কানাইঘাট প্রতিনিধি
জানুয়ারি ০৩, ২০২৩
০৩:০২ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জানুয়ারি ০৩, ২০২৩
০৩:০৮ পূর্বাহ্ন
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার চতুল বাজারে মিশুক চালকের সঙ্গে অশালীন আচরণের জের ধরে হামলায় জয়নাল আবেদীন (৬০) নামে এক বৃদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে।
আজ সোমবার (২ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় চতুল বাজারের লালাখাল রোডের কামারহাটিতে।
নিহত জয়নাল আবেদীন বড়চতুল ইউনিয়নের হারাতৈল উত্তর (উপর বড়াই) গ্রামের মৃত মোবারক আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাজারের ব্যবসায়ী আবুল আহমদ (৩০) কে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত পুলিশ সেখান থেকে আটক করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, বাজারের ব্যবসায়ী ও নিহতের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নিহত জয়নাল আবেদীনের ছেলে মিশুকচালক সায়েম আহমদ (১৫) একই গ্রামের জিয়াউল হকের পুত্র আবুল আহমদকে মিশুকে নিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চতুলবাজার কামারহাটির হৃদয় আর্ট অ্যান্ড কসমেটিকসের দোকানে আসার সময় মিশুক চালক সায়েমের পাশে বসে আবুল আহমদ তার সাথে খারাপ উদ্দেশ্যে অশালীন আচরণ করে। দোকানের সামনে আসার পর আবুল আহমদ ১০ টাকা ভাড়ার স্থলে মিশুক চালক সায়েমকে ৫০০ টাকার নোট দেন। সায়েম ভাংতি নেই জানালে আবুল আহমদ তাকে গালাগালি করে।
পরে সায়েম আহমদ তার পিতা জয়নাল আবেদীনকে বিষয়টি খুলে বলে। জয়নাল আবেদীন আবুল হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাকে ছেলের সাথে খারাপ আচরণের বিষয়টি জানতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে আবুল হোসেন ও তার সঙ্গে থাকা দু’জন এবং জয়নাল আবেদীন ও তার ছেলে সায়েম দেশীয় লাটি-সোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে মাথায় গুরুতর জখম হয় জয়নাল আবেদীনের। সংঘর্ষে আবুল হোসেনও আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মারা যান আহত জয়নাল আবেদীন।
নিহত জয়নাল আবেদীনের পরিবারের সদস্যরা জানান, সায়েমকে ব্যবসায়ী আবুল আহমদ কু-প্রস্তাব দিয়ে যৌন নীপিড়ন করে। এর প্রতিবাদ করায় পরিকল্পিতভাবে আবুল আহমদ ও তার সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন মিলে তার প্রতিষ্ঠানের সামনে জয়নাল আবেদীনকে কাঠের রুইল ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি মারা যান।
ঘটনার খবর পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কানাইঘাট সার্কেলের এএসপি আব্দুল করিম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ওসি তাজুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত আবুল আহমদকে ওসমানী মেডিকেলে দায়িত্বরত পুলিশ আটক করেছে। ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি।’ নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে সেই আলোকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘লাশ ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে, মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’