খোলাসা বয়ান ৪৯ বছর পরও সমান প্রাসঙ্গিক

নিজস্ব প্রতিবেদক


জুলাই ২৩, ২০২৩
০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২৩, ২০২৩
০৫:১৩ পূর্বাহ্ন



খোলাসা বয়ান ৪৯ বছর পরও সমান প্রাসঙ্গিক
অন্তরঙ্গপাঠ অনুষ্ঠানে কথাসাহিত্যিক পারভেজ হোসেন


বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক পারভেজ হোসেন বলেছেন, ‘খোলাসা বয়ান তবারক হোসেইনের যৌবনকালের লেখা। তিনি ১৯৭৪ সালে লিখেছিলেন। যা ৪৯ বছর পরও সমান প্রাসঙ্গিক। আগে সমাজে যে হাহাকার ছিল, এখনো তা বিদ্যমান আছে। তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে নানান সংকট-অসংগতি তুলে ধরেছেন তাঁর লেখার মাধ্যমে।’

শনিবার (২২ জুলাই) বিকেলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও লেখক তবারক হোসেইনের ‘খোলাসা বয়ান’গ্রন্থের অন্তরঙ্গ পাঠ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে কবি ও লোক গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠান হয়।

শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন, উৎস প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী, নাগরী ভাষা ও সাহিত্য গবেষক মোস্তফা সেলিম।

পারভেজ হোসেন বলেন, ‘তবারক হোসেইন একজন সাংবাদিক ছিলেন। সাংবাদিকরা হাঁটলেও ছিদ্র দেখতে পান। ফলে সমাজের নানান অসংগতি, মানুষের অধিকার নিয়ে তারা লেখেন। ফলে তাদের মধ্যে নানান অভিজ্ঞতা থাকে। খোলাসা বয়ান তারই বহিঃপ্রকাশ।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবারক হোসেইন সম্পর্কে আমার মূল্যায়ন এই-তিনি সৃষ্টিশীল কাজ যা কিছু করেছেন, তা যদি না-ও করতেন তবু তার অবদান ভোলার মতো নয়। রাষ্ট্র গঠনের কাজে তিনি যা করেছেন, তাকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে পারি। বাঙালির মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর পিছনে যাদের অবদান, তাদের একজন তবারক হোসেইন।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, লেখক অধ্যাপক সুনির্মলকুমার দেব মীন, কবি ও গবেষক এ কে শেরাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন। 

আরও বক্তব্য দেন, জাসদ সিলেট জেলা শাখার সভাপতি লোকমান আহমদ, লোকগবেষক অধ্যাপক মিহির কান্তি চৌধুরী, দৈনিক সিলেট মিরর-এর সম্পাদক আহমেদ নুর, দৈনিক উত্তরপূর্বের নির্বাহীসম্পাদক তাপস দাস পুরকায়স্থ, যুগভেরীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক অপূর্ব শর্মা প্রমুখ।

সুনির্মল কুমার দেব মীন বলেন, ‘যে মানুষ আজীবন প্রতিবাদী ছিলেন, তিনি সঠিক কথাটিই লিখবেন-আমরা এটা বিশ্বাস করতে পারি। আশা করছি, তবারক ভাই স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থও রচনা করবেন। এতে সমাজ-সংস্কৃতি সমৃদ্ধ হবে।’

এ কে শেরাম বলেন, ‘তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পুরোধা ছিলেন। সাংবাদিক অঙ্গনেও তাঁর বিচরণ ছিল। তার খোলাসা বয়ান বইটি পড়লে আমরা অনেক সমৃদ্ধ হব।’

লোকমান আহমদ বলেন, ‘খোলাসা বয়ান পড়ার সময় আমি বারবার সেই দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছিলাম। ৪৯ বছর পরও এই গ্রন্থ প্রাসঙ্গিক থাকার কারণ, সমাজ ও রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি আজও পরিবর্তিত হয়নি। চালিকা শক্তি পরিবর্তিত না হলে আরও ৪৯ বছর প্রাসঙ্গিক থাকবে বইটি।’

মিহির কান্তি চৌধুরী বলেন, ‘এই বইয়ে সমাজ-রাষ্ট্রের নানা সংস্কারের দাবি আছে, আছে উইট এবং হিউমার। তবারক ভাইয়ের প্রভাব সর্বত্র ছিল। তিনি তাই ইতিবাচক ভাবে কাজে লাগিয়েছেন।’

আহমেদ নূর বলেন, ‘খোলাসা বয়ান শব্দটাই বলে দেয়, এখানে কী বলা আছে। ৪৯ বছর আগে যেসব বিষয় নিয়ে তিনি কলাম লিখেছেন তার বিষয়বস্তু ও প্রেক্ষাপট আজও প্রাসঙ্গিক। তাঁর লেখাগুলো যেন এখনকার সময়েরও প্রতিনিধিত্ব করছে। সেই সময়ে তিনি লেখনিতে যে তীর্যক মন্তব্য করেছেন সাহসী সাংবাদিকতার অনন্য উদাহরণ। 

এএফ/০১