সীসা দূষণে শিশুদের শারীরিক সমস্যাসহ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ২৩, ২০২৩
০১:৩৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ২৩, ২০২৩
০১:৩৬ পূর্বাহ্ন



সীসা দূষণে শিশুদের শারীরিক সমস্যাসহ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে
সিলেটে সীসা দূষণ সম্পর্কে অবহিতকরণ কর্মশালা


‘সীসা দূষণ বন্ধ হলে, বাড়বে শিশু বুদ্ধি বলে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সীসা দূষণ সম্পর্কে সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে বর্তমান সীসা দূষণের পরিস্থিতি সিলেটের সাংবাদিকদের অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত। বুধবার নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে ইউনিসেফ সিলেট ফিল্ড অফিসের সহযোগিতায় সিলেট জেলা সিভিল সার্জন অফিস এ কর্মশালার আয়োজন করে।

সিলেট জেলার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ইউনিসেফের সিলেট অফিসের চীফ কাজী দিল আফরোজা ইসলাম। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত, ইউনিসেফ সিলেট ফিল্ড অফিসের স্বাস্থ্য অফিসার ডা. মির্জা ফজলে এলাহী, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ রেনু। সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. স্বপ্নীল সৌরভ রায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ডা. স্নিগ্ধা তালুকদার ও ডা. তনুশ্রী তালুকদার।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বে প্রতি তিন জন শিশুর একজন সীসা দূষণের শিকার। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই হার ৬০ শতাংশ এবং প্রায় তিন কোটি ষাট লক্ষ শিশুর রক্তে সীসার মাত্রা মাইক্রোগ্রাম পার ডেসিলিটার এর বেশি। আক্রান্তেদর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। ইউনিসেফ এর সহায়তায় আইসিডিডিআরবির মাধ্যমে ২০২২ সালে সিলেটের ২৪৮ জন সহ টাঙ্গাইল, খুলনা ও পটুয়াখালীর সর্বমোট ৯৮০ জন বাচ্চার রক্তে সীসার মাত্রা পরিমাপ করা হয়। 

কর্মশালায় বলা হয়, শিশুরা সবচেয়ে বেশি সীসা দূষণের ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয় যা অনেক ক্ষেত্রেই আর নিরাময় করা সম্ভব নয়। সীসা দূষণের ফলে শিশুদের নানান শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি আইকিউ কমে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এতে মনোযোগের ঘাটতি তৈরি হয়ে শিশুরা লেখাপড়ায় দুর্বল হয় যা ভবিষ্যতে তাদের অনেক আগ্রাসী করে তোলে ও পরিপূর্ণ বিকাশের সক্ষমতাকে ব্যাহত করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় বাংলাদেশে বুদ্ধি ভিত্তিক পঙ্গুত্বের পেছনে ৭০ ভাগ সীসা দূষণ দায়ী। সীসার মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি গর্ভবতী মহিলার পাশাপাশি তার গর্ভের ভ্রæণকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে বাচ্চার ওজন কম হওয়া, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়া, এমন কি মৃত্যুও হতে পারে। তাছাড়া সীসা দূষণের ফলে বড়দের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, কিডনি, হার ও মাংসপেশীর ব্যথা, প্রজনন সমস্যার পাশাপাশি নানান শারীরিক ও মানসিক সমস্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। দৈনিক ব্যবহার্য অনেক জিনিসপত্র যেমন- সাজসজ্জার রং, মসলা (হলুদ, মরিচে রঞ্জক পদার্থের মিশ্রণ), অ্যালুমিনিয়াম ও সিরামিকের থালা-বাসন, খাবারের পাত্র, বাচ্চাদের খেলনা, আয়ুর্বেদিক ঔষধ, সুরমা, সিঁদুর, প্রসাধনী, ই-বর্জ্য, পানির পাইপ ও ফিটিংস ইত্যাদিতে সীসার মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি রয়েছে। এছাড়া সীসা যুক্ত এ্যাসিড ব্যাটারির অনিরাপদ ও অপরিকল্পিত পুনঃচক্রায়ন কারখানার মাধ্যমেও সীসা ব্যাপকহারে আমাদের পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ছে।

এএন/০৩/২২১১২৩