নিজস্ব প্রতিবেদক
মে ১২, ২০২১
০৭:৪০ পূর্বাহ্ন
আপডেট : মে ১২, ২০২১
০৭:৪০ পূর্বাহ্ন
সম্প্রতি ভারত থেকে সিলেটে আসা এক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি খাদিমপাড়া ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে আইসোলেশনে আছেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১১ মে) সকাল পর্যন্ত সিলেট জেলায় ভারত থেকে এসেছেন ২৫ জন। এদের বেশিরভাগই যশোর-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে সিলেটে আসেন। এদের মধ্যে ২৩ জন ভর্তি রয়েছেন খাদিমপাড়া ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে এবং বাকি দুইজন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। খাদিমপাড়ায় ভর্তি ২৩ জনের মধ্যে একজন করোনা পজিটিভ রয়েছেন।
বিষয়টি সিলেট মিররকে নিশ্চিত করেছেন সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল। তিনি বলেন, ‘জেলায় এ পর্যন্ত ভারত থেকে ফিরেছেন ২৫ জন। এদের মধ্যে দেশে আসার পর একজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিনি খাদিমপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’ ওই ব্যক্তি কবে দেশে ফিরেছেন এ তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে তিনি দিতে পারেননি।
ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সঙ্গে বর্ডার আছে এমন এলাকাগুলোতে টেস্ট বাড়াতে। তবে ভারতের সঙ্গে সিলেটের যেসব বর্ডার আছে সেগুলো বন্ধ রয়েছে। আরও কিছুদিন তা বন্ধ থাকবে। এছাড়া আগামীতে বেনাপোল থেকে যারা আসবেন তাদের যশোরেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ করে সিলেটে পাঠানো হবে।’
ওই ব্যক্তির দেহে ভারতীয় ধরন রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করতে বিষয়টি আইইডিসিআরকে জানানো হয়েছে কি না জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত তা আইইডিসিআরকে জানানো হয়নি।
খাদিমপাড়া ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. মাহমুদ হাসান গতকাল মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে সিলেট মিররকে বলেন, ‘হাসপাতালে ২৪ জন রোগী ভর্তি আছেন। এদের মধ্যে একজন পুরুষ করোনা পজিটিভ। তিনি গত ৫ মে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার বাড়ি মৌলভীবাজার জেলায়। তাকে হাসপাতালে আলাদাভাবে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে তার বুকে ব্যথা হচ্ছে, তবে তার শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ নেই।’
করোনাভাইরাসের মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাকাল অবস্থা ভারতে। দিনে দিনে বাড়ছে রোগী, বাড়ছে মৃত্যু। এর মধ্যেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে ভারতে পরিবর্তিত হয়ে তৈরি হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন (স্ট্রেইন)। ফলে করোনার নতুন ভারতীয় ভ্যারিয়্যান্ট রোধে গত ২৫ এপ্রিল ভারতের সঙ্গে স্থলপথে যাত্রী চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তবে যাত্রী যাতায়াত বন্ধ ঘোষণা করলেও আটকেপড়া যাত্রীরা দূতাবাসের অনুমতি নিয়ে নিজ নিজ দেশে ফিরতে পারবেন বলে জানানো হয়। তবে যারাই ফিরবেন তাদের করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও করোনার ভারতীয় ধরন শনাক্ত হয়েছে।
সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সিলেটে আসা ভারত ফেরত সবাইকে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। এদের মধ্যে কারো চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তাকে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। যারা সুস্থ থাকবেন তাদের খাদিমপাড়া হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
ওই ব্যক্তিকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখায় সিলেটবাসীর জন্য বিষয়টি উদ্বেগজনক নয় বলে মনে করছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়। তিনি সিলেট মিররকে বলেন, ‘নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে আসার পরও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে ওই ব্যক্তিতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেওয়ার কারণে আমাদের জন্য বিষয়টি উদ্বেগের নয়।’
এনএইচ/আরসি-০৩