সিলেটে বেতারের গাছ কিনে বিপাকে কাঠ ব্যবসায়ী

সিলেট মিরর ডেস্ক


জানুয়ারি ২৫, ২০২১
০৭:০৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ২৫, ২০২১
০৭:০৩ পূর্বাহ্ন



সিলেটে বেতারের গাছ কিনে বিপাকে কাঠ ব্যবসায়ী
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্রের অভ্যন্তরের ১৪৩টি গাছ নিলামের মাধ্যমে কিনে বিপাকে পড়েছেন কাঠ ব্যবসায়ী মো. আব্দুল কুদ্দুছ। কেনা এসব গাছের মধ্যে ১১৪টি কাটতে পারলেও কাটিং অর্ডার না পাওয়ায় বাকি ২৯টি গাছ কাটতে পারছেন না। দীর্ঘদিন ধরে কেটে গাছ ফেলে রাখায় ৯০ শতাংশই পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে, এ কারণে তার প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছেন তিনি।

রবিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ভার্থখলা এলাকার বাসিন্দা মো. আব্দুল কুদ্দুছ। নিজেকে ক্ষুদ্র কাঠ ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে তিনি বন বিভাগের আগের কর্মকর্তা দিলোয়ার এবং অফিস সহকারী মোস্তফার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্রের ভেতরে ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ও ভবন নির্মাণের জন্য সরকার বরাদ্দ দেয়। এ ভবন নির্মাণ কাজের লে-আউটে বনজ গাছ থাকায় কাজের সুবিধার্থে বেতার সিলেট কেন্দ্র সেই গাছগুলো নিলামে দেওয়ার জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সিলেট বরাবরে পরিমাণ ও মূল্য নির্ধারণ করে নিলাম কাজে সহযোগিতা করতে চিঠি দেয়। এরপরই ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপে ৬৫টি গাছের কাটিং ও বন অপসারণের জন্য আগের বন কর্মকর্তা দিলোয়ার অনুমোদন প্রদান করেন। কিন্তু কাজের ধরন বেড়ে যাওয়ায় তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে পরবর্তীতে আরও ৭৮টি গাছ কাটার অনুমোদন দেন। সবমিলিয়ে ১৪৩টি গাছ নিলামে বিক্রির জন্য ২০১৯ সালের ৫ মে পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন। এতে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মেসার্স শাহজাহান এন্টারপ্রাইজ গাছগুলো কিনেন।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে নিলাম পাওয়ার পর সোনালী ব্যাংক সিলেট কর্পোরেট শাখায় পে অর্ডারের মাধ্যমে নিলামের টাকা জমা প্রদান করাও হয়। পরে একই মাসের ২১ তারিখে বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্র স্বারকের মাধ্যমে বনজ গাছগুলো ১৫ দিনের মধ্যে কেটে বেতার ভবন থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন বেতার কর্তৃপক্ষ। সেই নির্দেশনা পেয়ে ১১৪টি গাছ কাটা হয়। কিন্তু এরই মাঝে কাটিং অর্ডার পাওয়া যায়নি অজুহাতে গাছ কাটতে বাঁধা প্রদান করা হয়। ফলে অবশিষ্ট ২৯টি গাছ কাটতে আমাদেরকে বাধা প্রদান করা হয়। কাটিং কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের ৯০ শতাংশ কাঠ পচে নষ্ট হয়ে যায়। এতে বিপুল অঙ্কের টাকা লোকসানের মুখে পড়ি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গাছগুলো না সরিয়েই গণপূর্ত অধিদপ্তর কন্সট্রাকশনের কাজ শুরু করে দেয়। এতে কাঠগুলো মাটি চাপা পড়ে পচে যায়। বিষয়টি আমরা সিলেটের জেলা প্রশাসককেও জানিয়েছি। এতে কোনো কাজ না হওয়ায় আমরা উচ্চ আদালতে পিটিশন দায়ের করি। উচ্চ আদালত ১ মাসের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে দিতে বেতার সিলেট কেন্দ্রকে নির্দেশ দেন। কিন্তু বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্র উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও অমান্য করে নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছে।’

আব্দুল কুদ্দুছ জানান, বনজ দ্রব্য নিলামে কিনেন মেসার্স শাহজাহান এন্টারপ্রাইজ। পরবর্তীতে শাহজাহান এন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে তিনি এসব কিনে নেন। তিনি একজন ক্ষুদ্র কাঠ ব্যবসায়ী। এ ব্যবসার মাধ্যমেই তার পরিবারের ভরণপোষণ চলে। কিন্তু বেতার ভবনের গাছ নিলামে নিয়ে কাঠ নিতে না পারায় তারা বিরাট লোকসানের মুখে পড়েছেন।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান।

আরসি-০৬