কবির আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ
মে ১৭, ২০২১
০৫:২৮ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মে ১৭, ২০২১
০৫:২৮ পূর্বাহ্ন
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। পর্যটকদের আগমনে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় জনসাধারণ।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেটসহ সারাদেশের পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৩১ মার্চ সরকারিভাবে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঈদের ছুটিতে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় করছেন পর্যটকরা।
ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন সকাল থেকে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে পর্যটকরা মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ভাড়া করা যানবাহন নিয়ে সেখানে এসে ভিড় করেছেন। পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরতে আসা পর্যটকদের কোনো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি। স্থানীয় প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে নীরব থাকতে দেখা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ মার্চ পর্যটনকেন্দ্র বন্ধের ঘোষণার পর থেকে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে পর্যটকদের আনাগোনা দেখা যায়নি। দু'একজন পর্যটক এলেও পর্যটনকেন্দ্রে চলেনি কোনো যাত্রীবাহী নৌকা। সে সময় পর্যটনকেন্দ্রে যেতে না পারায় তারা ভোলাগঞ্জ নৌকাঘাট থেকে ফিরে গেছেন। তবে গত শনিবার দুপুর থেকে গতকাল রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোলাগঞ্জে ভিড় জমান পর্যটকরা। পর্যটকদের মধ্যে অধিকাংশই সিলেট জেলার বাসিন্দা। তবে অন্যান্য জেলা থেকেও পর্যটকরা আসছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ১০ নম্বর ভোলাগঞ্জ বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যদের উপস্থিতিতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ভোলাগঞ্জ নৌকাঘাট থেকে চলেছে যাত্রীবাহী নৌকাও। পর্যটকদের পরিবহন করা যানবাহনগুলো পার্কিংয়ের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়েছে চালকদের।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা থেকে সাদা পাথরে ঘুরতে আসা কয়েকজন পর্যটক সিলেট মিররকে বলেন, শনিবার সকালে ফেসবুকে দেখেছি সাদা পাথর পর্যটন স্পট খুলে দেওয়া হয়েছে। তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সাদা পাথরে আসব। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সাদা পাথরে আসতে আমাদের কোনো সমস্যা হয়নি।
স্থানীয় যুবক আজিম উদ্দিন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে সাদা পাথরে হাজার হাজার পর্যটকের আমগনে কোম্পানীগঞ্জে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির আতঙ্কে রয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রশাসনকে অভিযান করতে দেখছি, কিন্তু সাদা পাথরের পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি অমান্যের ব্যাপারে প্রশাসনের ভূমিকা নীরব কেন এমন প্রশ্ন আমাদের মনে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়ভাবে পর্যটন কেন্দ্রগুলো শনিবার থেকে খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে আমরা শুনতে পেরেছি। তবে এ ব্যাপারে কোনো লিখিত কিংবা অফিসিয়াল নির্দেশনা পাইনি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আমরা পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রচার চালাচ্ছি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্য বলেন, জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশনা রয়েছে সিলেটের বাইরের পর্যটক আসতে পারবে না। তবে সিলেটের পর্যটকরা আসতে পারবেন পর্যটন স্পটে। করোনার সংক্রমণ রোধে আমরা পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করে আসছিলাম। ঈদের ছুটিতে হঠাৎ শনিবার থেকে স্থানীয় পর্যটকরা ভোলাগঞ্জে ভিড় জমাচ্ছেন। আমরা তাদেরকে নিরুৎসাহিত করে সচেতন থাকার জন্য স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়ে প্রচার চালাচ্ছি।
এমকে/আরআর-০৯