সিলেট মিরর ডেস্ক
এপ্রিল ১৪, ২০২০
০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ১৪, ২০২০
০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
মহামারী হয়ে ওঠা নভেল করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এ বিশ্বজুড়ে প্রায় এক লাখ ১৫ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে ২২ হাজারেরও বেশি লোকের। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গতকাল রবিবার (১২ এপ্রিল) বিকেল পর্যন্ত হালনাগাদ করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ লাখ ৬০ হাজার ১১ জন, যার মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৫৭ হাজার ৫৯০ জন।
যুক্তরাষ্ট্রের শুধু নিউ ইয়র্ক শহরে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ চার হাজার। দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২২ হাজার ১০৯। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ঘরবন্দি ও লকডাউনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ আরও আগে নেয়া গেলে অনেক জীবন বাঁচানো যেতো বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির শীর্ষ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউচি। নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক নিবন্ধ অনুযায়ী, ফাউচি ও অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ফেব্রুয়ারিতেই যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা জারি করার আহ্বান জানিয়েছিলেন, কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তা প্রত্যাখ্যান করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। এখানে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা এখনও অনেক বেশি হলেও মৃত্যুর সর্বোচ্চ শিখর শিগগিরই পার হবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো। তিন সপ্তাহের মধ্যে ইতালিতে রবিবার সবচেয়ে কম মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় স্পেনেও দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিতীয়বারের মতো সবচেয়ে কম হয়েছে। এতে ইউরোপে আশার একটি ঝলক দেখা গেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইতালিতে নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িযেছে এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৬৩ জনে আর মৃত্যুর সংখ্যা ২০ হাজার ছুঁই ছুঁই করছে (১৯৮৯৯ জন) । যুক্তরাষ্ট্রের পর ইতালিতেই মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে স্পেন। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৬ জন। ১৭ হাজার ৪৮৯ মৃত্যু নিয়ে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে আছে দেশটি।
নতুন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমতে থাকায় দেশটি নির্মাণ খাত, কারখানা ইত্যাদির মতো বাসা থেকে যেসব কাজ করা যায় না, সেই খাতগুলোর কর্মীদের কঠোর সুরক্ষা বিধি মেনে কাজে ফেরার অনুমতি দিয়েছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় বিশ্বে চতুর্থ অবস্থান আছে ফ্রান্স। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৩৩ হাজার ৬৭২ ও মৃত্যুর সংখ্যা ১৪ হাজার ৪১২। আজ সোমবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে। ভাষণে তিনি ফ্রান্সজুড়ে লকডাউনের মেয়াদ ১০ মে পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যায় বিশ্বে পঞ্চম অবস্থানে থাকলেও অন্যান্য শীর্ষ আক্রান্ত দেশগুলোর তুলনায় জার্মানিতে মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটা কম থাকার পর সম্প্রতি মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে তিন হাজারের কোঠা অতিক্রম করেছে। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ২৭ হাজার ৮৫৪ জন এবং মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ২২ জন। দেশটির আক্রান্তদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি এরইমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে প্রকাশিত সরকারি তথ্যে দেখা গেছে। ৮৫ হাজার ২১২ জন আক্রান্ত নিয়ে এ সংখ্যায় বিশ্বের ষষ্ঠ স্থানে থাকা যুক্তরাজ্য মৃতের সংখ্যায় পঞ্চম স্থানে আছে। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ৬২৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
দেশটির করোনাভাইরাস আক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক সপ্তাহ হাসপাতালে থাকার পর সুস্থ হয়ে উঠতে থাকায় রোববার ছুটি পেয়েছেন। হাসপাতালে থাকাকালে টানা তিন রাত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন তিনি। মহামারী সৃষ্টি করা নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যে চীন থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় সেই চীন এখন আছে সপ্তম স্থানে। নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার ক্ষেত্রে দেশটির উদাহরণ এখন অনেক দেশের জন্যই অনুসরণযোগ্য মডেল হয়ে উঠেছে। দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজার ২১৩ ও মৃত্যুর সংখ্যা তিন হাজার ৩৪৫।
দেশটি স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ ছড়ানোর ঘটনা সফলভাবে হ্রাস করতে পারলেও বিদেশ ফেরত আক্রান্তদের নিয়ে নতুন সমস্যায় পড়েছে। রোববার দেশটিতে নতুন করে ১০৮ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে এটিই নতুন আক্রান্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা আর এদের প্রায় সবাই বিদেশ ফেরত।
এনপি-০৫/বিএ-১২