নিজস্ব প্রতিবেদক
জানুয়ারি ০৪, ২০২১
০৫:৪৫ অপরাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ০৪, ২০২১
০৫:৪৫ অপরাহ্ন
নগরের সৌন্দর্য বর্ধন ও যানজট নিরসনে কাজ করছে সিলেট সিটি করপোরেশন। সহযোগিতা করছে মহানগর পুলিশ। ইতোমধ্যে ট্রাফিক বিভাগের উদ্যোগে নগরের ব্যস্ততম ও গুরুত্বপূর্ণ ৫০টি মোড়ে সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। এসব সাইনবোর্ডে ‘রাস্তা ফুটপাতে বেচাকেনা নিষেধ’ ও ‘সকল প্রকার যানবাহন থামানো নিষেধ’ লেখা রয়েছে। কিন্তু যাদের উদ্দেশে এসব লেখা, তারা কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছেন না। নিয়মের ধার ধারছেন না। গতকাল রবিবার সিলেট নগরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকা। ভোরের আলো ফুটে উঠার আগেই আম্বরখানা স্ট্যান্ডে সিএনজিচালিত অটোরিকশা জড়ো হতে থাকে। আগেভাগে সিরিয়াল ধরার জন্যই চালকরা তাড়াতাড়ি এসেছেন। এখান থেকে সিলেটের বেশিরভাগ পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়া সহজ, তাই পর্যটকরাও এখানে ভিড় করেন। তাই দিনভর আম্বরখানা-বিমানবন্দর সড়কে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয় অটোরিকশা। স্ট্যান্ডের বিপরীত পাশেই সড়কে বসেন সবজি বিক্রেতারা। আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হকারদের ভাসমান দোকান।
শুধু আম্বরখানাই নয়। এই চিত্র নগরের প্রাণকেন্দ্র বন্দরবাজার এলাকারও। নগর ভবনের সামনে টানানো হয়েছে একই ধরনের সাইনবোর্ড। কিন্তু সেটাও গায়ে মাখছেন না কেউ। এসবের কারণে সেখানে সৃষ্টি হয় যানজটের। হারাচ্ছে নগরের সৌন্দর্যও।
নগর ভবন থেকে ডাক বিভাগের কার্যালয় পর্যন্ত দেখা যায় হকার ও অটোরিকশা চালকদের ঠেলাঠেলি। মাথার উপর খুঁটিতে ঝুলছে ‘হকারমুক্ত এলাকা’ লেখা সাইনবোর্ড। সেই লেখার নিচে বসেই সবজি বিক্রি করতে দেখা গেল একজনকে। সিটি করপোরেশনের ফটকের সামনের নিরাপত্তাকর্মীদের দিকেও তার দৃষ্টি ছিল। কারণ মাঝে মাঝে এসে নিরাপত্তাকর্মীরা ভ্রাম্যমাণ বিক্রিতাদের তাড়া দিচ্ছিলেন।
তবে নিরাপত্তাকর্মীদের মূল দৃষ্টি ছিল অটোরিকশা ও রিকশার দিকে। কারণ নগর ভবনের ফটকের সামনের জায়গা যানজটমুক্ত রাখাই তাদের উদ্দেশ্য। রিকশা ও অটোরিকশা চালকদের নগর ভবনের সামনে দাড়াতে দেননি তারা। কিন্তু করিমউল্লাহ মার্কেটের সামনে গিয়ে চালকদের রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী তুলতে দেখা যায়।
ফুটপাত দখল করে ব্যবসার বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী সিলেট মিররকে বলেন, ‘আমরা একদিক দিয়ে অভিযান করলে হকাররা অন্যদিকে বসে যায়। তাই অনেক সময় কিছু করার থাকছে না। সার্বক্ষণিক পাহারা দেওয়া তো সম্ভবও নয়।’ তবু ফুটপাত হকারমুক্তকরণ সম্পর্কে আশাবাদী বিধায়ক রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘একদিনে সবকিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। যে উদ্যোগ এখন শুরু হয়েছে, সেটা ধরে রাখতে হবে। একটা সময় নিশ্চয় পরিবর্তন হবে।’
নগরের আম্বরখানার মতো নগর চত্বরের (সিটি পয়েন্ট) পাশের অস্থায়ী স্ট্যান্ডেও সারিবদ্ধ অটোরিকশা রাখতে দেখা যায় অন্যদিনের মতোই। এসব যানবাহনের কারণে বন্দরবাজারে প্রতিদিন যানজট লাগে। পুলিশের নির্দেশের তোয়াক্কা না করেই চালকরা রাস্তার পাশে যানবাহন রাখেন।
ট্রাফিক বিভাগের আদেশ বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেক পয়েন্টেই দায়িত্ব পালন করেন মহানগর পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। টহল দিয়ে এসব দেখভাল করার দায়িত্ব তাদের। কোথাও কোনো হকার বসলে বা গাড়ি রাখলে তুলে দেওয়ার দায়িত্বও তাদের। কিন্তু গতকাল আম্বরখানা এলাকায় পুলিশ সদস্যদের এই ক্ষেত্রে কোনো অভিযান করতে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম ও নাগরিক সেবা) এবিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের সিলেট মিররকে তিনি বলেন, ‘এগুলোর দায়িত্বে পুলিশ সদস্যরা রয়েছেন। তাদের দায়িত্বে গাফিলতি থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা অচিরেই কার্যকর হবে। কারণ ফুটপাত মানুষের হাটাচলার জন্য। সড়ক যান চলাচলের জন্য। এসব নিশ্চিত করার বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের কড়া নির্দেশ দেওয়া আছে।’
আরসি-০৭