‘পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর দেশকে দূষণের মাধ্যমে আমরা কুৎসিত দেশে পরিণত করছি’

সিলেট মিরর ডেস্ক


সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩
০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৩
০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন



‘পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর দেশকে দূষণের মাধ্যমে আমরা কুৎসিত দেশে পরিণত করছি’
-বিশ্ব পর্যটন দিবসে সিলেটে প্রকৃতি বিষয়ক আলোচনা সভায় সুলতানা কামাল


বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে হাওর-টিলা বন রক্ষা করে পর্যটন নিয়ে প্রকৃতি বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

আজ বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল চারটায় নগরের মিরাবাজারস্থ হোটেল মিরা গার্ডেনের কনফারেন্স রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সিলেট শাখা ও পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট সিলেটের যৌথ উদ্যোগে হাওর-টিলা বন রক্ষা করে পর্যটন নিয়ে প্রকৃতি বিষয়ক এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।সিলেটের লাঠিটিলা বনসহ সকল বন-টিলা ও হাওর রক্ষায় নাগরিক ভাবনা জানতে এই আয়োজন করা হয়েছে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, মানবাধিকার ও পরিবেশ আন্দোলনের নেত্রী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, ‘যারা উন্নয়নের নীতি নির্ধারণ করেন, তারা কি ভেবে এই নীতি প্রণয়ন করছেন তা গুরুত্বপূর্ণ। যদি তারা মানুষের উন্নয়নের চিন্তা করতেন তাহলে তারা অবশ্যই পরিবেশ সংরক্ষণ করে এ সকল প্রকল্প প্রণয়ন করতেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর অন্যতম একটি সুন্দর দেশকে পরিবেশ দূষণের মাধ্যমে আমরা অন্যতম একটি কুৎসিত দেশে পরিণত করছি।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্টের ট্রাষ্টি স্থপতি জেরিনা হোসেন। এসময় তিনি বলেন, ‘স্থানীয় মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে পর্যটন শিল্পকে বিকাশ করলে তা অবশ্যই প্রকৃতি রক্ষা করেই করতে  হবে। আমরা কি দেশের একটি গ্রাম বা একটি পাড়াকে পরিচ্ছন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করতে পারি না?’

ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’র সমন্বয়ক এবং সভার মূখ্যবক্তা শরীফ জামিল বলেন, ‘সিলেটের সাতছড়ি থেকে জাফলং পর্যন্ত সকল সংরক্ষিত বন এবং হাওরগুলোতে অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন বিকাশের ফলে স্থানীয় বাস্তুসংস্থান আজ ধ্বংশের সম্মুখীন। তিনি লাঠিটিলা সাফারি পার্ক প্রকল্প  এবং রাতারগুলে কালভার্ট ও ওয়াচটাওয়ার নির্মাণের উদাহরণ দিয়ে বলেন, উন্নয়নের নামে যে সমস্ত প্রকল্প গ্রহণ করা হয় সে সমস্ত প্রকল্পে দূর্নীতি এবং গোষ্ঠীস্বার্থ প্রাধান্য পায়।’

সভায় উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইতোপূর্বে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লাঠিটিলা রক্ষা আন্দোলন গঠনে উদ্যোগ নেওয়া হবে। যে সকল প্রকল্প প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে তা কখনও উন্নয়ন প্রকল্প হতে পারে না।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেন, ‘দেশের সব পর্যটন কেন্দ্রই পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা। যা হতে উত্তরণে আমাদের এখনই কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।’

বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম-এর সঞ্চালনায় বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় হাওর বিষয়ে বক্তব্য রাখেন গণমাধ্যমকর্মী উজ্জল মেহেদী এবং নগর পর্যটন নিয়ে আলোচনা করেন স্থপতি রাজন দাস।

সভায় নাগরিক ভাবনা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, বাপা সিলেটের সভাপতি জামিল আহমদ চৌধুরী ও সহসভাপতি অধ্যাপক  নাজিয়া চৌধুরী, উদীচী সিলেটের সভাপতি এনায়েত হোসেন মানিক, বাসদ মার্ক্সবাদী নেতা  উজ্জ্বল রায়, দৈনিক পূণ্যভূমি সম্পাদক আবু তালেব মুরাদ, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা  মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির  আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গাজী সাইফুল হাসান, সংস্কৃতি কর্মী সুজিত শ্যাম জন, প্রাণী অধিকার বিষয়ক সংগঠন প্রাধিকার সভাপতি মেহেদী হাসান, গ্রীন এক্সপ্লোর সোসাইটির উইং প্রধান শাফিন মুজনাবিন খান, শিশু কিশোর সংগঠন ঊষার সভাপতি নিঘাত সাদিয়া।


এএফ/১৫