তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ১৩, ২০২২
০৭:৫২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ১৩, ২০২২
০৭:৫২ পূর্বাহ্ন



তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্পষ্ট করে বলেছেন ইউক্রেনের জন্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ জড়াবে না তাঁর দেশ। তবে ন্যাটো অঞ্চলের প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। ইতিমধ্যে মিত্রদেশ ও ন্যাটোর সদস্যদেশগুলোর সুরক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন বাইডেন। 

গত শুক্রবার হাউস ডেমোক্রেটিক ককাসের সদস্যদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বাইডেন এসব কথা বলেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করে বলেছেন, ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে ন্যাটো জোট সক্রিয় হলে যে সংঘাত সৃষ্টি হবে, তা হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সে পথে হাঁটবে না। এর পরিবর্তে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাশিয়াকে পরাস্ত করতে চান তিনি। এর আগেও রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ না করার কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত মাসে তিনি জানিয়েছিলেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা একে অপরের দিকে গুলি ছুড়লে তা হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। 

বাইডেন বলেছেন, ন্যাটো দেশগুলোর সুরক্ষায় রাশিয়া সীমান্তে ১২ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া ও রোমানিয়া সীমান্তে এসব সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের ৩০টি দেশের জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো)। এ জোটের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক ও সামরিক উপায়ে এর সদস্যদের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

বাইডেন আরও বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ সূচনা করেছেন, তাতে তিনি বিজয়ী হতে পারবেন না।

ইউক্রেনের জনগণ রাশিয়ার সামরিক আক্রমণের মুখে অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে নিরাপত্তা সহায়তা দিচ্ছে, তা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, ‘ইউক্রেনকে সমর্থনের পাশাপাশি আমরা ইউরোপে মিত্রদের পাশে থাকব। ঐক্যবদ্ধ ন্যাটোর সঙ্গে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র।’

ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোতে সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে বাইডেন বলেন, ‘ন্যাটো দেশগুলোর সুরক্ষা বিবেচনায় রাশিয়া সীমান্তের লাটভিয়া, এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া, রোমানিয়ার মতো দেশগুলোতে ১২ হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে। যদি রাশিয়ার হামলার প্রতিক্রিয়া জানানো হতো, তবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতো। কিন্তু ন্যাটো অঞ্চলের সুরক্ষায় আমাদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’

এর আগে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিয়ে মস্কো ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। বাইডেন বলেন, ‘আমরা যদি আক্রমণাত্মক সরঞ্জাম, যুদ্ধবিমান, ট্যাংক পাঠাতাম তবে তাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যেত।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ইউক্রেনে রুশ হামলা নিয়ে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ন্যাটো ও এশিয়ার নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেছেন। এ কারণেই পুতিনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ দিতে পেরেছেন। এতে বৈশ্বিক মঞ্চে রাশিয়া আরও একঘরে হয়ে পড়বে। জি-৭ দেশগুলোর মধ্যে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।

বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ার অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। ইতিমধ্যে রাশিয়ান মুদ্রা রুবলের মান অর্ধেকে নেমে গেছে। তাদের শেয়ারবাজার বন্ধ হয়ে গেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশগুলো বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একজোট হচ্ছে। আমরা শক্তি দেখাতে পেরেছি। আমরা কখনোই এখান থেকে নড়ব না। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পুতিনের যুদ্ধ কখনোই বিজয়ী হবে না। পুতিন ভেবেছিলেন ন্যাটোকে দুর্বল করে ফেলবেন, কিন্তু এখানেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি ভেবেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে ভাগ করে ফেলবেন, কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।’

সূত্র: এএফপি

আরসি-১২