নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ১২, ২০২১
০৬:৪০ পূর্বাহ্ন
আপডেট : এপ্রিল ১২, ২০২১
০৬:৪০ পূর্বাহ্ন
স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট-মার্কেট খোলার কথা থাকলেও তা পুরোপুরি মানছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা। ছবিটি নগরের জিন্দাবাজার এলাকার একটি দোকান থেকে তোলা।
দেশের ৪৬ জেলায় করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে সিলেট বিভাগের তিন জেলা। দেশের সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত জেলা মৌলভীবাজার। এই জেলায় পরীক্ষা বিবেচনায় সংক্রমণের হার প্রায় ৪৯ শতাংশ। গত শুক্রবার সিলেট বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ১৯৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যা গত ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার ছাড়া আরও ৪৫ জেলায় ঘটেছে উচ্চ সংক্রমণ। এর মধ্যে রয়েছে সিলেট ও হবিগঞ্জ। সিলেট ও হবিগঞ্জে শনাক্তের হার ৩৩ থেকে ৪০ শতাংশ। পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ১০ এর বেশি হলে তাকে উচ্চ সংক্রমিত এলাকা ধরা হয়। আর পাঁচের কম হলে তাকে নিম্ন সংক্রমণ ধরা হয়। একমাত্র জেলা পাবনাতেই শনাক্তের হার পাঁচের কম।
গত বছরের ৫ এপ্রিল সিলেটে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। প্রথমে সংক্রমণের ধীর গতি থাকলেও গত জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস করোনার সংক্রমণ ছিল তীব্র। গেল শীতে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকলেও শনাক্তের সংখ্যা ক্রমাগত কমছিল। তবে এ বছরের মার্চের শেষ ২ সপ্তাহ থেকে সিলেটে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে এবার সংক্রমণ বেশি তীব্র। গত বছরের অক্টোবরের পর বিভাগে মাসে শনাক্তের সংখ্যা নামে হাজারের নিচে। নভেম্বরে শনাক্ত হন ৯৬৭ জন, ডিসেম্বরে শনাক্ত হন ৮৪৭ জন। এ বছরের জানুয়ারিতে শনাক্ত হন ৫০৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে শনাক্ত হন ৩০৩ জন। তবে আবারও গত মার্চে সংক্রমণ ছাড়িয়েছে হাজার। মার্চে শনাক্ত হন ১ হাজার ১৮৬ জন। আর চলতি এপ্রিলে গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৯ জন। প্রতিদিন গড়ে শনাক্ত হচ্ছেন ১১৫ জন করে। এর আগে মার্চে গড়ে প্রতিদিন শনাক্ত হন ৩৮ জন করে, ফেব্রুয়ারিতে শনাক্ত হন ১০ জন করে।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোর্শেদ সিলেট মিররকে বলেন, ‘মৌলভীবাজারে গত মার্চে শনাক্তের হার ছিল ২২ শতাংশ। যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল, পর্যটন শহর ও সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি।’ তবে ৪৯ শতাংশ শনাক্তের হার নিয়ে আইইডিসিআর’র হিসাবে কিছুটা ত্রুটি রয়েছে বলে জানান তিনি।
সংক্রমণ কমাতে স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নূরে আলম শামীম। তিনি বলেন, ‘মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানায় পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে।’ তিন বলেন, আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছি। ওসমানী হাসপাতালে আরও ২০০ শয্যা প্রস্তুত করা হচ্ছে। মানুষ সচেতন না হলে শয্যা বাড়িয়েও কোনো লাভ হবে না বলে মনে করেন তিনি।
এনএইচ/আরসি-০২