বড়লেখা প্রতিনিধি
জুন ০৪, ২০২০
১২:০২ অপরাহ্ন
আপডেট : জুন ০৪, ২০২০
১২:০২ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ট্রান্সফরমারসহ বিদ্যুতের একটি খুঁটি ভেঙে পড়ে একটি বসতঘর দুমড়েমুচড়ে গেছে। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন ওই বসতঘরের বাসিন্দারা।
বুধবার (৩ জুন) দুপুরের দিকে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের করমপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে পল্লী বিদ্যুত সমিতি বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয়ের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আশপাশের এলাকা ঝুঁকিমুক্ত করলেও খুঁটিটি ঘরের ওপর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় ও পল্লী বিদ্যুত কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে ঝড় আসে। এসময় উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের করমপুর গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের সিঙ্গেল ফেজের একটি লাইনের ওপর গাছ পড়ে। লাইনের ওপর গাছ পড়লে অদূরে লয়লা বেগমের বসতঘর ঘেঁষা ১০ কেভি ট্রান্সফরমারসহ খুঁটি ভেঙে ঘরের ওপর পড়ে। এতে বসতঘরটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এ সময় ঘরে থাকা বাসিন্দারা তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে আসেন। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পান বাসিন্দারা। তবে তাড়াহুড়ো করে বের হতে গিয়ে পরিবারের দুজন সদস্য আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে পল্লী বিদ্যুত সমিতি বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয়ের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আশপাশের এলাকা ঝুঁকিমুক্ত করে। তবে ভাঙা খুঁটিটি ঘরের ওপর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়নি। বুধবার রাত সাড়ে ১০ টায় এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত খুঁটিটি ঘরের ওপর ছিল। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া ওই ঘরের বাসিন্দারা পাশের ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।
বাড়ির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিদ্যুত লাইনের কাজ করার সময় বসত ঘরের লাগোয়া খুঁটি বসানো হয়। ওই খুঁটিতে ট্রান্সফরমারও লাগানো হয়। বাড়ির অদূরেও আরেকটি খুঁটি বসানো হয়। কিন্তু এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। আপত্তি জানালেও তখন লাইন টেনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছিল। এরপর ঝুঁকিপূর্ণ একটি খুঁটি সরানোর জন্য লিখতি আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ খুঁটিটি সরানো হয়নি। এরই মধ্যে একটি খুঁটি ভেঙে বসতঘরের ওপর পড়ে।
বসতঘরের বাসিন্দা লয়লা বেগম বলেন, ‘দুপুরে তুফান আইছে। কারেন্টের লাইনে গাছ পড়িয়া বড় খুঁটিত টান খাইছে। ইটাত ট্রান্সফরমার আছিল (ছিল)। আমার এক ছেলে বাইরে কামো আছিল (কাজে ছিল)। হে দেখছে লাইনে আগুন ধরিয়া ঘরোর উপর খুঁটি পড়ি যার। হে চিক (সে চিৎকার) দিছে। আমরা দৌড়াইয়া সব ঘর থাকি বারইছি। লাগা লাগ (পাশাপাশি) ঘরে আমরা ১৫ তাকি ২০ জন মানুুষ থাকি। আল্লায় বাঁচাইছইন। বিদ্যুতের মানুষ আইছইন। দেখিয়া লাইন কাটিছইন। খুঁটি রইছে। আমরা অন্য ঘরে উঠছি। গরিব মানুষ। ঘর বানানির ঠেকা (টাকা) নাই। সবতা ভাঙিয়া গেছে। কিলা ঘর বানাইতাম চিন্তাত আছি।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য বদরুল আহমদ বলেন, ‘অল্পের জন্য বড় ধরণের দূর্ঘটনা থেকে মানুষ রক্ষা পেয়েছেন। আমি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এখানে ঝুঁকিপূর্ণ একটি খুঁটি সরানোর জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা লিখিতভাবে আবেদন দিয়েছেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পল্লী বিদ্যুৎ অফিস। এর মধ্যে একটি খুঁটি ঝড়ে বসতঘরের উপর পড়ে ভেঙেছে। খুঁটিটি ঘরের লাগোয়া ছিল। গাফিলতি না করে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ
মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. এমাজ উদ্দিন সরদার বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় মুঠোফোনে বলেন, ‘ভেঙে পড়া খুঁটিতে ১০ কেভির ট্রান্সফরমার ছিল। খুঁটির অদূরের লাইনে গাছ পড়ে ওটাতে টান খেয়ে ভেঙে গেছে। আল্লাহ রক্ষা করেছেন। কেউ হতাহত হয়নি। লোকজন দেখে এসেছে। বৃহস্পতিবার খুঁটি সরানো হবে। খুঁটিটি ঘরের লাগোয়া ছিল। অনেক বছর আগে লাইন নির্মাণ হয়। তখন ডিজাইন অনুযায়ী হয়েছে। অন্য খুঁটি সরানোর লিখিত আবেদনের বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা সরেজমিনে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এজেএল/বিএ-০৬