রাতের আঁধারে ঢাকার পথে পোশাক শ্রমিকরা

সিলেট মিরর ডেস্ক


এপ্রিল ২৬, ২০২০
১০:১৭ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ২৬, ২০২০
১০:১৭ অপরাহ্ন



রাতের আঁধারে ঢাকার পথে পোশাক শ্রমিকরা
দিনভর পুলিশের বাধার পর রাতের আঁধারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার পথে গার্মেন্টস শ্রমিকরা রওনা হয়েছে। আজ রবিবার সকালে গার্মেন্টস কারখানায় কাজে যোগ না দিলে ‘চাকরি যাওয়ার’ হুমকি আছে বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন তৈরিপোশাক শ্রমিক। তাই গতকাল শনিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকেই ময়মনসিংহ থেকে শ্রমিকরা দলে দলে ঢাকায় যাওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশি বাধা মুখে পড়েন তারা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারি সিদ্ধান্তে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে সব ধরণের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরি যানবাহন ছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে আনুষ্ঠানিকভাবে চলাচল করছে পণ্যবাহী পরিবহন।
এ মাসের শুরুতে গার্মেন্টস খোলার খবরে ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শতাধিক কিলোমিটারের বেশি পায়ে হেঁটে চাকরি বাঁচাতে কর্মক্ষেত্রে এসেছিলেন দেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী কারখানার শ্রমিকরা। 
গতকাল শনিবার সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ময়মনসিংহ পাটগুদাম ব্রিজ মোড় এলাকায় দেখা যায় ঢাকামুখী গার্মেন্টস কর্মীদের। তবে দিনের বেলা তাদের বাড়ির দিকে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। তবে গার্মেন্টস শ্রমিকরা ফিরে না গিয়ে চর কালিবাড়ি এলাকায় রাস্তার পাশে অবস্থান করতে থাকেন অনেকেই। রাত ১১টার পর ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী গার্মেন্টস কর্মী মারুফা আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাদের ফোন করে বলা হয়েছে রবিবার সকাল ৭টার মধ্যে গার্মেন্টস খুলবে। সকাল ৭টার আগেই কাজে যোগদান করতে হবে। “আমরা যদি সঠিক সময়ে না যাই চাকরি চলে যাবে। তাই রাতেই বাচ্চা কোলে নিয়ে টঙ্গীর পথে রওনা দিচ্ছি।  “মুক্তাগাছা থেকে ভ্যানে করে বাইপাস মোড় পর্যন্ত এসেছি, সাথে ভাইও রয়েছে। এখন পিকাপভ্যানে করে টঙ্গীর পথে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কোনো গাড়ি নাই তাই ভাড়াও দ্বিগুণ দিতে হবে।” 
গাজিপুরের ন্যাচারাল ডেনিমস কর্মী সুমি আক্তার বলেন, “বিকালে আমাকে ফোন করে বলছে-আগামীকাল গার্মেন্টস খোলা। তাই, নেত্রকোণা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত আসছি অটো দিয়ে। এখানে এসে পড়েছি পুলিশের বাধায়। “তবে, যেভাবেই হোক সকাল ৭টার মধ্যে উপস্থিত থাকতে হবে। না হলে চাকরি থাকবে না।”
টঙ্গীর জাবেদ জোবেদ ডাইং ফ্যাক্টরির কর্মী রুহুল আমিন বলেন, “গার্মেন্টস থেকে ফোন করে বলছে আগামীকাল থেকে গার্মেন্টস খুলবে। এ খবর পেয়ে ইফতারের পর মেয়েকে নিয়ে গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী গ্রাম থেকে রওনা দিয়েছি অটোতে করে। 
বাইপাস মোড়ের বাসিন্দা রুবেল হোসেন ও নাইমুর রহমান জানান, শত শত শ্রমিক দিনের বেলায় ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। অনেকেই পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। দুইদিন পরপর শ্রমিকদের নিয়ে এমন তামাশায় তিনি হতাশ। 
গাজীপুরের ডিজাইন টেক্স গার্মেন্টসের কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স ম্যানেজার হারুনুর রশীদ জানান, তাদের কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গার্মেন্টস খোলার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ কারণে তাদের কারখানার জ্যাকেট শাখার শ্রমিকদের কাজে যোগদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম বলেন, “আমাদের কাছে গার্মেন্টস খোলার কোনো নির্দেশনা নেই। এ কারণে শ্রমিকদের যেতে আমরা বাধা দিচ্ছি।”  

এনপি-০৫