ওসমানীনগরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত ১০

ওসমানীনগর প্রতিনিধি


আগস্ট ০৬, ২০২১
১২:৩৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ০৬, ২০২১
১২:৩৩ পূর্বাহ্ন



ওসমানীনগরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ আহত ১০

সিলেটের ওসমানীনগরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেটের এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা বালাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের পড়িয়ারখাই গ্রামের রায়না মিয়া গংদের সাথে একই এলাকার  আব্দুল আহাদ ও আবু তাহেরদের স্থানীয় বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্য চলে আসছে। রায়না মিয়ার অসুস্থ মা তুলাউন নেছার লান্স ইনফেকশন হলে গত ২৯ জুলাই তুলাউন নেছার কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রদান করা হয় এবং ওইদিন রাত ১১টার দিকে তিনি মারা যান। 

পরদিন (৩০ জুলাই) সকালে পড়িয়ারখাই বায়তুল নাজাত দক্ষিণ জামে মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে তুলাউন নেছার দাফন সম্পন্ন হয়। ওইদিন রাতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হলে কবরের মাটি সরে যায়। তুলাউন নেছার স্বজনরা কবর মেরামত করতে গেলে আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে অভিযুক্তরা বাধা দেয়। রাত ৯টায় আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে আব্দুল আহাদের বাড়িতে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রায়না মিয়ার বাড়ির লোকজনকে দাওয়াত করা হয়নি। পৃথক বাড়ীতে বসবাসকারী রায়না মিয়ার চাচা আনছার মিয়া গোষ্টির লোকদের পক্ষে উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত বৈঠকে রায়না মিয়ার বাড়ী ১৪ দিনের লকডাউন ঘোষণা করে আনছার মিয়াকে উক্ত লকডাউনের বিষয়ে রায়না মিয়া গংদের অবহিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি লকডাউন অমান্য করলে অবস্থা খুবই বেগতিক হবে বলে সতর্ক করা হয়। 

গত ২ আগস্ট বিকালে রায়না মিয়া ও তার ভাই তুলাউন নেছার কবর জিয়ারত করতে গেলে অসামীরা বাধা দেয় এবং এরপর থেকে রায়না মিয়ার কেউ বাড়ী হতে বের হলে বা কেউ বাড়ীতে এলে বড় ধরণের ঘটনা ঘটবে বলেও সতর্ক করা হয়। 

গত ৩ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রায়না মিয়ার ছেলে ইকবাল হোসেন (মামলার বাদী) নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে বাড়ী থেকে বেরিয়ে রাস্তায় পৌঁছা মাত্র তার গতিরোধ করে হামলা চালানো হয়। এতে ইকবাল হোসেন মারাত্মক আহত হন।তার চিৎকারে বাড়ি থেকে হীরা মিয়া, সুরমান আলী, রায়না মিয়া, হেলাল মিয়া এগিয়ে এলে তাদের উপরও হামলা চালানো হয়। মামলা অভিযুক্তরা দেশী অস্ত্র নিয়ে রায়না মিয়া গংদের উপর আক্রমণ করে। হট্টগোলে আশপাশের বিভিন্ন এলাকার লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে বালাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে প্রেরণ করেন। 

এ ঘটনায় আহতরা হচ্ছেন মামলার বাদী ইকবাল আহমদ (১৯), সুরমান আলী (৩০), হীরা মিয়া (৫৪), রায়না মিয়া (৫৬), হেলাল মিয়া (৩৫)। এদের মধ্যে সুরমান আলী ও হীরা মিয়াকে মারাত্মক আহত অবস্থায় সিলেটের এমএজি ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

এদিকে, সবাই যখন আহতদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত এই সুযোগে আসামীরা আনছার মিয়ার পড়িয়ারখাই বায়তুল নাজাত দক্ষিণ জামে মসজিদের মালিকানাধীন ভাড়া দোকানের সার্টার ভাঙ্গতে শুরু করে। খবর পেয়ে আনছার মিয়া বাড়ি থেকে দৌড়ে দোকানে গেলে আসামীরা তার উপর আক্রমন শুরু করে। এ সময় বাড়ির মাহিলারা আসামীরা তাদেও উপর আক্রমণ চালায়। এ সময় আহতরা হচ্ছেন-আনছার মিয়া (৫৫), দয়ারুন বেগম (৬০), সাকেরা খাতুন (৪৫), নাজমা বেগম (৪০), জেসমিন বেগম (৪৫)।এদের মধ্যে আনছার মিয়া সিলেটের এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ও বাকীরা বালাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

ওসমানীনগর থানার ওসি শ্যামল বণিক বলেন, এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে। মাসুক মিয়া নামের ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ইউডি/বিএ-১২