কোয়ারেন্টিনের নীতি ভাঙলেন বিএনপি নেতা এমদাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক


ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১
০২:৪৭ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১
০৩:৩০ পূর্বাহ্ন



কোয়ারেন্টিনের নীতি ভাঙলেন বিএনপি নেতা এমদাদ

কোয়ারেন্টিনের নীতি ভেঙ্গে যুক্তরাজ্য ফেরত প্রবাসীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী।এসময় তার সঙ্গে দলটির একাধিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আজ মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কোয়ারেন্টিনের নীতিমালার তোয়াক্কা না করে দিনব্যাপী নগরের বিভিন্ন হোটেলে গিয়ে যুক্তরাজ্য ফেরত প্রবাসীদের সঙ্গে তিনিসহ নেতৃবৃন্দ দেখা করেন। সাক্ষাতকালে তিনি প্রবাসীদের হাতে মাস্কও তুলে দেন।

সিলেট মহানগর বিএনপির দলীয় ই-মেইল থেকে পাঠানো ছবি সংযুক্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানা যায়। যদিও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি দাবি করেছেন, শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখেই কোয়ারেন্টিনরতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।  

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, প্রবাসীরা হচ্ছেন রেমিট্যান্স যোদ্ধা। দেশের গর্বিত এই সন্তানরা নিজ মাতৃভূমিতে এসেও কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের অর্থে দেশের অর্থনীতি সচল হয়। কিন্তু যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের সরকারি খরচে হোটেলে কোয়ারেন্টিনে রাখা উচিত ছিল। সরকার প্রবাসীদের স্বার্থে এমন উদ্যোগ নিতে পারতেন। এমনিতেই দেশে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি ও লুটপাট হচ্ছে। বিদেশে পাচার হচ্ছে হাজার কোটি টাকা। প্রবাসীদের জন্য কিছু টাকা ব্যয় করলে সরকারের তেমন কোনো ক্ষতি হতো না।

এই বিষয়ে এমদাদ হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে সিলেট মিরর থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দেখা করতে গিয়েছি। তাছাড়া এটা আরও তিন-চারদিন আগের ঘটনা। আমার সঙ্গে যারা ছিলেন, তারাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে গিয়েছি।

কোয়ারেন্টিন ফেরত যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির প্রচার সম্পাদক শামীম মজুমদার, যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর্জা বেলায়েত আহমদ লিটন, পরিবার কল্যাণ সম্পাদক লল্লিক আহমদ চৌধুরী, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মামুনুর রহমান মামুন, মানবাধিকার সম্পাদক মুফতী নেহাল উদ্দিন, সহ-দপ্তর সম্পাদক লোকমান আহমদ ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।

এদিকে যুক্তরাজ্য ফেরত কোয়ারেন্টিনরত প্রবাসীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোনো পদ্ধতিতে সাক্ষাতের নিয়ম নেই। এমনটি জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান।

এই বিষয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য ফেরত প্রবাসীদের ৭ দিনের কোয়রেন্টিন বাধ্যতামূলক। কোয়ারেন্টিনের সময় হোটেল কক্ষের বাইরে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। সেখানে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের কোনো প্রশ্নই আসে না। শুধুমাত্র ভার্চুয়াল পদ্ধতিতেই সাক্ষাত করা যাবে। এর বাইরে সাক্ষাতের আর কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ করে থাকেন সেটা নীতিমালা বহির্ভুত।

তিনি আরও বলেন, কোনো ধরণের সমাজসেবা, কিংবা জনসেবার উদ্দেশ্য নিয়ে কোয়ারেন্টিনরতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা যাবে না। নিজের জন্য ও পরিবার এবং প্রতিবেশীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানোর স্বার্থে হলেও এসব থেকে বিরত থাকা উচিৎ। কারণ, দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব বিস্তার রোধে কোয়ারেন্টিনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনা রোধে সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে জনসাধারণকেও এগিয়ে আসতে হবে।

এই বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরক্ত উপ কমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, আমাদের কাছে এই বিষয়ে অনেক তথ্য আগেও এসেছে। কেউ যদি সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেন, তাহলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব। জাতীয় স্বার্থে কোয়ারেন্টিনের বিষয়টি আরও শক্তিশালি করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে আমাদেরও ভূমিকা রয়েছে।

আরসি-১৩