রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর
আগস্ট ১৮, ২০২১
০৮:৩১ অপরাহ্ন
আপডেট : আগস্ট ১৮, ২০২১
০৮:৩১ অপরাহ্ন
মহাসড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ হলেও সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে অবাধে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে। প্রতিটি বাজারে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্ট্যান্ডও। সিএনজিচালিত অটোরিকশা মহাসড়কে চলাচল করায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে সকল মহাসড়কে অটোরিকশাসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করে সরকার। তবে বাস্তবের চিত্র ভিন্ন। সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে মানা হচ্ছে না সরকারের এ নিয়ম।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের চিকনাগুল, হরিপুর, বাঘের সড়ক, দরবস্ত, সারীঘাট উত্তর ও দক্ষিণপাড়, ফেরীঘাট, জৈন্তাপুর, চাঙ্গীল, ৪ নম্বর বাংলাবাজার, আসামপাড়া থেকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সারিবদ্ধভাবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত টমটম রেখে তা স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব স্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক দিয়ে সিলেট শহর, কানাইঘাট, হরিপুর, বাঘের সড়ক, লাফনাউট, গোয়াইনঘাট, দরবস্ত, সারীঘাট, বারহাল, চতুল, জৈন্তাপুর, তামাবিল ও জাফলংয়ে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। এছাড়া গ্যাস ও ব্যাটারিচালিত টমটম ব্যবহার করে চিকনাগুল, হরিপুর, বাঘেরসড়ক, দরবস্ত, সারীঘাট উত্তর ও দক্ষিণ বাজার, ফেরীঘাট বাজার, জৈন্তাপুর বাজার, চাঙ্গীলবাজার, ৪ নম্বর বাংলা বাজার, আসামপাড়া বাজার এলাকায় যাত্রী পরিবহন করছে এ সকল পরিবহন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের হরিপুর, দরবস্ত ও জৈন্তাপুর বাজারে সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড রয়েছে। স্ট্যান্ডে যাত্রী পরিবহনের জন্য দেখা গেছে নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশার দীর্ঘ সারী। নম্বরবিহীন অটোরিকশার ১০-১২ জন চালক বলেন, নম্বর না থাকলে কিংবা নম্বরযুক্ত গাড়ির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও পুলিশ টোকেনের মাধ্যমে মাসিক ৪০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা দিয়ে যাত্রী পরিবহনের অনুমতি পেয়েছেন তারা। নম্বরবিহীন অটোরিকশাগুলোর মাধ্যমে সবাই একইভাবে যাত্রী পরিবহন করছে।
অটোরিকশার যাত্রী মো. হানিফ, নাজমুল, ইসলাম, বেলাল, হুসেন ও আহমদ বলেন, প্রায়ই সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সিলেট শহর, সিলেট শহর থেকে কানাইঘাট, হরিপুর, বাঘের সড়ক, লাফনাউট, গোয়াইনঘাট, দরবস্ত, সারীঘাট, বারহাল, চতুল, জৈন্তাপুর, তামাবিল ও জাফলংয়ে যাতায়াত করেন তারা। বাস ও লেগুনার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় সিট পাওয়া যায় না। এজন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাতায়াত করতে হয়। এতে কিছুটা হলেও সময় বাঁচে। তবে মহাসড়ক দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যাতায়াতে দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়েছে।
হরিপুর বাজারের সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এতদিন লকডাউন থাকায় আমাদের গাড়ি বেশি বের হয়নি। আমাদের নম্বরবিহীন ও নম্বরযুক্ত সকল গাড়ি পুলিশের ডিউটি করে।
টোকেনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, অনেক বিষয় জড়িত আছে। এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।
জৈন্তাপুরে দায়িত্বপালনকারী ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. আলী বলেন, বিধি মোতাবেক আমারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। আমি জৈন্তাপুরে দায়িত্বগ্রহনের পর থেকে মোট ৮০টি নম্বরবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমদ বলেন, টোকেনের মাধ্যমে নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। অবৈধ যে কোনো যানবাহন পেলে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
কানাইঘাট-জৈন্তাপুর সার্কেলের সিনিয়র এএসপি মো. আব্দুল করিম বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। কোনো ধরনের লেনদেন কিংবা টোকেনের ব্যাপারে থানার পুলিশ জড়িত নয়।
আরকে/আরআর-০২