বিয়ানীবাজার ট্রাস্ট নিয়ে ‘অসত্য’ বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান

সিলেট মিরর ডেস্ক


জানুয়ারি ২০, ২০২১
০৭:২৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ২০, ২০২১
০৭:২৮ পূর্বাহ্ন



বিয়ানীবাজার ট্রাস্ট নিয়ে ‘অসত্য’ বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান
# প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন

বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকের বিরুদ্ধে দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ট্রাস্টের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই প্রতিবাদ জানান।

দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এনামুল হক চৌধুরী বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকে’র সাধারণ সদস্যমাত্র। তিনি বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকে’র বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, মনগড়া তথ্য দিয়ে একটি অসত্য বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। এসব বক্তব্য মানহানিকর, অসৌজন্যমূলক, শিষ্টাচারবহির্ভূত।’

লিখিত বক্তব্যে দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। ২০১১ সালে সংগঠনটি চ্যারেটি কমিশন ও কোম্পানি হাউসের রেজিস্ট্রেশন লাভ করে। এরপর ২০১১-১৩ এবং ২০১৩-১৫ সালে ট্রাস্টের পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরপর অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল না থাকায় মুহিব-দেলোয়ার-মামুন পরিষদ নির্বচিত হয়।

২০১৬ সালে ট্রাস্টের নির্বাচন আয়োজন করা হয়। ২০১৬-১৮ সালের নির্বাচনে দেলোয়ার-মাহবুব-দিলওয়ার পরিষদের একটি প্যানেল জমা পড়ে। গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, চ্যারিটি কমিশন ও কোম্পানী হাউসের সকল নিয়ম অনুস্মরণ করে এ কমিটি দায়িত্বভার গ্রহণ করে।

তিনি বলেন, ট্রাস্টের ফ্রিডম ফাইটার প্রজেক্ট সম্পর্কে জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতার মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দায়ের করে বৃটিশ চ্যারিটি কমিশনকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালায় একটি পক্ষ। ফ্রিডম ফাইটার প্রজেক্টের বিষয়টি আমরা চ্যারিটি কমিশনকে ব্যাখ্যা করি। এই প্রজেক্টের মাধ্যমে বিয়ানীবাজার উপজেলার দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে শীতের কম্বল, রিকশা ও হুইলচেয়ার বিতরণসহ বিভিন্ন সময়ে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। চ্যারিটি কমিশন আমাদের ব্যাখ্যায় আশ্বস্ত হয়।

তিনি বলেন, একের পর এক সলিসিটর নোটিশের মাধ্যমে বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের বর্তমান পরিচালনা পরিষদকে হয়রানি করে যাচ্ছেন অভিযোগকারীরা। বিভিন্ন সময় সলিসিটর ফার্মের মাধ্যমে যথাসময়ে তাদের নোটিশের সকল জবাব দেওয়া হয়েছে। তাদের এ অপতৎপরতার জন্য ট্রাস্টকে আইনগত বিষয়টি মোকাবেলা করতে বড়ধরণের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে।

এছাড়াও ট্রাস্টের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী আদালতে একটি স্বত্ব মামলা করেছেন। মামলায় ট্রাস্টের ৬ জন পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে। সেখানে তিনি ট্রাস্টের নামে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে পরবর্তী নির্বাচিত বৈধ কার্যনির্বাহী সংসদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত সকল কার্যক্রম বন্ধের অন্তর্বতী আদেশ ও নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আদালত ৬ পরিচালক ও ব্যাংক ম্যানেজারকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

২০১৮ সালেও ট্রাস্টের অপর সদস্য আব্দুল করিম নাজিম বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের নামে ন্যাশনাল ব্যাংকের একাউন্টটি ফ্রিজ করার চেষ্টা করেছিলেন। তখনও আমাদের সলিসিটর ফার্ম ন্যাশনাল ব্যাংক, বিয়ানীবাজার শাখার ম্যানেজারকে আইনগত ব্যাখ্যা দিয়ে একটি পত্র প্রদান করেন। কিন্তু, ব্যর্থ হন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এনাম চৌধুরী ট্রাস্টের দু’টি ফান্ড রাইজিং সম্পর্কে মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য প্রদান করেছেন। ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত আলমগীর হোসেনের জন্য ট্রাস্টের উদ্যোগে ৪ লাখ ২৩ হাজার ২৯২ টাকা আলমগীর চিকিৎসা তহবিলে প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া রোকনুজ্জামান খান এর চিকিৎসা বাবদ সকল প্রমাণপত্র রয়েছে। সুতরাং, এনাম চৌধুরী আনিত এসব তথ্য সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

তিনি বলেন, অসহায় ও গৃহহীন মানুষের মধ্যে গৃহ নির্মান করে দেওয়ার একটি প্রকল্প বিয়ানীবাজার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের আছে। ২০১৩-১৫ সালের কমিটির উদ্যোগে বিয়ানীবাজার উপজেলার গৃহ নির্মান প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১০টি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য ঠিকাদার হিসেবে এনাম চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান বৃটিশ বাংলা কনসোর্টিয়ামকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে এ ঠিকাদারী নেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু, তিনি সঠিকভাবে ও যথাসময়ে কাজ শেষ করতে পারেননি। পরে নতুন ঠিকাদার কাজগুলো সম্পন্ন করে। এজন্য ট্রাস্টকে কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। এ বিষয়ে লন্ডনে সালিশ বৈঠকে সব দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন এনাম চৌধুরী।

এছাড়া লন্ডনে বাংলাদেশিদের গর্ব ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেন্টার সম্পর্কে এনাম চৌধুরীরর আপত্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস ও বৈশ্বিক মহামারির কারণে ২০২০ সালের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন আয়োজন করা হবে।

আরসি-০৩