বিয়ানীবাজারে কেনাকাটায় জনস্রোত, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

শিপার আহমেদ, বিয়ানীবাজার


মে ০৯, ২০২১
০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ০৯, ২০২১
০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন



বিয়ানীবাজারে কেনাকাটায় জনস্রোত, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

করোনা ভীতি উপেক্ষা করে ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সিলেটের বিয়ানীবাজারবাসী। পছন্দের জিনিস কিনতে এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ছুটছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। শপিংমল-ফুটপাতে ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। করোনা সংক্রমণরোধে সকাল ১০ থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখার নির্দেশনা থাকলেও বিয়ানীবাজারে গভীর রাত পর্যন্ত খোলা দোকানপাট। প্রতিদিন প্রচুর লোকসমাগমের কারণে সিলেট-বারইগ্রাম সড়কে প্রচুর যানজট দেখা গেছে।

গত শুক্রবার পৌরশহরের বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে কেনাকাটা করতে প্রচুর লোকের সমাগম হয়েছে। শপিংমলগুলোতে মারাত্মকভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। কেউ পরছেন না মাস্ক। সড়কে ছোট-বড় গণপরিবহন ছাড়াও ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলসহ সবধরনের যানবাহনের চাপ অনেক বেড়েছে। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত পৌরশহরের প্রধান সড়কসহ কলেজ রোড ও মোকাম রোডে যানবাহনের বিপুল চাপ দেখা গেছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবার গাড়ির চাপ বেশি থাকায় সামাল দিতে হিমশিম খেয়েছেন দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।

পৌরশহরের আল আমিন শপিং কমপ্লেক্স, হাজী আব্দুস সাত্তার শপিং কমপ্লেক্স, জামান প্লাজা ও আজির মার্কেটের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে শপিংমল খোলার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। মূলত ঈদকে সামনে রেখেই ক্রেতাদের সমাগম বেশি হচ্ছে। এর মধ্যে নারী ও শিশু ক্রেতাদের সংখ্যাই বেশি। আর লোকসমাগমের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে, শপিংমলগুলোর কিছু দোকানে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছিল। তবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেককেই মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। আবার অনেককেই মাস্ক থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে। এছাড়া কিছু মার্কেটের প্রবেশপথে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতেও দেখা গেছে।

জামান প্লাজার ব্যবসায়ী মুকিত মোহাম্মদ বলেন, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে এতদিন মার্কেট বন্ধ থাকায় আমাদের বেশ আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ উঠাতে না পারায় এখন ঋণ করে আবার দোকান চালু করতে হয়েছে। তবে এখন বিক্রি কিছুটা ভালো। ঈদের আগ পর্যন্ত যদি এভাবে চলে তবে ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠা যাবে।

শুধু পৌরশহরের প্রধান প্রধান মার্কেটই নয়, শহরের প্রধান সড়কের পাশ ঘেঁষে গড়ে ওঠা ফুটপাতের দোকানগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় বিক্রেতাদের। কথা হয় ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসা সুজন আহমদের সঙ্গে। তিনি জানান, গত কয়েকদিনে বেচাবিক্রি কিছুটা বেড়েছে। এতে করে বিগত কয়েকদিনের ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে তার মনে হচ্ছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর বলেন, বাস্তবতার নিরিখে পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও মানুষ দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকতে চায় না। মানুষের প্রয়োজনসহ সবকিছু বিবেচনা করেই সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। মানুষের প্রয়োজন এবং আবেগের বিষয় দেখার পাশাপাশি উপার্জনের ক্ষেত্রেও সরকারকে খেয়াল রাখতে হয়। তবে জরুরি প্রয়োজনে কেউ যদি বাইরে যান, তাহলে তারা যেন স্বাস্থ্যবিধিগুলো পরিপূর্ণভাবে মানেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মেয়াজ্জেম আলী খান জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কবে শেষ হবে তা বলা সম্ভব নয়। ফলে ঈদের উৎসব বা চলাফেরায় সবাইকে নিজের নিরাপত্তার জন্যই স্বাস্থ্য সতর্কতাগুলো মেনে চলতে হবে।

 

এসএ/আরআর-১২