যেমন বাজেট চাই-১

নিজস্ব প্রতিবেদক


জুন ০২, ২০২১
০১:৪৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ০৩, ২০২১
০২:১৬ পূর্বাহ্ন



যেমন বাজেট চাই-১


  • সুদবিহীন ঋণের পাশাপাশি বাজেটে থোক বরাদ্দ
  • পর্যটনের সম্ভাবনা ও শিল্পায়নের জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও ট্যাক্স হলিডে চাই 
  • জীবনরক্ষাকারী ইকুইপমেন্টের শুল্কমুক্ত আমদানি সুযোগ


করোনা পরিস্থিতির এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। সিলেটে সেভাবে শিল্পায়ন হয়নি তাই এখানকার ব্যবসা ট্রেডিং নির্ভর হওয়ায় করোনার ধকল সামলানো ব্যবসায়ীদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে বাজেটে তাদের জন্য আলাদাভাবে চিন্তা করা উচিত বলে মনে করেন সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এটিএম শোয়েব। বাজেটকে সামনে রেখে ব্যবসায়ী এই নেতা কথা বলেছেন সিলেট মিরর-এর সঙ্গে। সেখানে তিনি বলেছেন,  সুদবিহীন ঋণের পাশাপাশি বাজেটে থোক বরাদ্দ দরকার। 

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এটিএম শোয়েব বলেন, সিলেটে যেহেতু সেভাবে শিল্পকারখানা গড়ে উঠেনি সেজন্য সেখানে এর বিকাশের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার। তিনি বলেন, ‘সিলেটে শিল্পকারখানা স্থাপনে উৎসাহ জোগাতে দশ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডে ঘোষণা করা যেতে পারে। একইভাবে এখানে যেহেতু পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে তাই পর্যটনে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডে ঘোষণা করা যেতে পারে। বাজেটকে সামনে রেখে এরকম একটি প্রস্তাব আমরা চেম্বার থেকে পাঠিয়েছি।’ 

সিলেটের ব্যবসা অন্য অঞ্চলের চেয়ে ভিন্ন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিল্পকারখানা থাকলে অর্থের সার্কুলেশন বাড়ে। বেশি সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হয়। এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য মূলত ট্রেডিং কেন্দ্রিক।’  তিনি আরো বলেন, ‘এ কারণে করোনা পরিস্থিতিতে বেশি ভুগছেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা। গত বছর করোনা শুরুর পর দীর্ঘমেয়াদী যে লকডাউন হয়েছিল তাতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হন ব্যবসায়ীরা। সেই ধকল গত এক বছরেও কাটিয়ে উঠতে পারেননি তারা। এ অবস্থায় নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় লকডাউনসহ যে ধাক্কা নতুন করে এসেছে সেটি তাদের অনেকটা অসহায় করে দিয়েছে।’

স্বাস্থ্যখাতকে ঢেলে সাজানো দরকার বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী নেতা। তিনি বলেন, ‘করোনা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে এ খাতের দিকে আমাদের গভীর মনযোগ দেওয়া দরকার। পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ডিসপজেবল সিরিঞ্জ থেকে শুরু করে জীবনরক্ষাকারী ইকুইপমেন্ট শুল্কমুক্ত আমদানির সুযোগ রাখার প্রস্তাব করেছি এবারের বাজেটে। 

স্বাস্থ্যের পাশাপাশি বাজেটে কৃষির বিষয়টিকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া দরকার এবার মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘করোনা আমাদের কতদিন পর্যন্ত ভোগাবে সেটা বলা মুশকিল। যে কারণে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিকে এবার সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত বাজেটে। কৃষকের পুঁজি রিটার্নের গ্যারান্টি না থাকলে সে ফসল ফলানোর উৎসাহ হারাবে।’

দেশের পর্যটনখাতের জন্য বাজেটে আলাদা বরাদ্দ চান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার এরই মধ্যে পর্যটনখাতকে এগিয়ে নিতে নানামুখি পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু আরো কিছু বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি। যেমন দেশে রেমিটেন্স সঠিক পথে আসার জন্য সরকার ২ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। অথচ যেসব পর্যটক দেশে আসছেন (কোম্পানী টু কোম্পানী পেমেন্টের বেলায়) তারা বিল পরিশোধ করলে সেখানে ১০ শতাংশ কর কেটে নেওয়া হচ্ছে। এটা রহিত করার প্রস্তাব করছি। কারণ এতেও কিন্তু দেশে রেমিটেন্স আসছে। এটা রহিত করা গেলে তা পর্যটনের বিকাশে বড় ভ‚মিকা রাখবে। 

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের ঘোষিত প্রণোদনার সুবিধা সিলেটের ব্যবসায়ীরা পাননি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকার প্রণোদনা দিলেও ব্যাংকগুলো কোনো ছাড় দিচ্ছে না। ঋণের জন্য ব্যাংকে গেলে তারা আগের মতই নিয়ম-কানুন, মরগেজ চায়। তাছাড়া ব্যাংক লোন যে নেবেন একজন ব্যবসায়ী তিনি ব্যবসা না করতে পারলে সেটি পরিশোধই বা করবেন কিভাবে।’ এসব বিষয়কে আমলে নিয়ে এসব ব্যবসায়ীদের টিকিয়ে রাখতে দুটি প্রস্তাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘একটা হতে পারে তাদের শর্ত ছাড়া ঋণ (সুদ মুক্ত ঋণ) এবং অন্যটি হচ্ছে সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য থোক বরাদ্দের ব্যবস্থা করা।’