শামীম আহমদ, বালাগঞ্জ
জুন ২২, ২০২১
০৯:৪৫ অপরাহ্ন
আপডেট : জুন ২৩, ২০২১
১২:০৮ পূর্বাহ্ন
নামে পাকা সড়ক হলেও পাকার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে বেশ কয়েক বছর আগে। সড়কটির দৃশ্যমান অবস্থা দেখে এখন এটিকে মাটির সড়ক বললেও ভুল হবে না। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় এভাবেই অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার বালাগঞ্জ ইউনিয়নের আদিত্যপুর-রিফাতপুর-গহরমলী সড়কটি। সড়কের পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ার কারণে যান চলাচলে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। চলতি বর্ষায় বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কটি কাদা-জলে একাকার হয়ে গেছে। ভগ্নদশায় নিমজ্জিত এই সড়কে চলাচালকারী ১০টি গ্রামের মানুষ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালাগঞ্জ-তাজপুর সড়কের আদিত্যপুর মোড় থেকে শুরু হওয়া প্রায় ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘের সড়কটি সিলেট-সুলতানপুর-বালাগঞ্জ সড়কের সঙ্গে গিয়ে মিলিত হয়েছে। ২০০৪ সালের প্রথমদিকে আদিত্যপুর মোড় থেকে রিফাতপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের কাজ করা হয়েছিল। পাকাকরণের সঙ্গে সঙ্গেই ওই বছরে হওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় রাস্তাটি সম্পূর্ণ ভেঙে যায়। কিন্তু প্রথম দফায় রাস্তাটি পাকাকরণের পর এখন পর্যন্ত আর কোনো ধরনের সংস্কার কাজ করা হয়নি। যোগাযোগ অব্যাহত রাখার স্বার্থে ২০১৭-১৮ সালে স্থানীয়দের উদ্যোগে রাস্তার পিচ করা অংশে ইটের কংক্রিট বিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে রিফাতপুর জামে মসজিদ থেকে দক্ষিণ রিফাতপুর পর্যন্ত প্রায় অর্ধকিলোমিটার এবং সিলেট-সুলতানপুর-বালাগঞ্জ সড়ক থেকে চরসুবিয়া গ্রাম পর্যন্ত আরও প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের কাজ করা হয়েছিল। পাকাকরণেরে পর সংস্কার না হওয়ায় পিচ উঠে গিয়ে পুরো সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের চরম অবহেলা আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে সড়কের সংস্কার কাজ করা হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
এদিকে রাস্তার মধ্য অংশে চরসুবিয়া গ্রাম থেকে দক্ষিণ রিফাতপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা এখনও পাকাকরণ না হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এই এলাকার লোকজন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রিফাতপুর, দক্ষিণ রিফাতপুর, চড় হাড়িয়া, চরসূবিয়া, মানন, গহরমলি, রহমতপুর, কোষারগাঁওসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষের চলাচলের এই সড়কটি চরম অবহেলায় পড়ে রয়েছে। বালাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মুনিম ও ইউপি সদস্য মো. মোশাহীদ আলী ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ থেকে ২০২০ সালের শুরুর দিকে এই সড়কের দেড় কিলোমিটার অংশে মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন করেন। যদিও মাটি ভরাটের কাজে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পর্যাপ্ত বরাদ্দ মিলেনি। এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত অর্থায়নে মাটি ভরাটের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়।
এ বিষয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এস আর এম জি কিবরিয়া বলেন, বিগত দিনে এই সড়কের সংস্কার কাজের জন্য অনুমোদিত প্রকল্পে পর্যাপ্ত বরাদ্দ মিলেনি। তাই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ নিতে আগ্রহী হয়নি। সংস্কার কাজে পর্যাপ্ত চাহিদার কথা উল্লেখ করে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হলেও সিলেট বিভাগে এ ধরনের প্রকল্পগুলোর অনুমোদন বন্ধ থাকায় বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না।
এসএ/আরআর-০২