সিলেট মিরর ডেস্ক
অক্টোবর ২৪, ২০২৩
১১:৩১ অপরাহ্ন
আপডেট : অক্টোবর ২৪, ২০২৩
১১:৪২ অপরাহ্ন
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এর আগে মণ্ডপগুলোতে চলে সিঁদুর খেলা আর আনন্দ-উৎসব। হিন্দু সধবা নারীরা প্রতিমায় সিঁদুর পরিয়ে দেন, নিজেরা একে অন্যকে সিঁদুর পরিয়ে দেন। চলে মিষ্টিমুখ, ছবি তোলা আর ঢাকের তালে তালে নাচ-গান।
আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল থেকে সিলেটে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।
নগরের চাঁদনীঘাটে উদ্বোধন করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও নবনির্বাচিত মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
দুপুর থেকেই পূজামণ্ডপগুলো এক এক করে প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রায় শুরু হয়। শঙ্খ আর উলুধ্বনি, খোল-করতাল-ঢাকঢোলের সনাতনী বাজনার সঙ্গে দেবী-বন্দনার গানের মধ্য দিয়ে হাজারো মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন। বিভিন্ন সড়ক ঘুরে চাঁদনীঘাটে তীরে গিয়ে শোভাযাত্রা শেষ হয়। বিকেল পাঁচটার দিকে সুরমা নদীর তীরে চাঁদনীঘাটে প্রতিমা বিসর্জন করেন।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রথা অনুযায়ী, প্রতিমা বিসর্জনের পর সেখান থেকে জল এনে (শান্তিজল) মঙ্গলঘটে নিয়ে তা আবার হৃদয়ে ধারণ করা হয়। আগামী বছর আবার এ শান্তিজল হৃদয় থেকে ঘটে, ঘট থেকে প্রতিমায় রেখে পূজা করা হবে। রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ধ্যা আরতির পর মিশনের পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এরপর ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করেন ও মিষ্টিমুখ করেন।
সরেজমিনে নগরের বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, পূজামণ্ডপে বিবাহিত নারীদের সিঁদুর খেলা। দেবীর চরণ থেকে সিঁদুর নিয়ে তারা একে অপরের মাথায় দেন। কেউ কেউ শেষবারের মতো দেবী দুর্গার সিঁথিতে লাগিয়ে দেন সিঁদুর। সারা দেশেই মায়ের প্রতিমা বিসর্জনের শেষ মুহূর্তের আরতি হিসেবে এই সিঁদুর খেলা হয়। স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন নারীরা মা দুর্গার সিঁথিতে দেওয়া সিঁদুর নিজের সিঁথিতে লাগিয়ে আশীর্বাদ নেন। সিঁদুর, পান ও মিষ্টি নিয়ে দুর্গা মাকে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর একে অপরকে সিঁদুর লাগিয়ে দেন তারা। সিঁদুর খেলার পর শেষবারের মতো দেবীর আরাধনা করেন।
হিন্দু পূরাণমতে, দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো বসন্তকাল। কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবিকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া সত্ত্বেও শরতকালে দুর্গাপূজা প্রচলিত হয়ে যায়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দিনপঞ্জিকা অনুসারে এ বছর দুর্গাদেবী স্বামীর ঘর স্বর্গ ছেড়ে মর্ত্যে পিতৃগৃহে পদার্পণ করছেন ঘোটকে চড়ে। দুর্গাদেবী ভক্তদের কাঁদিয়ে ঘোটকে চড়ে মর্ত্যলোক ছেড়ে চলে গেলেন কৈলাসে।
কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
এবার সিলেট জেলার ৬১৭টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তার মধ্যে সার্বজনীন ৫৬৯টি, পারিবারিক ৪৮টি পূজোর আয়োজন হবে। মহানগরীতে ১৫১টি পূজার মধ্যে সার্বজনীন ১৩৪টি ও পারিবারিক ১৭টি। জেলায় ৪৬৬টি পূজার মধ্যে সার্বজনীন ৪৩৫টি ও পারিবারিক ৩১টি।
এএফ/০৬