সিলেট মিরর ডেস্ক
আগস্ট ০৩, ২০২৩
০৪:৩০ পূর্বাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ০৩, ২০২৩
০৪:৩০ পূর্বাহ্ন
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব ও কম্পিউটার অপারেটর কর্তৃক শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন একই ইউনিয়নের কিসমৎ মাইজভাগ দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মো. কামরুজ্জামান মাসুদ। পাশাপাশি এই ঘটনার পর দায়েরকৃত মামলার আসামিরা সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবর তার নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে জানান মাসুদ। মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
কামরুজ্জামান মাসুদ জনান, তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। হেতিমগঞ্জের জামতলা দেওয়ান রোডে তার তামান্না স্টেশনারি নামে একটি দোকান আছে। তার এই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন করতে গত ১৬ জুলাই ফুলবাড়ি ইউনিয়ন কার্যালয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
মাসুদ বলেন, ইউনিয়ন কম্পিউটার অপারেটর সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে লাইসেন্স নবায়নের ফি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান সরকারি ফি ৪০০ টাকা। তখন সচিব নজরুল ইসলাম জানান ৬৫০ টাকা লাগবে। অতিরিক্ত টাকা কেন দিতে হবে জানতে চাইলে তিনি সঠিক কোন জবাব দিতে না পেরে উত্তেজিত হয়ে অশোভন আচরণ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে মোবাইলে কল দিয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ খাঁনকে অফিসে আসতে বলেন। চেয়ারম্যান একটু পর অফিসে আসেন এবং নজরুল ও সাইফুলের সাথে কথা বলে আমাকেও উত্তেজিত ভাষায় ৬৫০ টাকা দেয়ার কথা বলেন। আমি কারণ জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আব্দুল হানিফ খাঁন উত্তেজিত হয়ে আমাকে চড় থাপ্পড় ও কিল ঘুষি মারতে থাকেন। আমাকে মারধরের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তখন আমার আত্মীয়-স্বজন ইউনিয়ন অফিসে ছুটে এসে চেয়ারম্যানের বন্দি দশা থেকে আমাকে মুক্ত করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মাসুদ বলেন, পরদিন কিছুটা সুস্থ হলে আমাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয় এবং আমি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলি আদালতে মামলা দায়ের করি (নং ২৭৩/২০২৩)। এদিকে আমাকে নির্যাতনে ভিডিও ভাইরাল হলে গণমাধ্যমেও এ ঘটনা উঠে আসে এবং হানিফ চেয়ারম্যান, নজরুল এবং সাইফুলের কুকর্মের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ ফুঁসে উঠেন। গত ২৪ জুলাই হেতিমগঞ্জে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করা হয়েছে।
মাসুদ জানান, এ ঘটনায় জনগণ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। চতুর এ চেয়ারম্যান ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেন। তার সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসাবে সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে স্মারকলিপি প্রদান করছেন বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সমিতি গোলাপগঞ্জ উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। মূলতঃ আমার মামলা দায়ের করার পর তারা আইনের হাত থেকে বাঁচতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়েছেন। তারা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছেন, আমি নাকি নজরুলকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছি। এটা সম্পূর্ন ভুয়া ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ। আমি যদি তেমন কিছু করতাম তাহলেতো তারা আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারতেন বা পুলিশে কাছে সোপর্দ করতে পারতেন। তা না করে তারা চেয়ারম্যানকে ডেকে এনে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করেন।
মাসুদ আরও বলেন, শুধু এ অভিযোগই নয়, বিভিন্ন ধরনের লাইসেন্স বা সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি নির্ধারিত ফি'র বাইরে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন চেয়ারম্যান। অতীতের সন্ত্রাসী পরিচয়ের কারণে এলাকাবাসী তার ভয়ে সবসময় তটস্থ থাকেন। আমার দায়েরকৃত মামলায় তিনি অতিস¤প্রতি উচ্চ আদালত থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিন নিয়ে এসেছেন। এমন খবর ছড়িয়ে পড়ায় আমি এবং আমার আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাক্সক্ষীরা এখন আতঙ্কিত। চেয়ারম্যান হানিফ ও তার চক্রের কবল থেকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রীসহ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি ।
এএন/০২