ঘন ঘন দুর্ঘটনায় 'মৃত্যুকূপ' সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক

মো. রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর


মে ২৮, ২০২১
১১:২৫ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ২৮, ২০২১
১১:৪৩ অপরাহ্ন



ঘন ঘন দুর্ঘটনায় 'মৃত্যুকূপ' সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক
দুর্ঘটনারোধে নেই প্রশাসনের উদ্যোগ

সিলেটের তিন উপজেলাবাসীর কাছে 'মৃত্যুকূপ' হিসেবে চিহ্নিত হয়ে উঠেছে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক। এ মহাসড়ক দিয়ে যাত্রী সাধারণ দুর্ঘটনার আতঙ্ক নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছেন। যখন-তখন ঘটছে দুর্ঘটনা, প্রাণহানিসহ পঙ্গুত্ব বরণ করছে যাত্রী সাধারণ ও পথচারীরা। দুর্ঘটনারোধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে না কোনো উদ্যোগ।

সম্প্রতি সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে সংঘটিত কয়েকটি দুর্ঘটনার কারণে উত্তর-পূর্ব সিলেটের বৃহত্তর জৈন্তিয়ার অঞ্চলের তিন উপজেলা জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট উপজেলার সাধারণ মানুষের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে মহাসড়কটি। প্রতিনিয়ত মহাসড়কে কোনো না কোনোভাবে ঘটে চলেছে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় অকালে ঝরছে তাজা প্রাণ, পুঙ্গুত্ব বরণ করছেন সাধারণ মানুষ। 

সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ঘুরে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, অদক্ষ লাইসেন্সবিহীন চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ী, নম্বরবিহীন সিএনজি চালিত অটোরিকশা, সিএনজিচালিত টমটম, ব্যাটারিচালিত টমটম, ভাঙাচোরা লেগুনা, হিউম্যান হলার, বেপরোয়া গতির ডিআই ট্রাক, পিকআপ ট্রাক ও ড্রাম ট্রাকগুলো দুর্ঘটনায় ঘটাচ্ছে বেশি। একই সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অপরিকল্পিতভাবে সড়ক দখল করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের টোকেন বাণিজ্যের কারণে চলছে নম্বরবিহীন গাড়ির চলাচল। জৈন্তাপুরের চিকনাগুল, হরিপুর, দরবস্ত, সারীঘাট উত্তর-দক্ষিণপাড়, জৈন্তাপুর বাজার, ৪ নম্বর বাংলাবাজার এলাকাগুলোতে দায়সারা ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের কার্যক্রম। মূলত এসব কারণেই সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে ক্রমাগত ঘটছে দুর্ঘটনা। 

জৈন্তাপুরে অবস্থিত ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, কয়েক বছর পূর্বে মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে সরকার কঠোর নির্দেশনা জারি করেছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও শ্রমিক নেতাদের দৌরাত্মের কারণে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে যানবাহন চলাচলের ফলে দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে।

তিনি দাবি করেন, অবিলম্বে মহাসড়কের পাশে থাকা নির্ধারিত বাজারগুলোতে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের কার্যক্রমের প্রতি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারী বাড়াতে হবে এবং সেই সঙ্গে উল্লেখিত যানবাহন ও চালকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া মহাসড়কে যত্রতত্র বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে।

ক্যাপ্টেন রশিদ উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ বিজন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, মহাসড়কে অদক্ষ লাইসেন্সবিহীন চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত টমটম চলাচল বন্ধ করা দরকার। বাজার ও সংযোগ সড়কগুলোর মধ্যে সর্তকতামূলক গতিরোধক সাইনবোর্ড স্থাপন আর বাজার এলাকা ও সংযোগ সড়ক এলাকায় জেব্রা চিহ্ন অংকন করা হলে দুর্ঘটনা কমে আসবে। 

জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগির আহমদ বলেন, সম্প্রতি সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার কারণে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনারোধে করণীয় শীর্ষক কয়েকটি বিষয় চিহ্নিত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। শিগগির আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।


আরকে/আরআর-০২