শহিদ আহমদ চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২১
১০:৫২ অপরাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২১
১০:৫২ অপরাহ্ন
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুতে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তিন থেকে সাড়ে তিন মাস বন্ধ থাকার পর অনেক এলাকায় পত্রিকা যাওয়া শুরু করে। করোনার কারণে বন্ধ থাকা অনেক পত্রিকার প্রকাশনাও আবার চালু হয়। করোনাকালীন বিরতির পর দেশের জেলা-উপজেলাগুলোতে পত্রিকা পাঠকের হাতে পৌঁছালেও ভিন্ন অবস্থা ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায়। পত্রিকা বন্ধের সময় থেকে এখন পর্যন্ত ১০ মাস সময় অতিবাহিত হলেও আজও ফেঞ্চুগঞ্জে যাচ্ছে না কোনো জাতীয় বা স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা। যেখানে আগে জাতীয় ও স্থানীয় মিলিয়ে ৬/৭শ পত্রিকা পাঠকের হাতে পৌঁছে যেত, সেখানে এখন একটি পত্রিকাও পৌঁছায় না এ উপজেলায়। আর পত্রিকা না থাকায় পেশা বদলেছেন উপজেলার অনেক হকার (পত্রিকা বিক্রেতা)।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পাঠক ও সুশীল সমাজের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মানুষ এখনও দৈনিক পত্রিকা হাতে পেতে চান। তারা মনে করেন, যতই টিভি চ্যানেল বা অনলাইন পোর্টাল থাকুক না কেন, একটি ছাপা পত্রিকা হাতে নিয়ে পড়তে যে তৃপ্তি তা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। দেখা যায়, যে এজেন্সির মাধ্যমে ফেঞ্চুগঞ্জে পত্রিকা আসত, সেখানে এখন একটি মিষ্টি নির্মাতা কোম্পানির দোকান। আগের এজেন্সির কাউকে সেখানে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় চম্পু দত্ত বলেন, 'সেই যে করোনার কারণে পত্রিকা বন্ধ হলো, তারপর আর পত্রিকা আসেনি এ উপজেলায়। পত্রিকা পড়তে না পেরে আমার মতো পাঠকরা।'
আরেক পাঠক এ আজাদ চৌধুরী বলেন, 'পত্রিকা হলো সকালবেলার চায়ের মতো। চা ছাড়া যেমন সকালবেলা চলে না, পত্রিকাও তেমনি।'
পত্রিকা বন্ধ হওয়ার পর থেকে খুব খারাপ সময় যাচ্ছে সংবাদপত্র বিক্রেতা নওশাদ ও শুকুর আলীর। আগে যেখানে তারা হাজারের অধিক পত্রিকা ফেরি করে বিক্রি করতেন, ১০ মাস ধরে বন্ধ থাকায় তারা এখন ভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছেন। পত্রিকার ফেরিওয়ালা শুকুর আলী এখন ভাসমান মুরগী ব্যবসায়ী। আর নওশাদের পেশা এখন অস্থায়ী পানের দোকানি।
শুকুর আলী বলেন, 'এজেন্সি পত্রিকা আনে না। কিন্তু আমাদের তো বসে থাকলে চলবে না। বাঁচার তাগিদে ভিন্ন পেশায় এসেছি। যদি আবার পত্রিকা আসে, তবে আগের পেশায় যাব।'
ফেঞ্চুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন ইসকা বলেন, 'একটি উপজেলা পত্রিকা ছাড়া কিভাবে চলে? আমি চাই আগের মতো পত্রিকা আবার পাঠকের হাতে আসুক। পাঠকের প্রয়োজনীয়তা আর মনের খোরাক যোগাতে এটাই আমার প্রত্যাশা।'
এ ব্যাপারে ফেঞ্চুগঞ্জ পত্রিকা এজেন্সির সত্ত্বাধিকারী ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী সুফির সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, 'পত্রিকা আগামী সপ্তাহ থেকে আবার আগের মতো আসবে। পাঠকরা তাদের পছন্দের পত্রিকা পাবেন।'
এসএ/আরআর-০১