মরিয়ম কেন আত্মহননের পথ বেছে নেন

বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি


জুন ২৭, ২০২৩
১২:৩২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ২৭, ২০২৩
০৭:০৬ অপরাহ্ন



মরিয়ম কেন আত্মহননের পথ বেছে নেন


সোমবার দুপুর থেকে বিয়ানীবাজার ও আশপাশের এলাকায় আলোচনার কেন্দ্র হয়ে উঠেছেন মরিয়ম বেগম মরি (৩৫)। মধ্য বয়সী এই নারী এক পুরুষ স্বাস্থ্যকর্মীকে কুপিয়ে আহত করে নিজে আত্মহননের পথ বেছে নেন। কি কারণে এতটা হিংস্র ও আত্মঘাতি হয়ে উঠলেন তিনি-প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। উত্তর নেই কারো কাছে। কেন একটি সরকারি জনসেবামূলক দপ্তরে তিনি আত্মহত্যা করলেন, তাও স্পষ্ট নয় কারো কাছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ার বাজার ইউনিয়নের খশির রামনগর গ্রামের মনির আলীর মেয়ে মরিয়ম। ৮ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তারা ৫ বোন ৩ ভাই। ভাইবোন সবাই বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন। কেবল মরিয়ম বিয়ে করেননি। সে প্রশ্নের উত্তর জানতে কথা হয় তার প্রতিবেশী ও কুড়ার বাজার ইউপি চেয়ারম্যান তুতিউর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, মরিয়মের চেহারা এবং শারীরিক গঠন তেমন ভালো নয়। তাছাড়া তার পরিবারের সদস্যরা বিয়ে শাদীর পর সবাই নিজ নিজ সংসার করছেন। এক্ষেত্রে মরিয়ম ছিলেন অবহেলিত।

স্থানীয়রা জানান, শারীরিক নানা অসুখে পরামর্শ নিতে তিনি নিয়মিত ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিকে যাতায়াত করতেন। এই সুযোগে স্বাস্থ্য কর্মী গোপাল দাসের সঙ্গে তার সখ্যতা হয়। কিন্তু গোপাল দাস সনাতন ধর্মীয়। ধর্ম এবং অন্যান্য কারণে গোপাল দাস তাকে বিয়ে করতে রাজি হননি। এতে দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। এর জের ধরে ওই প্রেমিকের কর্মস্থলের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে আচমকা কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই গলায় কাপড় পেচিয়ে আত্মহনন করেন মরিয়ম। সোমবার দুপুরে উপজেলার কুড়ার বাজার ইউনিয়নের খশিরবন্দ কমিউনিটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

আত্মহননকারী মরিয়ম বেগম মরি (৩৫)’র লাশ উদ্ধার করে পুলিশ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। পরকীয়া প্রেমিকার হামলায় আহত কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য কর্মী গোপাল দাসকেও হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনিও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, মোবাইল ফোনে কথা কাটাকাটির জের ধরে মরিয়ম সোমবার দুপুরে বটি দা নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের আশপাশে পূর্ব থেকে অপেক্ষা করতে থাকেন। স্বাস্থ্য কর্মী গোপাল দাস অফিসে প্রবেশ করার পরই আচমকা তার উপর হামলা চালান মরিয়ম। এ সময় প্রাণে বাঁচতে গোপাল দাস চিৎকার দিলে আশপাশে থাকা স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাঠান। তারা হামলাকারী মরিয়মকেও কমিউনিটি ক্লিনিকের ভিতর আটক করে রাখেন। তখন উপস্থিত জনতার রোষানল থেকে বাঁচতে হামলাকারী যুবতী ক্লিনিকের ভিতরের একটি কক্ষে দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশ জানায়।

বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, ‘পরকীয়া প্রেম সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটেছে। এরপরও আমরা আরো তদন্ত করছি। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে আমরা এমনটা জানতে পেরেছি। আহত গোপাল দাসকে জিজ্ঞাসাবাদে আরোও অনেক কিছু জানা যাবে।’


এএফ/০৯