পরীক্ষা শেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেলে ডেঙ্গুর টিকা ব্যবহার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সিলেট মিরর ডেস্ক


সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
০৭:৩৪ অপরাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ০১, ২০২৩
১২:১৩ পূর্বাহ্ন



পরীক্ষা শেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেলে ডেঙ্গুর টিকা ব্যবহার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ডেঙ্গু প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউভিএম) লার্নার কলেজ অব মেডিসিনের গবেষকেরা একটি টিকার সফল পরীক্ষা করেছেন। দুটি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি টিভি-০০৫ নামের টিকাটির দ্বিতীয় দফার ট্রায়াল সফলতার সঙ্গে শেষ করার কথা জানিয়েছে। 

ওই টিকা এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। প্রতিষ্ঠানটির বরাত দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই টিকা বেশ কার্যকর। তবে এটি নিয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়া হবে এবং আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন দিলে তা দেশে ব্যবহার করা যাবে।

আজ শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চান্দইর গ্রামে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

টিভি-০০৫টিকাটি উদ্ভাবন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (এনআইএইচ)।

এই মুহূর্তে পৃথিবীর কোনো দেশেই ডেঙ্গুর প্রতিষেধক হিসেবে কার্যকর টিকা তৈরি হয়নি উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকা নিয়ে বিশ্বব্যাপী গবেষণা চলছে। ইতিমধ্যে দুটি টিকা তৈরিও হয়েছে। কিন্তু সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে না। কারণ, টিকাগুলোয় কিছু সমস্যা রয়েছে। চার ধরনের ডেঙ্গু আছে। টিকা নিলে দেখা যায়, কিছু ভাইরাস দমন হচ্ছে; কিন্তু সব ভাইরাস দমন হয় না। আর যাঁরা একবার ডেঙ্গুর টিকা নিয়েছেন, তাঁদের অন্য ভাইরাসে আক্রমণ করলে অবস্থা বেশি গুরুতর হয়ে যায়। এ কারণে এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গুর টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে না।

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ঢাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকলেও ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এখন প্রায় নয় হাজার রোগী চিকিৎসাধীন। ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় স্যালাইনের কোনো ঘাটতি নেই। মন্ত্রণালয় থেকে সাত লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে তিন লাখ ব্যাগ স্যালাইন চলে এসেছে। বাকি চার লাখ ব্যাগ স্যালাইনও দ্রুত চলে আসবে। প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ হাজার ব্যাগ স্যালাইন আসছে এবং তা হাসপাতালগুলোয় দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বেসরকারি ওষুধ উৎপাদন কোম্পানিগুলো স্যালাইনের উৎপাদন এখন অনেক গুণ বাড়িয়েছে। এসব ওষুধ কোম্পানি মাসে প্রায় ৫৩ লাখ ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদন করতে পারে। বর্তমানে মাসে ডেঙ্গুর জন্য প্রয়োজন হলো ২০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন। ডেঙ্গু আক্রান্তের হার আরও বেড়ে গেলে স্যালাইনের প্রয়োজন হবে ৩০ লাখ ব্যাগ।

জনসাধারণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিনই ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে হবে। অনেক সময় দেরি করে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ কারণে রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলাও কঠিন হয়ে যায়। অনেক সময় রোগী মারাও যান। এ জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা ও চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।

জাহিদ মালিক বলেন, গত ১০ বছরে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। দেশের বড় বড় প্রকল্পই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করেছে। করোনাকালে সরকার দেশের মানুষকে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে। বিভিন্ন দুর্যোগের সময় জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দেশে খাদ্যের কোনো অভাব নেই।

আরসি-০৩