যথাসময়ে প্রকল্প শেষ না হলে, দায়িত্বশীলকে শাস্তি দিতে বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক


অক্টোবর ০৭, ২০২৩
০২:১৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ০৭, ২০২৩
০২:২২ পূর্বাহ্ন



যথাসময়ে প্রকল্প শেষ না হলে, দায়িত্বশীলকে শাস্তি দিতে বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী


সিলেট-ঢাকা ছয় লেন মহাসড়ক প্রকল্পসহ সিলেটের প্রকল্পগুলোর কথা বলতে গিয়ে হতাশা ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘সিলেটের প্রজেক্ট প্রায়গুলোতে খুব ধীর গতি। প্রত্যেকটি- আমার ছয় লেন (ঢাকা-সিলেট) সড়কের কথা ধরুন, মুন্সিগঞ্জ-ময়মনসিংহ-মানিকগঞ্জ ওই এলাকায় শুরু হয়ে গেছে। আমাদের দিকে শুরু হয়নি। এইটা একটা সমস্যা।’ তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ টেনে এসময় ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘সেখানে যথাসময়ে কাজ শেষ না হলে এবং সেজন্য বিশেষ কারণ দেখাতে না পারলে জেল দেওয়া হয়, টার্মিনেট (অপসারণ) করা হয়। আমাদের দেশেও এমন ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’ 

আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সিলেটের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে একাদশ বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সংলাপের দ্বিতীয়দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক নতুন টার্মিনাল নির্মাণ, রানওয়ে সম্প্রসারণ ও কার্গো স্টেশন স্থাপনের মেগা প্রকল্পের কাজে সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কাজ সম্পন্ন হয়নি। এ প্রসঙ্গে নিজের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সিলেটের বিমানবন্দরটি স্টিল আন্ডার কন্সট্রাকশন। এটা ইতোমধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর নির্মাণ কাজে খুব ধীর গতি। ভেরি স্লো।’ এসময় তিনি সিলেটের সব প্রকল্পে ধীর গতি মন্তব্য করে বলেন, ‘সিলেটের প্রজেক্ট প্রায়গুলো খুব ধীরগতির। আপনারা (সাংবাদিক) বরং তদবির করেন যাতে তাড়াতাড়ি হয়।’ তিনি ঢাকা সিলেট ছয় লেন মহাসড়কের কাজের ধীর গতির উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আমার ছয় লেনের (ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক) কাজ, মুন্সিগঞ্জ-ময়মনসিংহ-মানিকগঞ্জ ওই এলাকায় শুরু হয়ে গেছে অথচ আমাদের দিকে শুরু হয়নি। এইটা একটা সমস্যা।’

প্রকল্পের এই ধীর গতির কারণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো প্রজেক্ট সহজে শেষ হয় না, দেশিও হলে। বিদেশি হলে, এই দেখেন জাপানিরা সময়ের আগে শেষ করে দেয়। আমাদের স্বদেশি ইঞ্জিনিয়াররা যখন থাকেন আমি জানি না কি কারণে তারা দেরি করেন।’ কারণ না জানার বিষয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ বলেন, দেরি করলে পয়সার পরিমাণ বাড়ে, সবাই উপকৃত হয়।’

প্রকল্পের ধীরগতি রোধে নিজের প্রস্তাব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি একটা প্রস্তাব দিয়েছি, সংসদেও বলেছি, সেই প্রস্তাবে বলেছি, দক্ষিণ কোরিয়াতেও একসময় প্রকল্প শেষ হতে দেরি হতো। সে দেশের প্রেসিডেন্ট একটি আইন করলেন, প্রজেক্ট ডিরেক্টর যিনি হবেন সেই প্রজেক্ট যদি যথা সময়ে শেষ না হয় এবং  উনি (প্রকল্প পরিচালক) যদি এর বিশেষ কোনো কারণ না দেখাতে পারেন তাহলে তাকে জেলও দেওয়া হয়, টার্মিনেটও (অপসারণ) করা হয়-এরকম কঠিন শাস্তি।’ এমন আইনের পর কোরিয়ায় উত্তোরণ ঘটেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরপর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় আর কোনো প্রজেক্ট ডিলে হয় না। আমাদের দেশেও এরকম ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। প্রজেক্টের দায়িত্বে যিনি থাকবেন তাকে ফায়ার বা শাস্তি দিতে হবে।

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সংলাপের দ্বিতীয়দিনের অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতের সাবেক এমপি স্বপন দাস গুপ্ত, ভারত ফাউন্ডেশনের সদস্য সুরাইয়া দভাল, ভারতের রাজ্য সভার সদস্য রাজ কুমার রঞ্জন শিং প্রমুখ। এসময় দুই দেশের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ-ভারতের কালচারার ও পলিটিক্যাল সম্পর্কের পাশাপাশি সব ক্ষেত্রে ঐক্যের তাগিদ দেন।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক সুদূঢ় করতে এবং উভয় দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ব্যবসা উন্নয়নের স্বার্থে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই সংলাপ শুরু হয়েছে।

সংলাপে বাংলাদেশের পক্ষে ৬ জন মন্ত্রী, ২০ জন সংসদ সদস্যসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নিয়েছেন। সংলাপ উপলক্ষে ভারত থেকে ১৪০ জনের প্রতিনিধি দল সিলেটে এসেছেন।


এএফ/০৬