‘ভুয়া’ অপহরণ মামলায় জেল খাটছেন মোজাহিদ

সিলেট মিরর ডেস্ক


জানুয়ারি ২৮, ২০২১
০৮:০০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ২৮, ২০২১
০৮:০০ পূর্বাহ্ন



‘ভুয়া’ অপহরণ মামলায় জেল খাটছেন মোজাহিদ
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

সিলেটের মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্র নজির আহমদ মোজাহিদকে অপহরণ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। অথচ, সে নিজেই এখন কারাগারে। তাকে ফাঁসাতে ভুয়া ‘অপহরণ’ মামলার নাটক সাজিয়েছেন স্থানীয় নুর উদ্দিন।

বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ তুলেছেন মোজাহিদের বাবা সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ থানাধীন শিবেরবাজার বড়ফৌদ গ্রামের ফয়জুল হক।

তিনি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ‘গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে একই গ্রামের মুসলেহ উদ্দিন তার ছেলে মোজাহিদের কাছে টাকা পাওনা দাবি করে বড়ফৌদ পশ্চিম পাড়া গ্রামে মসজিদের মক্তব ঘরের পাশে সালিশ বৈঠক বসান। একই এলাকার রাজা মিয়া তাকে ডেকে নেয়। সেখানে আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন একই এলাকার রফিকুল ইসলাম মোড়ল, আফতাব উদ্দিন, আব্দুর রহিম বাবু, বশির, সুরুজ আলী, সুবহান, সুনান, ইছমত, খালিক, মুহিবুর রহমান, আনিছুর রহমান আয়নিছ, আয়নুল হক, নুর মিয়া, সুরুজ আলী, রাজা মিয়া ও সিরাই। নামে সালিশ হলেও তাদের সবাই অস্ত্রহাতে অপেক্ষা করছিল।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ওই বৈঠকে মোজাহিদ যাওয়া মাত্র তারা ঘেরাও করে মারধরের পর হাওর এলাকায় নিয়ে হত্যার জন্য নির্দিষ্ট করা লোক মুহিব, আয়ানিছ ও খালিকের হাতে তুলে দেন। পরে তাকে নিয়ে তারা চেঙ্গেরখাল শাখার ভাদেশ্বর নদী তীরে যান। কিন্তু, আল্লাহর অলৌকিক ক্ষমতায় আমার ছেলে বেঁচে যায়।’

মোজাহিদকে উদ্ধারের পর জানা যায়, তাদের সঙ্গে ছুরি ও বস্তা ছিল। হত্যার উদ্দেশ্যে তারা এসব প্রস্তুতি নিয়েছিল। এমনকি সেখানে একজন মাটিতে গর্তও করছিল। এমতাবস্থায় একজনের মোবাইলে কথা বলতে শুরু করলে লুঙ্গি রেখে নদীতে ঝাঁপ দেয় মোজাহিদ। নদী পার হয়ে সে ইউনিয়নের দখড়ি গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমানের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।’

তিনি জানান, এ ঘটনায় মোজাহিদের বড়ভাই বশির আহমদ জালালাবাদ থানায় ৭ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৯/১০ কে আসামি করে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ কারণেই আসামিরা প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।’

ফয়জুল হক জানান, ‘১৯ জানুয়ারি বিকেলে আসামি মুসলেহ উদ্দিনকে নগরের আম্বরখানায় পেয়ে জনতার সহায়তায় পুলিশের হাতে তুলে দিতে চেষ্টা করে মোজাহিদ। কিন্তু প্রতিপক্ষ ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে তাকে অপহরণকারী বলে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্যকেও ফোনে জানায়। কিন্তু এসএমপির এয়ারপোর্ট থানাধীন আম্বরখানা ফাঁড়ি পুলিশ তাদের দু’জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এয়ারপোর্ট থানায় মুসলেহ উদ্দিনকে ছাড়াতে আসেন নুর উদ্দিন গংরা। ওইদিন রাতে মোজাহিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু মিথ্যা অপহরণের ঘটনায় মামলা দায়েরের চেষ্টা করলেও এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ দুজনকে মারামারির ঘটনা দেখিয়ে আদালতে চালান দেয়।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও জানান, এরপরদিন ঘটনাস্থল বদলিয়ে মোজাহিদকে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি মুহিবুর ও আনিছুরের চাচাতো ভাই বড়ফৌদ গ্রামের মৃত শুকুর উল্লার ছেলে নুর উদ্দিন জালালাবাদ থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তিনি ছেলে আজাদ হোসেন (১৯) কে অপহরণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন।’

নূর উল্লাহ নিজের ছেলেকে আত্মগোপনে রেখে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন বলে অভিযোগ করেন ফয়জুল হক। ওই মামলার বাদী নূর উদ্দিনকে একজন চতুর প্রকৃতির এবং টাকার বিনিময়ে মামলার বাদি হয়েছেন অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, এর আগেও বিভিন্ন জনের হয়ে মামলা করে পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে আপোষে মামলা তুলে নেওয়ার রেকর্ড তার বিরুদ্ধে রয়েছে। ফয়জুল হক সংশ্লিষ্টদের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

আরসি-০৭