সিলেটে সংক্রমণ নিম্নমুখী, কমেছে হাসপাতালে রোগীর চাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ০৭, ২০২১
০৬:১১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ০৭, ২০২১
০৬:১১ পূর্বাহ্ন



সিলেটে সংক্রমণ নিম্নমুখী, কমেছে হাসপাতালে রোগীর চাপ

এ বছরের মার্চে সারাদেশের মতো সিলেটে বাড়তে থাকে করোনার সংক্রমণ। সংক্রমণ বাড়ায় প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর চাপও বাড়তে থাকে। তবে এপ্রিলের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমায় হাসপাতালে রোগীদের চাপ কমতে শুরু করেছে। যদিও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আবারও সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত মার্চের শেষ দুই সপ্তাহে বিভাগে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। এ সময় হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়তে থাকে। সংক্রমণ কম থাকায় মার্চের আগে খুব অল্প সংখ্যক রোগী ছিলেন হাসপাতালে। গত ১ মার্চ সিলেট বিভাগের চার জেলার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মাত্র ২২ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী। তবে মাসের শেষ দুই সপ্তাহে সংক্রমণ বাড়ায় বাড়তে থাকে রোগীর চাপ। ৩০ মার্চ হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০২ জনে। এপ্রিলে এসে আরও বাড়তে থাকে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ফলে ১৬ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০২ জনে। 

এদিকে, সংক্রমণ এবং মৃত্যু ঠেকাতে গত ৫ এপ্রিল থেকে দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর থেকেই সিলেটে কমতে থাকে সংক্রমণ। সিলেটে স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে, এপ্রিলে সিলেট বিভাগে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ২০১ জনের। এদের মধ্যে প্রথম ১০ দিনে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১৮২ জনের। দ্বিতীয় দশদিনে ১ হাজার ১৫৯ জনের। আর শেষ দশদিনে শনাক্ত হয়েছে ৮৬০ জনের। সংক্রমণ কমায় হাসপাতালেও করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীর ভর্তি সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত বিভাগে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ২৪০ জন। 

১০০ শয্যা বিশিষ্ট সিলেট করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, বুধবার বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৬৮ জন। কিন্তু সপ্তাহ দুয়েক আগেও প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮০ থেকে ৮৫ জন। হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সুশান্ত কুমার মহাপাত্র সিলেট মিররকে বলেন, ‘মার্চের শেষ দিকে সিলেটে সংক্রমণ বাড়ায় হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। দুই সপ্তাহ আগেও হাসপাতালে প্রতিদিন ৮০ থেকে ৮৫ জন রোগী ভর্তি থাকতেন। এ সময় করোনার উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ড সবসময় পরিপূর্ণ থাকত। তবে গত কয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা কমেছে।’ 

সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি সিলেটের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও রোগীর সংখ্যা কমেছে। 

মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে করোনা ইউনিটের ফ্লোর ইনচার্জ ফজলে রাব্বি সিলেট মিররকে বলেন, ‘হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য সর্বমোট ৪৪টি শয্যা রয়েছে। গত কয়েকদিন হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ কমেছে। এপ্রিলে হাসপাতালে প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ জন রোগী ভর্তি থাকতেন। এখন তা ২০ এ নেমে এসেছে।’ 

বুধবার বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালে ২৪ জন রোগী ভর্তি আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। 

চলমান বিধিনিষেধের কারণে সংক্রমণের সংখ্যা কমছে বলে মনে করেন সিলেটের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় সিলেট মিররকে বলেন, ‘চলমান লকডাউনের কারণে সংক্রমণ কিছুটা কমেছে। এছাড়া লকডাউনের সময় প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। এসব কারণেই সংক্রমণ এখন নিম্নমুখী। কিন্তু এতে আত্মতুষ্টিতে থাকার কোনো সুযোগ নেই, কারণ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আবারও সংক্রমণ বেড়ে যাবে।’

এনএইচ/বিএ-০১