নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ২০, ২০২১
০৬:২৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ২০, ২০২১
০৬:২৮ পূর্বাহ্ন
চলমান লকডাউনে সিলেটে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা কমেছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রতিদিন ৮০০ থেকে ৯০০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি তা অর্ধেকে নেমে এসেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেটে বর্তমানে ওসমানী মেডিকেল কলেজ ল্যাব, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ল্যাব ও বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ল্যাবে সরকারিভাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। এছাড়া বেসরকারিভাবে সীমান্তিকের ল্যাবেও করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। আরটি পিসিআর ল্যাব ছাড়া সরকারিভাবে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে অ্যান্টিজেন পরীক্ষার মাধ্যমেও করোনা পরীক্ষা করা হয়।
গত শনিবার সিলেটে পরীক্ষা করা হয়েছে মাত্র ৩২৩টি নমুনা। দ্বিতীয় দফার লকডাউনের পর শনিবার পর্যন্ত চারদিনে শাবির ল্যাবেও গড়ে প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৮৩টি। আর এর আগের চারদিনে গড়ে প্রতিদিন পরীক্ষা হয়েছে ৩২৩টি করে।
সিলেটে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর সকাল থেকেই লাইন লাগত হাসপাতালটির সামনে। তবে লকডাউনের কারণে গত কয়েকদিন ধরে এ সংখ্যা কমেছে।
লকডাউনের আগে প্রতিদিন ১০০টির মতো নমুনা সংগ্রহ করা হত। আর বর্তমানে সংগ্রহ করা হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০টি। হাসপাতালটির ল্যাব ইনচার্জ বেনু ভুষণ দাস সিলেট মিররকে বলেন, ‘ররিবার আমরা ৬১টি নমুনা সংগ্রহ করেছি। লকডাউনের কারণে দূরের মানুষ আসতে পারেন না। তাই বর্তমানে নমুনা জমা দিতে আসা মানুষের সংখ্যা কমেছে।’
স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার সংখ্যা প্রধানত দুই কারণে কমছে। প্রথমত, বিদেশযাত্রীদের ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। দ্বিতীয়ত চলমান লকডাউনে মানুষ বাইরে কম বের হচ্ছেন। ফলে তারা নমুনা দিতে আসছেন না।
নমুনা পরীক্ষা কমায় শনাক্তের সংখ্যা কমলেও সিলেটে শনাক্তের হার উর্ধ্বমুখী। গতকাল রবিবার শাবির ল্যাবে ২৮২টি নমুনা পরীক্ষায় ৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ১৪ শতাংশ। এদিকে গতকাল শনিবার সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৯ হাজার ৪০৪ জনের। এতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬৯৮জন।
নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হার যেভাবে বাড়ছে তাতে করোনা টেস্টের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হলে আক্রান্তদের চিহ্নিত করে তাদের আলাদা করতে হবে। এটি না করা গেলে করোনা সংক্রমণ রোধ করা যাবে না।
এ অবস্থায় যাদের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা আছে তাদের দ্রুত নমুনা পরীক্ষা করোনা উচিত বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নূরে আলম শামীম। তিনি সিলেট মিররকে বলেন, ‘লকডাউনের কারণে শুধু সিলেট নয় সারাদেশেই নমুনা পরীক্ষা কমেছে। ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায় বিদেশযাত্রীরাও নমুনা দিচ্ছেন না। অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।’ তিনি বলেন, নমুনা পরীক্ষা করাতে গেলে পুলিশ কাউকে বাধা দেবে না। তাই যাদের শরীরে করোনার উপসর্গ আছে তাদের নমুনা পরীক্ষা করানো উচিত।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৯ হাজার ৪৩৪ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৩২৬ জন, সুনামগঞ্জে ২ হাজার ৬৬৯ জন, হবিগঞ্জে ২ হাজার ২৩১ জন ও মৌলভীবাজারে ২ হাজার ২০৮ জন রয়েছেন।
এনএইচ/আরসি-০১