বাসায় নামাজ পড়ার আহ্বান জানিয়ে সিলেটে মাইকিং

সিলেট মিরর ডেস্ক


এপ্রিল ০৭, ২০২০
০৪:৩২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ০৭, ২০২০
০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন



বাসায় নামাজ পড়ার আহ্বান জানিয়ে সিলেটে মাইকিং

মসজিদে না এসে মুসল্লিদের বাসায় নামাজ পড়ার অনুরোধ জানিয়ে সিলেটের মসজিদে মসজিদে মাইকিং করা হয়েছে। আজ সোমবার (৬ এপ্রিল) আসরের নামাজের পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে ধর্ম মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাস ছড়ানো ঠেকাতে এখন থেকে মুসল্লিদের ঘরে নামাজ পড়ার নির্দেশ দেয়। 

আসরের নামাজের পর নগরের নয়াসড়ক, কুমাড়পাড়া, চারাদিঘিরপাড় জামে মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে এমন ঘোষণা দিতে শোনা যায়। আজ সোমবার আছরের নামাজের পর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সবাইকে ঘরে নামাজ পড়ার আহ্বান জানানো হয়। তবে মসজিদে যথানিয়মে আযান হবে বলেও জানানো হয়।

এসময় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরিষ্কার-পরিছন্ন থাকার পাশাপাশি সরকারি সকল নির্দেশনা মেনে চলারও আহ্বান জানানো হয়। 

উল্লেখ্য, আজ সোমবার ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুধু মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমরা মসজিদে নামাজ আদায় করবেন। বাইরের মুসল্লিরা কেউ মসজিদে জামাতে অংশ নিতে পারবেন না। কেউ এই নির্দেশ অমান্য করে মসজিদে ভিড় করলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নেবে বলেও জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজনে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমরা মিলে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ অনধিক পাঁচজন এবং জুমার জামাতে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন।  বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ সময় সারা দেশে কোথাও ওয়াজ মাহফিল, তাফসির মাহফিল, তাবলিগ তালিম বা মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা যাবে না। সবাই ব্যক্তিগতভাবে তিলাওয়াত, জিকির, ও দোয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহর রহমত ও বিপদ মুক্তির প্রার্থনা করবেন। অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও এ সময় কোনো ধর্মীয় বা সামাজিক আচার–অনুষ্ঠানের জন্য সমবেত হতে পারবেন না।

সব ধর্মের মূলনীতির আলোকে এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা কমিটিকে অনুরোধ করা হলো। কোনো প্রতিষ্ঠানে এই নির্দেশ লঙ্ঘিত হলে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় বলেছে, করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত করা না গেলে ব্যাপক সংক্রমণ এবং বিপুল প্রাণহানির আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ধর্ম মন্ত্রণালয় বলেছে, বিভিন্ন দেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও এ ধরনের বিস্তার ও প্রাণহানির ঘটনার উদাহরণ আছে। পবিত্র মক্কা, মদিনাসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের মসজিদে মুসল্লিদের আগমন সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সর্বসাধারণের আগমন বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। গত ২৯ মার্চ ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং শীর্ষস্থানীয় আলেমরা মসজিদে মুসল্লি কম রাখার আহ্বান জানিয়েছিল। পরিস্থিতি এখন দ্রুত ভয়ংকর অবনতির দিকে যাচ্ছে।

এনএইচ-০৩/বিএ-১২