সিলেট মিরর ডেস্ক
এপ্রিল ২৯, ২০২৩
০৮:৪২ অপরাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ২৯, ২০২৩
০৮:৪৩ অপরাহ্ন
সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় দেড় গুণ।
সিলেট বোর্ডের অধীনে চার জেলার সব কটিতেই ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা।
এর মধ্যে সিলেট জেলায় মোট পরীক্ষার্থী ৪১ হাজার ৪২৯ জন। তাদের ১৭ হাজার ২৮৭ জন ছাত্র; আর ছাত্রীর সংখ্যা ২৪ হাজার ১৪২ জন।
হবিগঞ্জে ২০ হাজার ৫৪২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছেলে ৮ হাজার ৩৮১ এবং মেয়ে ১২ হাজার ১৬১ জন।
মৌলভীবাজারে ২৪ হাজার ৭৪৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছেলে ৯ হাজার ৮৪১ জন, আর ছাত্রীর সংখ্যা ১৪ হাজার ৯০৪ জন।
সুনামগঞ্জের ২৩ হাজার ৬৮৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ১০ হাজার ৮৯ জন, ছাত্রী ১৩ হাজার ৫৯৭ জন।
রোববার থেকে শুরু হতে যাওয়া এ পরীক্ষায় অংশ নিতে বোর্ডের অধীনে চার জেলায় ফরম পূরণ করেছে ১ লাখ ১০ হাজার ৪০২ জন। তাদের মধ্যে ছেলের সংখ্যা ৪৫ হাজার ৫৯৮ জন। আর মেয়ের সংখ্যা তার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার বেশি; ৬৪ হাজার ৮০৪ জন।
অর্থাৎ প্রতি ১০০ জন ছাত্রের বিপরীতে ছাত্রী আছে ১৪৪ জন।
বাংলাদেশে জনসংখ্যার যে অনুপাত, তাতে ছেলে ও মেয়ের সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি। সেখানে সিলেটে এত পার্থক্যের কীভাবে হল, তার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা মেলেনি।
সিলেট বিভাগে এমনিতেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেশে অন্য বিভাগগুলোর তুলনায় কম। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস অব বাংলাদেশ ২০২১ প্রতিবেদন অনুযায়ী শিক্ষার হারে দেশে সবচেয়ে পিছিয়ে সিলেটে। তবে সেখানে মেয়েরা ধীরে ধীরে আগ্রহী হয়ে উঠছে, তার প্রমাণ মিলছে।
গত বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এ বোর্ডে ৪৯ হাজার ৮৭ জন ছেলের বিপরীতে পাস করে ৬৬ হাজার ৩০৪ জন মেয়ে। এই পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিলে দেখা যাচ্ছে, এবার মেয়েরা এগিয়ে গেছে আরও।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, “মেয়েরা পড়ালেখায় সচেতন। এ কারণে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। আবার সিলেট অঞ্চলের ছেলেদের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা আছে। এ কারণে তারা পড়ালেখায় অমনযোগী হয়ে পড়ে।”
এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বোর্ডে পরীক্ষার্থী কমেছে ৬ হাজারের মত। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যাই কমেছে বেশি।
গত বছর এসএসসি পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণ করেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৯০ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৯১ জন।
এবার বিভাগের ১৪৯টি কেন্দ্রে ৯৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেবে। বিভাগের চার জেলার মধ্যে সিলেটে ৫৯টি, হবিগঞ্জে ৩১টি, মৌলভীবাজারে ২৬টি এবং সুনামগঞ্জে ৩৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে।
এদিকে বোর্ডের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতি ১০ জনের সাত জনই মানবিকের।
তাদের মোট সংখ্যা ৮০ হাজার ১৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৩১ হাজার ৬৯৮, ছাত্রী ৪৮ হাজার ৩১৭ জন।
বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষায় অংশ নেবে ২৩ হাজার ২৪০ জন। তাদের মধ্যে ছেলে ১০ হাজার ২১২ জন; মেয়ে ১৩ হাজার ২৮ জন।
কেবল ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ছেলেরা কিছুটা এগিয়ে। এই বিভাগে ৭ হাজার ১৪৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছেলের সংখ্যা ৩ হাজার ৬৮৮ জন, মেয়ে আছে ৩ হাজার ৪৫৯ জন।
অপরদিকে সিলেট বোর্ডে এবছর পরীক্ষার্থী কমেছে ৬ হাজার।
এ বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডের সচিব মো. কবির আহমদ জানান, “করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে হতে পারেনি। পরিস্থিতি যখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়, তখন সিলেবাস কমিয়ে এসব পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
“সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ায় অধিকাংশ অনিয়মিত ও ফেল করা পরীক্ষার্থী পাস করে। ফলে আগের বছরের অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবার কম। তাই মোট সংখ্যাটি কিছুটা কমেছে।”
পরীক্ষা গ্রহণে প্রস্তুতি শেষ হয়েছে জানিয়ে বোর্ড সচিব বলেন, “পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় সরঞ্জাম কেন্দ্রে-কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে। ভিজিল্যান্স টিম ও স্পেশাল ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।”
এ বছর সবকটি বিষয়ে পরীক্ষা তিন ঘণ্টা করে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পরীক্ষার আধা ঘণ্টা আগেই পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছতে হবে। মোবাইল বা এ ধরনের কোনো ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না।
কেন্দ্র সচিব ফিচার ফোন সঙ্গে রাখতে পারবেন। অন্য কেউ মোবাইল ব্যবহার করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস জানান, তারাও পুরোপুরি প্রস্তুত, প্রতিটি কেন্দ্রেই পুলিশ থাকবে।
গণমাধ্যমে পাঠানো গণবিজ্ঞপ্তিতে মহানগর পুলিশ জানায়, পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে সমাবেশ, মিছিল, ঢাকঢোল বাজানো, লাউড স্পিকার ব্যবহার, অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, ইট পাথর, ইত্যাদি বহন নিষিদ্ধ থাকবে।
এসই/০৩