ওসমানীনগরের ইউএনও দুর্নীতি করছেন : সাংসদ মোকাব্বির

ওসমানীনগর প্রতিনিধি


মে ২৯, ২০২১
১০:১১ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ২৯, ২০২১
১০:১১ অপরাহ্ন



ওসমানীনগরের ইউএনও দুর্নীতি করছেন : সাংসদ মোকাব্বির

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার ‘প্রভাবশালী সিন্ডিকেট’ গড়ে তোলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান। তিনি বলেন, এলাকার উন্নয়ন, সমস্যাসহ সব বিষয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা সরকারি বিধিবিধান উপেক্ষা করে সিন্ডিকেটের স্বার্থে কাজ করে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন। জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে আমার সঙ্গে কোনো প্রকার পরামর্শ না করে তিনি সিন্ডিকেটের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছেন।

শনিবার (২৯ মে) দুপুরে সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের সিলেট নগরীর নবাব রোডস্থ বাসায় লিখিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে সাংসদ মোকাব্বির বলেন, দেশের একাধিক স্থানের মতো আমার নির্বাচনী এলাকায়ও (ওসমানীনগর-বিশ্বনাথে) রয়েছে দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতায় একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে আমার নির্বাচনী এলাকা ওসমানীনগরের কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। সরকারি কোনো নিয়ম না মেনে তারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দেয় এবং আশপাশের বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। বিষয়টি আমার নজরে এলে আমি সঙ্গে সঙ্গে এ ব্যাপারে আশু প্রতিকার চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়কে একটি ডিও লেটার পাঠাই। কিন্তু মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কোনোরূপ ব্যবস্থা নিতে আগ্রহ না দেখালে আমি বিষয়টি মহান জাতীয় সংসদে উত্থাপন করি। যার ফলশ্রুতিতে সংশ্লিষ্ট মহলের টনক নড়ে এবং কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হয়। রক্ষা পায় অসংখ্য মানুষের সহায় সম্পদ।

তিনি বলেন, সরকার দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। যেখানে বিনামূল্যে জমি পাওয়া যাবে না, সেখানে তিনগুণ বেশি টাকা দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমার সংসদীয় এলাকায় (ওসমানীনগরে) এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের জন্য বিনামূল্যে জমি দেওয়ার আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তারের সক্রিয় সহযোগিতায় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট জমি অধিগ্রহণের নামে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সব ব্যবস্থা পাকা করে ফেলে বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি প্রমাণসহ আমার নজরে এলে আমি তা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ডিও লেটার পাঠাই এবং মহান জাতীয় সংসদে উত্থাপন করি।

সাংসদ বলেন, একইভাবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য স্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রেও ওসমানীনগরের নির্বাহী কর্মকর্তা সরকারি বিধিবিধান উপেক্ষা করে সিন্ডিকেটের স্বার্থে কাজ করেন। এসব সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে আমার সঙ্গে পরামর্শ করার নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তিনি তা অবজ্ঞা করে যাচ্ছেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়েও তিনি জনগণের স্বার্থকে উপেক্ষা করে নিজের সিন্ডিকেটের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। এ সকল অভিযোগের সপক্ষে আমাদের কাছে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ রয়েছে। এদের দৌরাত্ম্যে আমার নির্বাচনী এলাকার সাধারণ জনগণ সরকারি সেবা ও সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একজন দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তার কারণে রাষ্ট্রের মালিক জনগণের সাংবিধানিক অধিকার এমনভাবে ক্ষুন্ন হতে দেওয়া যায় না। দুর্নীতির খতিয়ান আমি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করব। নির্বাচনী এলাকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। 

তবে সাংসদ মোকাব্বির খানের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওসমানীনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাহমিনা আক্তার। সাংসদের বিভিন্ন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, আমি প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছি। মাননীয় এমপি মহোদয় যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। বিষয়টি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখবেন। প্রয়োজনে তারা তদন্ত কমিটি গঠন করে তা যাচাই করবেন।


ইউডি/আরআর-০৩