গ্রামের বাজারগুলোতে উপেক্ষিত লকডাউন

শিপার আহমেদ, বিয়ানীবাজার


এপ্রিল ১৮, ২০২১
০৫:২০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ১৮, ২০২১
০৫:২০ পূর্বাহ্ন



গ্রামের বাজারগুলোতে উপেক্ষিত লকডাউন

সরকার ঘোষিত ৭ দিনের লকডাউনের চতুর্থ দিন শনিবার (১৭ এপ্রিল) সিলেটের বিয়ানীবাজারে দোকানপাট বন্ধ থাকলেও দোকানের সামনে বা আশেপাশে চুপচাপ বসে ছিলেন দোকানের মালিক বা কর্মচারী। পরিস্থিতি বুঝে বন্ধ শাটার খুলে বেচাকেনাও করেছেন তারা। তবে উপজেলার গ্রামীণ বাজারগুলোতে দেখা যায়নি লকডাউনের প্রভাব। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুরদমে দোকান খুলে ব্যবসা চলছে বাজারগুলোতে। গ্রামীণ বাজারগুলোতে প্রশাসনের নজরদারিও কম লক্ষ্য করা গেছে।

শনিবার সকাল থেকে উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গ্রামীণ বাজারগুলোতে সকাল থেকে দোকান খুলে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও গ্রামীণ বাজারগুলোর কাঁচাবাজারে মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল। সেখানে সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই। বাজারে আসা অধিকাংশ মানুষের মুখে ছিল না মাস্ক। মুখে মাস্ক নেই কেন জানতে চাইলে দু-একজন বলেন, মাস্ক পকেটে আছে। বেশি ভিড় দেখলেই মাস্ক পরবেন।

বিয়ানীবাজার-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন আব্দুল্লাহপুর বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কেউ সামাজিক দূরত্ব মানছে না। লোকজন গাদাগাদি করে কেনাকাটা করছেন। বেশিরভাগ দোকানি ও ক্রেতার মুখে মাস্ক নেই। বাজার যেন ক্রেতা-বিক্রেতার মিলনমেলা। দোকানের বারান্দায় মানুষ গা ঘেঁষে বসে গল্প-গুজব করছিলেন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই বাজারে বেচাকেনা চলে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আব্দুল্লাহপুর এলাকার যুবক আলী হোসেন বলেন, 'করোনার কারণে সবাইকে বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। সরকারের ঘোষিত ৭ দিনের লকডাউন চলছে। তারপরও গ্রামগঞ্জের মানুষ বিষয়টির কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তারা অবাধে হাট-বাজারে যাচ্ছেন। ফলে সবাই ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন।'

অপরদিকে বিয়ানীবাজার পৌরশহরে প্রশাসনিক তৎপরতায় ও কঠোর নজরদারিতে চলছে লকডাউন। পৌরশহর ঘুরে দেখা গেছে, মানুষের আনাগোনা ও যানবাহন চলাচল কম। জরুরি প্রয়োজনে যারাই বাইরে এসেছেন তাদেরকে মুখে মাস্ক পরিধান করতে দেখা গেছে। থানা পুলিশের তল্লাশিও অব্যাহত রয়েছে। চলমান লকডাউনে সরকারি নির্দেশনা না মেনে মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত যানবাহন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বাইরে বের হওয়ার কারণে অনেককে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে দেখা গেছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় পুলিশ তাদেরকে বাড়িতে ফেরত পাঠায়। এছাড়া নির্দেশনা না মানায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেয় পুলিশ।

বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, 'প্রতিদিন স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন করোনাভাইরাস বিষয়ক সচেতনতামূলক প্রচার অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া প্রতিটি গ্রামীণ বাজারে পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে। তারপরও মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে আসছেন। জনসমাগম বন্ধ করতে তৎপরতা আরও জোরদার করা হবে।'

বিয়ানীবাজার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশিক নূর জানান, লাকডাউনের প্রথম দিন থেকে কঠোর অবস্থানে আছে প্রশাসন। নিয়মিত টহলসহ জরিমানা অব্যাহত রয়েছে। জনগণের সচেতনতার প্রয়োজন না হলে লকডাউন কার্যকর কঠিন হবে। আমি বিয়ানীবাজারবাসীকে সরকারের বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।

 

এসএ/আরআর-০৩