সিলেট মিরর ডেস্ক
আগস্ট ২২, ২০২৩
০১:২৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ২২, ২০২৩
০১:২৭ পূর্বাহ্ন
অটিজমসহ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর অভিভাবকদের সংগঠন সঞ্জিবনী ফাউন্ডেশন’র লোগো উন্মোচন হয়েছে। দেশের প্রথম ব্যতিক্রমী এই ফাউন্ডেশনের লোগো উন্মোচন করেছেন বিশ্বখ্যাত অটিজম স্পেশালিস্ট ইংল্যান্ডের শাহমিকা আগুন। লোগো উন্মোচনের সময় তিনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর সকল অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সিলেটের ব্যতিক্রমী উদ্যোগে আমি সত্যিই অভিভ‚ত ও আনন্দিত। সচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে খোদ অভিভাবকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এভাবে এগিয়ে আসা অনেকটা বিরল। আর সন্তানের জন্য সর্ব্বোচ্চ ত্যাগ মা-বাবার পক্ষেই সম্ভব। আর ত্যাগের বিপরীতে অর্জনও আছে। হয়ত সেই অর্জন দৃশ্যমান হতে একটু সময় লাগে, ধৈর্য্য ধরতে হয়। সন্তানের জন্য অভিভাবকদের কাছে একটু কষ্ট, একটু ধৈর্য্য কামনা করেন তিনি। তিনি বলেন, সমাজে-দেশে-বিদেশেও এমন উদ্যোগ ব্যতিক্রম। সকল গার্ডিয়ানের মধ্যে যোগসূত্র তৈরী বিশেষ চাহিদার সন্তানদেরই মঙ্গল। সকল অভিভাবকদের সম্মিলিত উদ্যোগে সঞ্জিবনী আরো অনেকদূর এগুবে নিশ্চিত। একটা নেটওয়ার্ক থাকলে পরস্পরের পরামর্শে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য অতি জরুরি অনেক দূর্লভ উপকরণ, যথাযথ পরামর্শ, প্রশিক্ষণের পথ অভিভাবকরাই খুঁজে বের করতে পারবেন। তিনি বলেন, জোটবদ্ধ হয়েছেন বলেই আজকের এই আয়োজনও সম্ভব হয়েছে। সঞ্জিবনী ফাউন্ডেশনের সফলতা কামনা করে বলেন, আমি সব সময় আপনাদের সাথে আছি।
![]()
রবিবার (২০ আগস্ট) সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার নেহার মাকেটস্থ ফাউন্ডেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে সঞ্জিবনী ফাউন্ডেশন’র লোগো উন্মোচন করা হয়। লোগো উন্মোচনের পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ও অভিভাবকদের করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেন অটিজম বিশেষজ্ঞ শাহমিকা। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর অভিভাবকদের সংগঠন সঞ্জিবনী ফাউন্ডেশনের আহবানে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এই প্রথম সিলেট আসেন তিনি। সকালের ফ্লাইটে আসা বিশেষজ্ঞ শাহমিকা বিকালের সন্ধ্যার ফ্লাইটেই সিলেট ত্যাগ করেন।
লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সিটি কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সহ সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সেলিম, সাংবাদিক শাহ দিদার আলম চৌধুরী নবেল, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্ণালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার আজমল খান, ডিভিসির ক্যামেরাপার্সন মোজাম্মেল হোসেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের অভিভাবকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগ্রাম সিংহ, মারুফ চৌধুরী, আবু মনসুর, শওকত হোসেন, গীতা রাণী শর্ম্মা, জাকারিয়া হোসেন, আশুতোষ সিংহ, সায়মা সুলতানা, মো. কুতুবুজ্জামান, সুদীপ্ত পাল, রেহানা বেগম, প্রতাপ বৈদ্য, মারুফ চৌধুরী, কেয়া আক্তার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সমস্যা বিশেষ চাহিদার শিশুদের নিয়ে নয়, অনেকখানে তাদের প্রধান সহায়ক, অভিভাবকদের নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। তারা অনেকেই শিশুর সমস্যা আড়াল করা, তাবিজ, কবচ, ঝাড়-ফুক, ওঝা, হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন। এতে শিশুর ভবিষ্যত ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে, এটা দু:খজনক। সচেতনতার অভাবেই এসব হচ্ছে। তাই সচেতনতা সৃষ্টিই এখন জরুরি। অথচ বিশেষ চাহিদাসম্পন শিশুদের যথাযথ পরামর্শ দেয়া, প্রয়োজনীয় সেবা দেয়ার একাধিক প্রতিষ্ঠান এই নগরীতেই গড়ে উঠেছে।
বক্তারা, বিশেষ চাহিদার শিশুদের যথাযথ সেবা নিশ্চিত করণ, প্রশিক্ষণের জন্য আবাসন সুবিধাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য সরকারী, বেসরকারী উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান।
সঞ্জিবনী ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তারা বলেন, সঞ্জিবনী ফাউন্ডেশন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর অভিভাবকদের এক গার্ডিয়ান নেটওয়াক। এই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্যই হল পরস্পরের মধ্যে সচেতনতা-শেয়ারিং বৃদ্ধি করা। সঞ্জিবনীর অঙ্গীকার নিরন্তর বিশেষ শিশুদের পাশে থাকা ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করা। বিশেষ শিশুর সহায়ক সমাজ-পৃথিবী গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে কাজ করে যাবে সঞ্জিবনী। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের বিশেষ চাহিদা পূরণে সহায়তা করাই সঞ্জিবনী ফাউন্ডেশনের প্রধান লক্ষ্য। এই সংগঠন বিশেষ চাহিদার শিশুদের বিশেষ ধরণের শিক্ষা, শিক্ষা গ্রহণের জন্য যথাযথ প্রতিষ্ঠানের সন্ধান, শিক্ষা ও সেবা উপকরণ, সাপ্লিমেন্টারি সংগ্রহেও সবসময় পাশে থাকবে সঞ্জিবনী।
এএন/০৬