগুলো বিভিন্ন মার্কেট ও দোকানপাটের বাইরে জ্বালিয়ে রাখা বাতি থেকে। এতে করে ড্রেন ও সংস্কার কাজের ফলে এখনও সড়কজুড়ে ছড়িয়ে আছে কংক্রিটের টুকরো। আলো না থাকায় যেকোনো সময় ছোটখাটো দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন পথচারীরা।
গত সোমবার চট্টগ্রাম থেকে সিলেটে ঘুরতে আসেন আন্তর্জাতিক একটি সংস্থার কর্মকর্তা শুভাশিষ রায় ও মো. সাজেদ। গভীর রাতে সিলেটে প্রবেশ করে বন্দর থেকে চৌহাট্টা এসে হয়েছেন মুগ্ধ। তবে তাদের সেই মুগ্ধতা উবে যায় চৌহাট্টা থেকে আম্বরখানা সড়কে প্রবেশ করতেই।
শুভাশিষ সিলেট মিররকে বলেন, ‘রাতে রিকশা নিয়ে আসছিলাম বলে সৌন্দর্যটা দারুণভাবে উপভোগ করেছি। চৌহাট্টা পর্যন্ত যেভাবে সাজানো হয়েছে-তা সত্যিই মুগ্ধ করবে যেকোনো মানুষকে। তবে আম্বরখানা এলেই যেন সে মুগ্ধতা উবে যায়। সময় নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে সেরা সৌন্দর্যটা দিলে কোনো অভিযোগ থাকে না। তবে সড়কজুড়ে একটিও সড়কবাতি না থাকাটা এক ধরনের আতঙ্কেরই বিষয়। কারণ আমাদের ব্যাগে অনেক দামি জিনিসপত্র ছিল। অন্তত কয়েকটি সড়কবাতি থাকা প্রয়োজন সড়কটিতে।’
এই সড়ককে অনিরাপদ উল্লেখ করে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সংস্কৃতিকর্মী শামসুল আলম সেলিম বলেন, ‘রাতের আঁধারে বেপরোয়া গতিতে ট্রাক চলে। এতেই পথচারিদের জন্য চলাচল করা দায়। আবার প্রশস্তকরণের জন্য খোঁড়া হয়েছে সড়ক। আলোহীন সড়কে তাই চলাচলে ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই দ্রুত এই সড়কে বাতি স্থাপনের দাবি জানাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) রুহুল আলম সিলেট মিররকে বলেন, ‘এই সমস্যা আমরাও অনুধাবন করেছি। তাই নগরবাসির পথচলার স্বার্থে আমরা শীঘ্রই এই পথে সড়কবাতি যুক্ত করব। ইতোমধ্যে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে এই সড়ক আলোকিত হয়ে উঠবে।’
আরসি/বিএ-১০